ইভিএমে সন্দেহ হলে এসে দেখে যান বললেন ইসি শাহাদাত

20

ইলেকট্রনিকপ ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণে কারচুপির আশঙ্কা বিএনপির পক্ষ থেকে করা হলেও তা অমূলক বলে উড়িয়ে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ইভিএমের ভোটে অস্বচ্ছতার কোনো কিছু নেই।
অন্যদিকে ইভিএমের ব্যবস্থাপনায় থাকা ইসির এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেছেন, ভোটের আগে ইভিএম প্রদর্শনীর আয়োজন থাকবে, কারও সন্দেহ হলে সেখানে এসে দেখে যেতে পারবেন। খবর বিডিনিউজের
আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুরো ভোটই গ্রহণ হবে ইভিএমে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএমের পক্ষ নিলেও তাতে বরাবরই আপত্তি জানিয়ে আসছে বিএনপি ও তাদের রাজনৈতিক মিত্ররা।
ঢাকা সিটি ভোটে ইভিএমে গ্রহণে আপত্তি জানিয়ে রোববার বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইভিএম একটি ‘অস্বচ্ছ’ ভোটগ্রহণ পদ্ধতি। এই মেশিনে সহজেই ‘টেম্পার’ করা যায়। তাই এ মেশিন ব্যবহার করে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্য ফলাফল পাওয়া অসম্ভব।
নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত রবিবার তার দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ইভিএমে ভোটের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকবে, স্বচ্ছতায় কোনো সমস্যা নেই। আমাদের সব প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে। যাতে প্রার্থীরা সন্তুষ্ট থাকতে পারে, সে ব্যাপারে আমাদের পদক্ষেপ থাকবে।
দুই সিটিতে ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় ইভিএম ছাড়াও ৫০ শতাংশ বেশি ইভিএম প্রস্তুত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ইভিএমে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শাহাদাত জানান, প্রতি কেন্দ্রে ইভিএমের টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্য দুজন করে সেনা সদস্য থাকবে। কারিগরি ব্যবস্থাপনায় সশস্ত্র বাহিনীর ৫ হাজার ২৮০ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
সন্দেহ পোষণকারীদের ডিসিসির ইভিএমের পরীক্ষামূলক ভোটে (মক ভোটিংয়ের সময়) সার্বিক ব্যবস্থা দেখার আহ্বান জানান এ নির্বাচন কমিশনার।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি উইং) মহাপরিচালক সাইদুল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, ভোটের আগে ২৫ এবং ২৬ জানুয়ারি প্রত্যেক কেন্দ্র ও পাশের এলাকায় কীভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হয় সে বিষয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। ২৮ জানুয়ারি ফাইনাল ‘মক ভোটিং’ হবে।
বিএনপির অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, দলের বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে পারব না। ব্যবস্থাপনার দিক থেকে বলতে পারি, ইভিএমে অনৈতিক কার্যক্রম করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
“তারপরেও কেউ যদি রিচেক করতে চায়, তাদের আমরা স্বাগত জানাই। আমরা ইভিএম প্রদর্শনীর আয়োজন করব। কারও সন্দেহ থাকলে, তারা এসে দেখতে পারেন।”
সাইদুল বলেন, কেউ (ইভিএমের) অপব্যবহার করার চেষ্টা করলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কমিশন বদ্ধ পরিকর।… আমরা যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি, তাতে আমরা কনফিডেন্ট, কোনো অনৈতিক কর্মকাÐ কার পক্ষে করা সম্ভব হবে না।
এনআইডি উইং মহাপরিচালক জানান, উত্তর ও দক্ষিণ সিটি মিলিয়ে প্রায় ২৬০০ কেন্দ্র, এর মধ্যে ১৪ হাজার ৬০০ বা তার বেশি ভোটকক্ষ থাকবে। বাস্তবতার নিরিখে এটি নির্ধারণ করা হবে। দুই সিটির নির্বাচনে প্রায় ৩৫ হাজারের মতো ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
“ভোটারদের প্রশিক্ষিত করতে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছি, লিফলেট, বুকলেট ও টিভি বিজ্ঞাপন তৈরি করেছি।… টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্য প্রতি কেন্দ্রে দুইজন করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েনও থাকবে।”
সাইদুল জানান, ভোটাররা ইভিএমে যাতে ভোট দেওয়ার সম্পূর্ণ ধারণা পেতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন স্থানে প্রচারপত্র বিলি করা হবে। তাতে লেখা থাকবে মাত্র দুই বোতামে চাপ দিয়ে কীভাবে ভোট দিতে হয়। প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।