ইমরান খান আউট

37

পূর্বদেশ ডেস্ক

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট পুনর্বহাল করেছেন সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বললেন সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার টানা চতুর্থ দিনের শুনানির পর প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে গঠিত পাক সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে জানিয়েছেন আগামী শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে ইমরানকে। এই রায়ের ফলে আস্থা ভোটে খেলতেই হবে ইমরানকে।
আদালত বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের সমাপ্তি ছাড়া অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিয়ো টিভি ও ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
রায়ে আদালত বলেন, রাষ্ট্রপতিকে আইনসভা ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার অধিকার প্রধানমন্ত্রীর নেই। আজ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত নেওয়া সব সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল এর আগে বলেছিলেন যে জাতীয় স্বার্থ এবং বাস্তবতা দেখেই আদালত এগিয়ে যাবেন।
বিচারপতি বান্দিয়ালের নেতৃত্বে এবং বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেলের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ মামলাটির শুনানি করেন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ডেপুটি স্পিকারের খারিজ করার বৈধতা নিয়ে গত বুধবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের রায় দেওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে শুনানির দ্বিতীয় দিন গত সোমবার প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল বলেছিলেন, সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করেও স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিতে পারেন না। আর আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে শুনানি শুরুর পরপরই তিনি বলেন, বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির খারিজ করে দেওয়া সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। এ সিদ্ধান্ত ‘ত্রæটিপূর্ণ’। তবে আদালত এ-ও বলেন, তারা কেবল জাতীয় স্বার্থ ও বাস্তবায়নযোগ্য দিকগুলো বিবেচনায় নেবেন।
এ রায়কে কেন্দ্র করে গতকাল আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতের বাইরে মোতায়েন করা হয় দাঙ্গা পুলিশ।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এই পুরো প্রক্রিয়াকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের দিনই স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) হয়ে নোটিশ দেন। সর্বোচ্চ আদালত তখন বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর তারা নজর রাখছেন।
পাকিস্তানে সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ফারুক হাবিব তা জানিয়েও দেন। বিরোধীরা ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সদস্য ডেপুটি স্পিকার সুরির সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান।