আ.লীগের প্রার্থী তালিকা যাবে চার নেতার স্বাক্ষরে

72

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় একক প্রার্থী থাকলেও ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত রাখছে আওয়ামী লীগ। একই সাথে চেয়ারম্যান পদে দলীয় একক অথবা তিনজন প্রার্থীর তালিকা জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের স্বাক্ষরে কেন্দ্রে পাঠানোর জন্যও বলা হয়েছে। আগামি ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ তালিকা আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের জানান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা এমপি’র নির্দেশনা মোতাবেক আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন প্রদান করবে না আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৮(৪) ধারা মোতাবেক জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের পরামর্শ গ্রহণপূর্বক জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের (৪ জন) স্বাক্ষরে চেয়ারম্যান পদের জন্য ঐক্যমতের ভিত্তিতে একক প্রার্থী অথবা অনধিক তিন জনের একটি প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। যা আগামি ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রেরণ করতে হবে। প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি অবশ্যই প্রেরণ করতে হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আওতাধীন ১৪টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারণের জন্য কেন্দ্র থেকে পাঠানো চিঠি হাতে পেয়েই সাংগঠনিক কর্মকান্ড শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ পৃথক বর্ধিত সভা করে প্রার্থী চূড়ান্তের কাঠামোও নির্ধারণ করেছেন। উভয় ইউনিটে প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বঞ্চিত হওয়া প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত কতটুকু ঐক্যবদ্ধ থাকবেন তা দেখার জন্য নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ গত ২৭ ও ২৯ জানুয়ারি সাতটি উপজেলার প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে তৃণমূলে বর্ধিত সভা করেছে। সেখানেও প্রার্থীরা নিজেদের ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি যাকে দলীয় প্রার্থী করা হবে তার পক্ষে থাকার ঘোষণাও দিয়েছেন। প্রত্যেকটি উপজেলায় একের অধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। ভাইস-চেয়ারম্যানের দু’টি পদেও সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা বেশি।
উত্তর জেলায় প্রত্যেকটি উপজেলায় বর্ধিত সভা করে প্রার্থী নির্ধারণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে রাউজান উপজেলায় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে তৃণমূল। সেখানে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুলকে একক প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়েছে। সীতাকুন্ড আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে ঐক্যের সুবাতাস বইছে। সাপে-নেউলে সম্পর্ক থাকা সংসদ সদস্য দিদারুল আলম ও উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। গতকাল দুই নেতাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা বৈঠক করেছেন। সে বৈঠকেও উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম পূর্বদেশকে বলেন, তৃণমূলের সিদ্ধান্তে উপজেলা থেকে যে তালিকা আসবে আমরা তাই চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠাবো। আমাদের কোনো ব্যক্তিগত পছন্দ নেই।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, আমরা প্রার্থী নির্ধারণে অনেকদূর এগিয়েছি। তৃণমূলের বর্ধিত সভায় যে নামগুলো উঠে এসেছে সেখান থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠাবো। কেন্দ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।