ইতিহাসের পাঠশালা আওয়ামী লীগ

20

খুরশীদ আলম

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধুু বিশ্বের বুুকে বাংলাদেশের স্বাধীন মানচিত্র বিনির্মাণ নয়, বাংলাদেশের রাজনীতি ও বাঙালির সাংস্কৃতিক বিনির্মাণের পাঠাশালা। বাঙ্গালির অধিকার আদায়ের জন্যই সংগ্রামী রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয়। প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকেই গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সোচ্চার রাজনৈতিক দলটির অসংখ্য নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সংগ্রামী ভূমিকায় ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে একেঁছে রক্তাক্ত পদচিহ্ন। মহান দেশপ্রেম ও মানুষের কল্যাণে সংগ্রামী দলটির আদর্শবান কর্মীরাই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বিশ্বে পরিচিত। ১৯৭১ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর এই সংগঠনটির নামাকরণ হয় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট-সরকার গঠন করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৬৯ আসনের মধ্যে ২৬৭টি আসনে জয়লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকদের স্বৈরতান্ত্রিক ও গণহত্যার কারণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের ১০ই এপ্রিল প্রবাসী মুজিবনগর সরকার গঠনে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে ও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাÐের দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩০টি আসন লাভ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে এবং ৫ জানুয়ারী ২০১৪ সালে ও ৭ জানুয়ারি ২০১৮ সালে দ্বিতীয় তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জম্ম সময় হতে ৭৩ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমাকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করে আলোচনা করা যায়-
আওয়ামীলীগের গঠনকাল থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর সময়কাল: ১৯৪৯ সালের ২৩ শে জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক নির্বাচিত হন। শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়,এসময় শেখ মুজিব কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। অন্যদিকে, পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনটির নাম রাখা হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। এর সভাপতি হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৫২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে পরের বছর সম্মেলনে তাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হলে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন শেখ মুজিব। ১৯৫৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দলের তৃতীয় সম্মেলনে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ রাখা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দলটি প্রাদেশিক স্বায়ত্ত¡শাসনের ওপর বিশেষ গুরুত্বসহ ৪২ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করে। শুরুর দিকে আওয়ামী লীগের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলার স্বীকৃতি, এক ব্যাক্তির এক ভোট, গণতন্ত্র, সংবিধান প্রণয়ন, সংসদীয় পদ্ধতির সরকার, আঞ্চলিক স্বায়ত্ত¡শাসন এবং তৎকালীন পাকিস্তানের দু’অঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ। ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি ৬ দফা আন্দোলনের সূচনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা হিসাবে আওয়ামী লীগ ও নেতৃত্বে শেখ মুজিবুর রহমানের উত্থান ঘটে এবং ১৯৬৯ নাগাদ দলটি পূর্ব পাকিস্তান তথা বাঙালি জাতির প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ফলে আইয়ুব খানের সামরিক জান্তার পতন ঘটলেও সামরিক শাসন অব্যাহত থাকে। ১৯৭০ এর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে গণহত্যা চালালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহকর্মীগণ স্বাধীনতার দীর্ঘ সংগ্রামে যে প্রজ্ঞা ও দূরদর্শীতার সাথে পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছেন তা বিশ্বের স্বাধীনতাকামী গণমানুষের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত। বঙ্গবন্ধু সহকর্মীদের আত্মগোপনে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর নির্দেশ দেন এবং নিজে আত্মগোপনে না গিয়ে রাত ১২ টার পর ওয়ারলেসে স্বাধীনতার ঘোষণা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। রাত ১:৩০ টায় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তিনি গ্রেফতার হন। বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতারে স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুদায়িত্ব তাঁর সহকর্মীদের উপর বর্তায়। এপ্রিলের প্রথমার্ধে তাজউদ্দীন আহমদ ভারতে পৌছে অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন ও ভারত সরকারের নিকট সাহার্য্য প্রার্থনা করেন। ১৭ই এপ্রিল কুষ্টিয়ার মেহেরপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়। এ সরকারের নেতৃত্বে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে অর্জিত স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু সংবিধানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ, লাল সবুজের পতাকা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও অসা¤প্রদায়িক চেতনা। জনগণের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরনার্থে শিল্পবাণিজ্যের রাষ্ট্রীয়করণ, কৃষিখাতে সমবায় পদ্ধতি। এতে নয়া উপনিবেশবাদীদের গাত্রদাহের কারণ দাঁড়াল বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ। শুরু হয় ষড়যন্ত্র, ১৯৭৪’র দুর্ভিক্ষ ছিল দেশীয় কুচক্রীদের ষড়যন্ত্র ও মার্কিনিদের অমানবিক খাদ্য ক‚টনীতি। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ (বাকশাল) গঠন করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বাকশাল গঠনের তিন মাসের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবার ও সহকর্মীদের ফলে ব্যবস্থাটি ভালো-মন্দ, একদলীয় বা জাতীয় ঐক্যের মঞ্চ কিনা বাংলাদেশে বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মূল্যায়নের সুযোগ হয় নাই।
বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়কাল : ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট থেকে ৩রা নভেম্বরের স্বাধীনতার ইতিহাসের নায়কদের নির্মম হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে শুধূমাত্র আওয়ামী লীগকে নয় বাংলাদেশকে নেতুত্বশূন্য করা হয়। পঁচাত্তর পরবর্তী দুঃসময়ের সেইক্ষণে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮০ সনে দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দলের হাল ধরেন। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর আরেক সামরিক শাসক হু.মু. ্এরশাদ ক্ষমতা দখল করেন। ১৯৮৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এরশাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করে। এই আন্দোলন চলাকালে ১০ নভেম্বর পুলিশের গুলিতে যুবলীগ কর্মী নূর হোসেন নিহত হলে আন্দোলন গণঅভুত্থানে রুপ নেয় এবং ৯০’র ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন হয়। পরবর্তী নির্বাচনে জিয়ার গঠিত দল বিএনপি নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। বিএনপির শাসনামলে আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে। বিএনপি আমলের শেষদিকে আওয়ামী লীগ জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ে নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের দাবীতে গণআন্দোলন গড়ে তুললে নতুন প্রজম্মের বঙ্গবন্ধুর অনুসারীরা আবারও অবতীর্ণ হয় আদর্শের লড়াইয়ে। ৯৬’র ১৫ ফেব্রæয়ারি বিতর্কিত নির্বাচন করেও বিএনপির পতন হয়। পরবর্তী নির্বাচনে দীর্ঘ একুশ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে।
১৯৯৬ সাল পরবর্তী ২০২২ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার সময়কাল : শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় আরোহনের ১৯৯৬-২০০১ সাল ছিল সাফল্যের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। খাদ্য নিরাপত্তা, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, শান্তিচুক্তি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা অর্জন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ লাভ, ক্রিকেট বিশ্বে অভিষেক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে নতুন মর্যাদার আসনে অভিষিক্ত করে। শিক্ষানীতি প্রণয়ন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেশনজট দূরীকরণ ছিল জাতির অগ্রগতির পরিচায়ক। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অর্জিত হয় সাফল্য। শিল্প-কারখানা স্থাপন ও বেসরকারি উদ্যোগকে সুযোগ দিয়ে লাখ লাখ বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করে। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার, জেলহত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু এবং আইন সংস্কার কমিশন গঠন প্রভৃতির মাধ্যমে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পদপে গ্রহণ করা হয়। দেশকে পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় ফিরিয়ে আনা হয় এবং বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে পুনরুজ্জীবিত করতে গ্রহণ করা হয় নানামুখী পদক্ষেপ। কিন্তুু দেশ পরিচালনায় সাফল্যের পরও ২০০১ সনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজয় বরণ করতে হয়। এরপর বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা, নিপিীড়ন নির্যাতন করা হয়। দেশব্যাপী জঙ্গী হামলা ও তৎপরতার প্রসার ঘটে। ২০০৪ সালের ২১শে আগষ্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। দেশব্যাপী হত্যা নির্যাতন, মানুষের নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পানি গ্যাস বিদ্যুত সংকট ও জালভোটার বাদ দিয়ে নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ণের জন্য আওয়ামী আন্দোলন গড়ে তোলে। ঢাকার রাজপথ গণমানুষের সমর্থনে আওয়ামী লীগের আন্দোলনে প্রকম্পিত হয়ে উঠে। ক্ষমতা হস্তাস্তরে চারদলীয় জোটের ষড়যন্ত্রের কারণে তাদের পতন হয়। সেনা সমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসেই মাইনাস ফমূর্লা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রে শেখ হাসিনাকে বিদেশ থেকে দেশে ফিরতে বাধা দিলে দৃঢ়তার সহিত মোকাবেলা করে দেশে ফিরেন। তত্ত¡াবধায়ক সরকার আমলেই শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুই তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। দিন বদলের সনদ নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধের বিচার করার লক্ষ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার কার্যক্রম শুরু করে। বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাইল ফলক রচিত করে। আদালত কতৃক তত্ত¡বধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হয়। যুদ্ধাপরাধীর বিচার বানচালে নজিরবিহীন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য আওয়ামী লীগ ধৈর্য্যরে সহিত মোকাবেলা করে। বঙ্গবন্ধু ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেয়াদশেষে ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রæয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন বিএনপি জোটের বর্জনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। যুদ্ধাপরাধের বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যা বিচারের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন করেছে আওয়ামী লীগ। জঙ্গী সন্ত্রাস দমনে সাফল্য বিশ্বে আলোচিত। তারই ধারাবাহিতায় রূপকল্প- ২০২১ নাগাদ জাতীয় প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে উন্নীত, শিল্পে জাতীয় আয়ে ৪০ শতাংশে, গড় আয়ু ৭০, মাতৃমৃত্যু হার ১.৫ এবং শিশুমৃত্যু হার প্রতি হাজারে ১৫, বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের হার ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। জঙ্গী দমনে সাফল্যের পর সরকার মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। ছয় শতাংশের বৃত্ত ভেঙ্গে উচ্চ প্রবৃদ্ধির সোপানে আরোহন এবং মাথাপিছু আয়ের ধারাবাহিক উত্তরণ ঘটিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশের কাতারে সামিল হওয়া আওয়ামী লীগের চ‚ড়ান্ত লক্ষ্য।
স্বাধীনতার দীর্ঘ বছর পেরিয়েও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার শত্রæরা। উদ্দীপ্ত জয় বাংলা ¯েøাগানে যেমন শত্রæরা সেদিন পরাজিত ছিল, আজও পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে শত্রæরা অপমানিত। ইতিহাসের পাঠশালায় আওয়ামী লীগ লিখে যাচ্ছে অনন্য বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী লগ্নে পদ্মা পাড়ে গণমানুষের পাঠশালায় আবারো লাখো মানুেেষর কন্ঠস্বরে ধ্বনিত হবে বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠের প্রতিধ্বনি জয় বাংলা।
লেখক: আইনবিদ ও রাজনীতিক