ইতিহাস গড়ার মিশনে মহাবিপদে বাংলাদেশ

18

পূর্বদেশ ক্রীড়া ডেস্ক

ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৯ রানে এগিয়ে এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৪ রানে গুটিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে দুই ইনিংস মিলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ২৭৪ রানের। কিন্তু ম্যাচের চতুর্থ দিনে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই প্রোটিয়া স্পিনার কেশভ মহারাজ আর সাইমন হারমারের স্পিন বিষে নীল মুমিনুলের দল। ১১ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে বাংলাদেশ। আজ সোমবার ম্যাচের পঞ্চম ও শেষদিনে আরেক ইতিহাস গড়তে বাংলাদেশের প্রয়োজন এখনো ২৬৩ রান। হাতে আছে ৭ উইকেট। নাজমুল হোসেন শান্ত ৫ আর মুশফিক ০ রানে নিয়ে আবার ব্যাট করতে নামবেন। পাঁচদিনের ম্যাচে প্রথম ও তৃতীয় দিনের মতো আলোকস্বল্পতায় আজ চতুর্থ দিনের খেলাও শেষ হয়েছে নির্ধারিত সময়ের কয়েক ওভার আগে।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৬৭ রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। পরে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ২৯৮ রানে। ৬৯ রানে এগিয়ে থেকা স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ২০৪ রানে। ফলে ২৭৩ রানের লিড পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে টেস্ট জিতে ইতিহাস গড়তে সাড়ে ৩ সেশনে বাংলাদেশের প্রয়োজন পড়ে ২৭৪ রান।
এই লক্ষ্য টপকাতে নেমে স্বাগতিকদের স্পিন। সামলাতে টালমাটাল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন তিনি। হারমারের বলটি পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন সাদমান। মিডল স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বল স্পিন করে তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে ¯িøপে থাকা কিগান পিটারসেনের হাতে।
পঞ্চম ওভারে জোড়া আঘাত মহারাজের। শুরুতে ফেরালেন আগের ইনিংসে শতক হাঁকানো মাহমুদুল হাসান জয়কে। বাঁহাতি স্পিনারের বলের লাইনে যেতে পারেননি তরুণ এই ওপেনার। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। জয় ফেরেন ৪ রানে। চার বল পরেই বিদায় নেন মুমিনুল হক। মহারাজের ভেতরে ঢোকা বলে পিছিয়ে গিয়ে ফ্লিকের চেষ্টায় ব্যর্থ হন মুমিনুল। ব্যাটের কানা এড়িয়ে আঘাত হানে প্যাডে। এলিবিডবিøউর জোরাল আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ না নিয়েই ফিরে যান মুমিনুল। ৪ বলে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান করেন শূন্য।
এরপর আলোক স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়। তখন ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ১১ রান। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন এখনো ২৬৩ রান। হাতে আছে ৭ উইকেট। শান্ত ৫ আর মুশফিক ০ রানে নিয়ে আজ ব্যাট করতে নামবেন।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার একেকটি উইকেট তুলে নিতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে বাংলাদেশের বোলারদের! প্রথম আঘাত হেনেছিলেন টাইগার পেসার এবাদত হোসেন। এবাদতের বলে এলবিডবিøউর শিকার হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন ওপেনার সারিল এরউই। ব্যক্তিগত ৮ রানে বিদায় নেন তিনি। তৃতীয় দিন শেষে সারিলের নামের পাশে ছিল ৩ রান।
এরপর তাসকিন আহমেদও ডিন এলগারকে এলবিডবিøউর ফাঁদে ফেলেন। ১০২ বলে ৬৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। পিটারসেন মিরাজের বলে আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৩৬ রানে। তাসকিনও শিকার করেন এক উইকেট। বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কর রূপে আবির্ভুত হতে থাকা এলগারকে সাজঘরে ফেরান তিনি। ১০২ বলে ৬৪ রান করেন প্রোটিয়া দলপতি। মিরাজের বলে জয়কে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন পিটারসেন।
এবাদতের এক ডেলিভারিতে গালির দিকে ক্যাচ তুলে দেন বাভুমা। ইয়াসির আলি সেই ক্যাচ নিয়ে নেন দুর্দান্ত ভঙ্গিমায়। মুল্ডার কিছুক্ষণ টিকে থাকলেও কাইলে ভেরাইন্নে, কেশভ মহারাজদের উইকেট দ্রæতই তুলে নেন টাইগাররা। ৪২ বলে মুল্ডার ১১, ১৮ বলে ভেরাইন্নে ৬ ও মহারাজ ৫ রান করেন। এদের মধ্যে ভেরাইন্নে ও মুল্ডারকে মিরাজ এবং মহারাজকে তাসকিন আউট করেন। হারমার রানআউটের শিকার হন নুরুল হাসান সোহানের থ্রোয়ে। রানআউটের শিকার হন লিজাড উইলিয়ামসও। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন অলিভিয়ের। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন মিরাজ ও এবাদত। তাসকিন পান দুই উইকেট।