ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালা চবি-চুয়েটে মানববন্ধন

14

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) প্রণীত অভিন্ন নীতিমালা প্রতিহত করার লক্ষ্যে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়ন (৪র্থ শ্রেণী)। বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের (বাআবিকফ) কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। বুধবার দুপুর বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করে তারা। এসময় তারা বাআবিকফ কর্তৃক প্রণিত ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
দাবিগুলো হল- স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন পূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সালের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে। বাআবিকফ কর্তৃক পেশকৃত খসড়া আপগ্রেডেশন/পদোন্নতি নীতিমালা অথবা সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের নীতিমালা পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ সুবিধাপ্রাপ্ত অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। বাংলাদেশ সচিবালয়ের ন্যায় প্রধান সহকারী /সমমান, উচ্চমান সহকারী/সমমান পদে কর্মরত কর্মচারীদের জাতীয় বেতন স্কেল (২০০৯) ৮,০০০- ১৬৫৪০ দশম গ্রেড বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগ এবং কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব-স্ব বেসিক সংগঠনের প্রতিনিধিদেরকে কমিটিতে রাখতে হবে। বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনকে বাৎসরিক ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান দিতে হবে। সকল পাবলিক, স্বায়ত্ত¡শাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা কোটা অনুসরণ করতে হবে। সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের কোন কারনে সামরিক/ স্থায়ী বরখাস্ত করনের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন/শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বেসিক সংগঠনের প্রতিনিধি রাখতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কল্যাণ শাখা কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপন নং ০৫.০০.০০০০.১২৩.০৫.০০১.১৬-৭০০ তারিখঃ ২৭-০৬-২০১৬ ইং অনুযায়ী সকল পাবলিক, স্বায়ত্বশাসিত ও অধা-স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় মৃত্যবরণ করলে সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় তার পরিবারকে ৮ লক্ষ এবং স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে। যোগ্যতা অনুযায়ী সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা নিশ্চিত করতে হবে। সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী ৫০% আভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
মানববন্ধনে ৩য় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি সুমন মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্ররা যখন বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিভিন্ন পদে-দপ্তরে যোগদান করার চেষ্টা করছে ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অভিন্ন নীতিমালা নামক একটি প্রহসন আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। আমরা এ প্রহসন মানি না। আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রণীত সেই ৭৩ এর এক্ট বলবৎ চাই।


৪র্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আলী হোসাইন বলেন, সরকারের প্রতি দাবি থাকবে ইউজিসি কর্তৃক প্রণীত অভিন্ন নীতিমালা নামক প্রহসন যেন সরকার গ্রহণ না করেন। অন্যথায় আমরা সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করব।
কর্মচারী ইউনিয়নের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে মানববন্ধনে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাভেদ।
এদিকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) স্টাফ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ১১দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন কর্তৃক ঘোষিত মানববন্ধন পালিত হয়েছে। সকাল ১১টায় চুয়েটের স্বাধীনতা চত্বরস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও চুয়েট স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন। মানববন্ধনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়েট অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিন মোহাম্মদ মুসা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন।
এতে আরও বক্তব্য দেন স্টাফ এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মো. মাসুদ হোসেন রুবেল ও উপদেষ্টা আব্দুল আল হান্নান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ^জিৎ ভট্টাচার্য। মানববন্ধনে চুয়েটের সর্বস্তরের কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা একাত্মতা প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।