ইউক্রেইন থেকে ফিরতে বাংলাদেশিদের যা করণীয়

34

পূর্বদেশ অনলাইন
যুদ্ধের কারণে ইউক্রেইনে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার সুযোগ দিতে ভিসা ছাড়াই ঢোকার অনুমতি দেবে পোল্যান্ড সরকার।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পোল্যান্ডের ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্ত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ছাড়া উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্র বৈধ পাসপোর্টধারীরা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে পাসপোর্ট দেখিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন।”
যাদের পাসপোর্ট নেই, তারাও ট্র্যাভেল পাস নিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন প্রত্যেক বাংলাদেশিকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজে রঙিন ছবি সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করেছে দূতাবাস। ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি দল শুক্রবার সকালে পোল্যান্ড- ইউক্রেইন সীমান্তের পথে রওনা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে ঢুকতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের তারা সহায়তা করবেন।” দূতাবাস বলছে, ইউক্রেইনের ভেতরে বিচ্ছিন্ন বোমা বিস্ফোরণ ঘটছে, পেট্রলের অপ্রতুলতা রয়েছে এবং পথে অতিরিক্ত যানজটের খবর আসছে। কাজেই পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে দূরবর্তী এলাকায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের রওনা হতে হওয়ার আগে পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নেওয়া প্রয়োজন।
যাদের সঙ্গে বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদেরও পোল্যান্ডে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে ওয়ারশর বাংলাদেশ মিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এ মোমেন জানিয়েছেন।
গত কিছু দিন ধরে যুদ্ধের দামামার পর বৃহস্পতিবার রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেইনের উপর স্থল ও আকাশ পথে হামলা শুরু করেছে। রাজধানী কিয়েভেও গোলাবর্ষণ হচ্ছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেইনের বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা আটকে পড়েছেন। তারা উদ্ধারের আকুতিও জানাচ্ছেন। এদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। ইউক্রেইনের কিয়েভ থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের দূরত্ব পাঁচশ কিলোমিটারের মতো। এখন সেখানে বিমান চলাচল বন্ধ। স্থলপথে যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক নয়। ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পোল্যান্ড যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে ইউক্রেইনে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন। অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর হাতে পোল্যান্ড পর্যন্ত যাওয়ার জন্য যথেষ্ট টাকাও নেই। বাংলাদেশ থেকে সেখানে টাকা পাঠানো জটিল বলে তাদের সঙ্কট আরও বেশি।
ইউক্রেইনের যে দিকে পোল্যান্ড, তা বিপরীত দিকে ১ হাজারের বেশি কিলোমিটার দূরের মারিওপোলেও কিছু বাংলাদেশি রয়েছে বলে খবর মিলেছে। বৃহস্পতিবারই সেখানে হামলা করেছে রুশ বাহিনী। দেশটিতে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস না থাকায় পোল্যান্ডের ওয়াশতে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে তাদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ইউক্রেইনে কত বাংলাদেশি আছেন, তার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব সরকারের খাতায় নেই। তবে সেই সংখ্যা এক থেকে দেড় হাজার হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিলেন পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ইউক্রেইন থেকে অনেকে ইতোমধ্যে পোল্যান্ডে চলে এসেছেন। “যে যেদিকে পারছে বর্ডারের দিকে চলে যাচ্ছে। আজ (বৃহস্পতিবার) রাত পর্যন্ত বাংলাদেশির সংখ্যা ৬০০ পেরিয়ে গেছে। তিনটি গ্রুপ করা হয়েছে। অন্য বাংলাদেশিদের খোঁজ পেতে আইওএম এবং রেডক্রসের সাথে যোগাযোগ করছি আমরা।” যারা পোল্যান্ডে পৌঁছাচ্ছেন, তাদের বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন লায়লা। “দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করবেন অথবা কাছাকাছি যারা ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করছে, তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।”
এছাড়া প্রয়োজনে বাংলাদেশিদের ওয়ারশ দূতাবাসের কর্মকর্তা অনির্বাণ নিয়োগীর নম্বরে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। অনির্বাণ নিয়োগী: +48572094381