ইসিকে এবার ইভিএমের স্বচ্ছতা প্রমাণ দিতে হবে

37

চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আবু সুফিয়ানের ধানের শীষের পক্ষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ব্যাপক গণসংযোগ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের বড় কবরস্থান, ইলিয়াস ব্রাদার্সের বাড়ি, কেবি আমান আলী রোড, মজিদিয়া মাদ্রাসা ও রাহাত্তালপুল এলাকার পাড়া-মহল্লার ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। এতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ, দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনসাধারণ আমীর খসরুর সাথে ধানের শীষের গণসংযোগে অংশ নেন। তিনি এসময় এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জনগণ আজকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবার জন্য। তাদের মৌলিক অধিকার, রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য। এখানে জোয়ার নেমেছে ধানের শীষের পক্ষে আবু সুফিয়ানের পক্ষে। মানুষ অপেক্ষা করছে উন্মুক্ত পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে ধানের শীষ প্রতীককে জয়ী করে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ব্যালট পেপার চুরি করে দিনের ভোট রাতে নিয়েছিল। এ উপনির্বাচনেও ইভিএমের মাধ্যমে ভোট চুরির প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ইভিএমের উপর বাংলাদেশের মানুষের কোন আস্থা নেই। এবার নির্বাচন কমিশনকে ইভিএমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ইভিএম বিষয়ে যারা জ্ঞান রাখেন তারা ইতোমধ্যেই এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইভিএমএ কোন পেপার ট্রেইল নাই। কারণ আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিশ^াস করে না। এবারও তারা ইভিএম মেশিনে ভোট চুরি করে জয়ী হতে চেষ্টা করবে। এ ব্যাপারে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সেজন্য নির্বাচনের আগে ইভিএমের স্বচ্ছতা প্রমাণ করতে হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে ইভিএম বাদ দেওয়ার জন্য বার বার বলা হয়েছে। বাংলাদেশে ইভিএমের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। দেশে ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভোট আমরা যুগে যুগে দেখেছি। এই সময়ে এসে কেন ইভিএমের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল এটা এখন বড় প্রশ্ন।
এসময় বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে সুষ্ঠু ভোট হবে কি না তা নিয়ে। বিগত নির্বাচনে মানুষকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। দিনের ভোট রাতে নিয়ে মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল আওয়ামী লীগ। এবার মানুষ সে ধরনের ভোট চায় না। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য জনগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। যেখানেই গণসংযোগে যাচ্ছি সেখানেই মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ধানের শীষের জোয়ার দেখতে পাচ্ছি। তিনি ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহবান জানিয়ে বলেন, ভোট কেন্দ্রে যাবেন, সকাল থেকে আপনারা কেন্দ্রে অবস্থান করবেন, কোন ভাবেই যেন ভোট চোরেরা ভোট চুরি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। বিগত নির্বাচন যেভাবে হয়েছে এবার সেভাবে ভোট চুরি করতে দেওয়া হবে না। আপনারা একতাবদ্ধ হয়ে যদি ভোট কেন্দ্র গিয়ে পাহারা দেন তাহলে কারো সাধ্য নেই আপনাদের ভোটাধিকার হরণ করতে পারবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের মতো নির্বাচন হলে ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষই আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসবে। জনতার বিস্ফোরণ কোন স্বৈরাচারী অতীতে রুখতে পারেনি এবারও পারবে না। সরকার যেন তেন ভাবে এ নির্বাচন করার জন্য পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ নির্বাচন আমাদের জন্য আন্দোলনেরই অংশ। নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছি। তাই নেতাকর্মীদের দৃঢ় মনোবল নিয়ে আবু সুফিয়ানের ধানের শীষকে জয়ী করে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রের মুক্তি আন্দোলন আরো বেগবান করতে হবে।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আপনারা পাহারা দিবেন। ভোট কেন্দ্রে যেন কোন ভোট ডাকাত যাতে আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জনগণ একতাবদ্ধ হলে তখন কোন অপশক্তি দাঁড়াতে পারবে না। আবু সুফিয়ান একজন যোগ্য ও মেধাবী নেতা। আপনাদের সেবা করার জন্য তাকে জয়ী করতে হবে।
গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সহসভাপতি এম এ আজিজ, মো. মিয়া ভোলা, হারুণ জামান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক ইসকান্দর মির্জা, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আনোয়ার হোসেন লিপু, সহ-সম্পাদক জিএম আইয়ুব খান, মো. বখতেয়ার, মো. ইদ্রিস আলী, আবদুল আজিজ, জাকির হোসেন, বাকলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আফতাবুর রহমান শাহীন, পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি দোস্ত মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক হাসান লিটন, বিএনপি নেতা মো. আলমগীর, ইলিয়াস শেকু, আবুল বাশার, নিজাম, মহিলাদল নেত্রী শাহেদা বেগম, আফরোজা বেগম জলি, যুবদল নেতা ম. হামিদ, মোশাররফ হোসেন, গুলজার হোসেন, আরিফুল ইসলাম, সাঈদুল ইসলাম, মনছুর আলম, মো. এসকান্দর প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি