‘ইমিউনিটি’ গড়ে তোলা দেশের একমাত্র পথ

32

বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছিল আটান্ন দিন আগে। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মোট শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দশ হাজারের ওপর। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ৬৮৮, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হওয়া রোগী।
বাংলাদেশের শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারির প্যাটার্ণ বা আক্রান্তের সংখ্যা নির্দেশকারী গ্রাফে এর ওঠানামার চিত্রটা দেখলে দেখা যাবে, বিশে এপ্রিল ৪৯২ জনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। তারপর দৈনিক আক্রান্তের এই হার ওঠানামা করে এখন ৬শ’য়ের কোঠায় পৌঁছেছে। মাঝে এই সংখ্যা ৫০০’র ঘরে ছিল, এখন তা ছয়শ’র ঘরে এসে গেছে। দিনে দিনে এই কার্ভটা (গ্রাফে আক্রান্তের রেখাচিত্র) উঠে যাচ্ছে। সমস্ত ইনফেকটেড লোকের ৫৫% ঢাকা সিটিতে। আর সব আক্রান্তের ৮৭% ঢাকা বিভাগে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে ঢাকায় সংক্রমণের বিষয়টা ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলেই তার মনে হচ্ছে। ইনফেকশনটা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে, সেটা যে সহসা কমবে তার কোনো লক্ষণ নেই। গত ২৮ এপ্রিল গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে এবং এর কি প্রভাব পড়বে তা আমরা পাওয়া শুরু করব ১২ মে থেকে। দোকানপাটও এতদিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেবার যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, তার প্রভাবে এই গ্রাফ আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে।
কবে এই আশংকা কাটবে?
সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশের মানুষও গভীর উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করছে কবে তারা এই শঙ্কা-মুক্ত হবে। অধ্যাপক ইসলাম মনে করেন- এই সংক্রমণ যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। হার্ড ইমিউনিটি- অর্থাৎ কিছু লোক মারা যাবে, এবং অনেক মানুষ ইমিউন (প্রাকৃতিকভাবে ভাইরাস প্রতিরোধী) হয়ে যাবে। মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠলে তবেই এই ভাইরাস থেকে ব্যাপক সংক্রমণের আশঙ্কা চলে যাবে বলে তিনি মনে করছেন। তবে এখানে সতর্ক হবার কারণও রয়েছে বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, ‘এই ভাইরাস যদি এর মধ্যে মিউটেট করে (আচরণ পরিবর্তন করে), তাহলে কিন্তু তা নাও হতে পারে। কারণ মিউটেট করলে সেটা নতুন ভাইরাসে পরিণত হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট যেটা আমরা এখন করছি, সেটাও আবার তখন কাজে লাগবে কি না তাও জানা নেই’।