পূর্বদেশ অনলাইন
ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। এই হামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তা একত্রিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে ইউক্রেন অভিমুখে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর কিছুক্ষণ আগে এক টেলিভিশন ভাষণে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন তিনি। এই অভিযানে ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং নাৎসীমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিক হামলায় ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, কামান, বিমান হামলা ব্যবহার করা হয়েছে। সামরিক অবকাঠামো এবং সীমান্ত অবস্থান লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। যেসব শহর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছে ওদেসা, মারুপোল, খারখিভ, ডিনিপ্রো এবং রাজধানী কিয়েভ। রুশ সামরিক বাহিনীর অভিযানের পূর্ণ চিত্র তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। তবে পুতিন বলেছেন, ‘ইউক্রেনের কোনও অঞ্চল দখল আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে নেই। আমরা জোর করে কোনও কিছু চাপিয়ে দিতে যাচ্ছি না।’ তবে পুতিন এবং রুশ কর্মকর্তারা বরাবরই ইউক্রেনে সামরিক হামলার পরিকল্পনা থাকার কথা অস্বীকার করে আসছিলেন।
রাজধানী কিয়েভে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাওয়ার পর শহরটির মেয়র বাসিন্দাদের আশ্রয় নেওয়ার এবং ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। শহরে শোনা যাচ্ছে বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন। প্রাথমিক দফা হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশজুড়ে সামরিক আইন (মার্শাল ল) জারি করেছেন। রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স দাবি করেছে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমে নেমেছে রুশ প্যারাট্রুপাররা। তবে এই খবর এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হামলা শুরুর দুই ঘণ্টার মধ্যে সকাল সাতটার দিকে রুশ সমর্থিত ইউক্রেনীয় বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের সেনা অবস্থানে হামলা চালানোর দাবি করেছে। লুহানস্ক ও ডনেস্ক অঞ্চলের আশেপাশে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থানে এসব হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহীরা। এছাড়াও ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী খারখিভ শহরে রুশ বাহিনী ঢুকে পড়ার অনিশ্চিত খবর পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে বেসামরিক বিমানের জন্য ‘নো-ফ্লাই’ জোন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টা পর কিয়েভের মূল বিমানবন্দরের কাছে রুশ হামলার কথা জানা যায়। এরপরই আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। তবে রাশিয়ার দাবি তারা ইউক্রেনের বিমান ঘাঁটি এবং সামরিক সম্পদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, জনবসতির এলাকাগুলোতে নয়।