ইরানের বিক্ষোভে নিহত দুই শতাধিক : অ্যামনেস্টি

16

ইরানে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে নভেম্বরের গোড়ার দিকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। ২ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রাণহানির এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। চলমান বিক্ষোভে হতাহতের কোনও সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানায়নি তেহরান। তবে এর আগে অ্যামনেস্টি নিহতের যে সংখ্যা প্রকাশ করেছিল তা প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা।১৫ নভেম্বর ইরানি কর্তৃপক্ষ সরকারি রেশনে দেওয়া পেট্রোলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। লিটার প্রতি রেশনের পেট্রোলের দাম ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার রিয়াল করার কথা জানায় কর্তৃপক্ষ।
ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য মাসিক বরাদ্দ হিসেবে তেলের পরিমাণ ৬০ লিটার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এর বাইরে বাড়তি পেট্রোলের প্রয়োজন পড়লে লিটার প্রতি দাম পড়বে ৩০ হাজার রিয়াল। সরকারের ওই ঘোষণার পরই দেশজুড়ে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে। সোমবার অ্যামনেস্টির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে বিক্ষোভে সরকারি বাহিনীর অভিযানে কমপক্ষে ২০৮ জন প্রাণ হারিয়েছে। তাদের দাবি, ‘উদ্বেগজনক’ মৃত্যুর এই সংখ্যা ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনের ভিত্তিতে’ পাওয়া গেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত এর থেকে বেশি হবে।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া তীব্র আন্দোলনে ‘ভাড়াটে বিক্ষোভকারীরা’ অংশ নিয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। এ বিক্ষোভে প্রায় দুই লাখ ইরানি অংশ নেয়। শত শত ব্যাংক ও সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একজন আইনপ্রণেতা বলেছেন, চলতি সপ্তাহে অন্তত ৭ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে দেশজুড়ে আটককৃতদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে দেশটি। সে সময় দেশটির অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রিভোলিউশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)-র ডেপুটি কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী ফাদাভি এমন অঙ্গীকার করেন। বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠিন সাজা দিতে বিচার বিভাগের প্রতি আহŸান জানান তিনি। এর আগে ইরানি সামরিক বাহিনীর এই ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বলেন, সেসব বিক্ষোভকারীদের আটক করা হয়েছে যারা প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাড়াটে হিসেবে কাজ করার কথা স্বীকার করেছে। এ দেশের বিচার ব্যবস্থার মধ্যেই তাদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হবে।