ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ফিলিপাইনে ক্ষমতায় ফের মার্কোস পরিবার

10

 

ফার্দিনান্দ ‘বংবং’ মার্কোস জুনিয়রের বয়স তখন ২৮ বছর। ওই সময়ে পরিবারের সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে একটি হেলিকপ্টারে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্টের বাসভবন ছাড়তে হয়েছিল। কারণ, তখন লাখ লাখ মানুষ তার স্বৈরশাসক বাবা ফার্দিনান্দ মার্কোস সিনিয়রের পদত্যাগের দাবিতে ঐতিহাসিক ‘জনশক্তি’ বিপ্লব ঘটিয়েছে। ৩৬ বছর পর সেই মার্কোস জুনিয়র এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিশাল জয় উদ্যাপন করছেন। ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং প্রায় এক হাজার কোটি ডলার লুটপাটে অভিযুক্ত একটি পরিবারের জন্য এটি নজিরবিহীন প্রত্যাবর্তন।
বেসরকারি ফলাফলে নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বীর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভোট পেতে যাচ্ছেন মার্কোস। এই বেসরকারি ফলাফলকে বৈধ হিসেবেই মেনে নেওয়া হচ্ছে। তার পিতার সামরিক শাসনের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া সবশেষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। মার্কোস পরিবারের এই প্রত্যাবর্তনে অনেকেই হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। ওই সময়ে ম্যানিলায় বিক্ষোভে যোগ দিয়ে পরে মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছিলেন ফ্লোরেন্সিও আবাদ। তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সালে আমরা বলেছিলাম আর কখনও নয়। তারা (মার্কোস) কীভাবে ফিরে আসতে পারে?’
খ্যাতি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কয়েক দশক ধরে প্রচার চালিয়েছে মার্কোস পরিবার। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পরবর্তী সরকারের ত্রুটি এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তের মেয়ের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার রাজনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক। এসবের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদে অভাবনীয় প্রত্যাবর্তন হচ্ছে মার্কোস পরিবারের।
বেসরকারি গণনায় আলাদাভাবে নির্বাচনে লড়া সারা দুয়ার্তে কারপিও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নজিরবিহীনভাবে এগিয়ে আছেন। নিউ ইয়র্কভিত্তিক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিশ্লেষক জসুয়া কুর্লান্টজিক বলেন, ‘১৯৮৬, এমনকি ১৯৯৫ সালেও আমি এটা বিশ্বাস করতাম না।’ কুর্লান্টজিক বলেন, ১৯৯০ দশকের শেষ দিক থেকে ফিলিপাইন অকার্যকর এবং দুর্নীতিপরায়ণ সরকার প্রত্যক্ষ করতে থাকে। এর জেরেই ক্ষমতায় আসেন রদ্রিগো দুয়ার্তে।
তবে কুর্লান্টজিক তাকে ‘আধা স্বৈরশাসক’ মনে করেন। তার মতে, ‘কঠোর হাতে শাসনের ধারণাটি আবারও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, এমনকি তরুণদের মধ্যেও।’