ইয়াবা কারবারি জাসেদের বদলে জেল খাটল প্রবাসি জাসেদ!

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুইজনের নামই জাসেদুল হক। একজন প্রবাসি আরেকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। ইয়াবা ব্যবসায়ী জাসেদের মামলায় জেলের ঘানি টানতে হল প্রবাসি জাসেদকে। তাও একদিন দু’দিন নয় গুনে গুনে ১৩০ দিন। নগরীর পাহাড়তলী থানার মাদক মামলায় প্রকৃত আসামি জাসেদকে আদালত ৫ বছরের কারাদন্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। বর্তমানে কারাগারে থাকা জাসেদ (মামলার আসামি নয়) কক্সবাজার জেলার রামু থানার রাজাকুল সিকদার পাড়ার ওবায়দুল হকের ছেলে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজারকুল বাজার সিকদার পাড়া স্টেশনের ইত্যাদি স্টোর থেকে রামু থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। নামের মিল থাকার কারণে জাসেদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। জাসেদুল হক প্রকৃত আসামির বদলে কক্সবাজার কারাগারে রয়েছেন ১৩০ দিন। নামের মিল থাকার কারণে প্রকৃত আসামির বদলে জেল খাটার বিষয়টি গত ২৮ জুন কক্সবাজার কারাগারের জেল সুপার মো. নেছার আলমকে জাসেদুল হক জানান। গত ৩০ জুন কক্সবাজার কারাগারের জেল সুপার মো. নেছার আলম আদালতের নজরে আনেন। নিরপরাধ জাসেদের বিনা কারণে জেল খাটার প্রতিকার কি হতে পারে? প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের। এক্ষেত্রে পুলিশের আরও সতর্কতা দরকার ছিল বলেও মত তাদের।
গতকাল রোববার সকালে অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার পিডবিøউ মূলে জাসেদুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের পেশকার ওমর ফুয়াদ বিষয়টি জানিয়েছেন।
আদালতের তথ্যমতে, নগরীর পাহাড়তলী থানার মামলা নম্বর ০৪(০৩)১১ ও জি আর-১৮২/১১। মামলার দায়রা নম্বর ১৭৩৭/১১। পাহাড়তলী থানার পশ্চিম নাসিরাবাদ হালিশহর রোডের সামনে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ বর্তমানে কারাগারের বাইরে থাকা জাসেদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত মাদকের মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ড, ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন জাসেদুল হককে। সাজার পরোয়ানামূলে গত ২২ ফেব্রæয়ারি কক্সবাজার কারাগারে যান বর্তমানে কারাগারে থাকা জাসেদ। গত ২৮ জুন কক্সাবাজারের কারাগারের জেল সুপার মো. নেছার আলম তাকে কোনো মামলার আসামি নন বলে জানান। প্রকৃত আসামি জাসেদুল হকের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছেন কৌশলে। ঘটনার সময় বর্তমানে কারাগারে থাকা জাসেদুল হক মালেশিয়াতে ছিলেন।
কক্সবাজার কারাগারের তথ্যমতে, কারাগারের সংরক্ষিত হাজতি রেজিস্টার পর্যালোচনা করে দেখা যায় সূত্রস্থ মামলা সংক্রান্ত হাজতি নম্বর ২১২৪/এ। গত ২২ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার রামুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন পরোয়ানামূলে কারাগারে আসেন। তিনি কারাগারে প্রায় ৪ মাস ১০ দিন রয়েছেন। প্রকৃত আসামি জাসেদ ২০১১ সালের ২ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। তিনি ২ মাস ১ একদিন কারাভোগের পর চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে ২০১১ সালের ৩ মে জামিন নেন। ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে পলাতক ছিলেন।
এই বিষয়ে প্রতারণার শিকার হওয়া জাসেদুল হকের ভাই সাজেদুল হক জানান, আমার ভাই জাসেদুল হক দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রামু থানা পুলিশ জাসেদুল হককে দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে। তখন বার বার বলেছি জাসেদুল হকের কোনো মামলা নেই। পরে জানতে পারি চট্টগ্রামের আদালতে ৫ বছরের কারাদন্ডাদেশ আছে জাসেদুল হক নামের একজনের।