আসন বাড়লো ৩ হাজার

23

আসহাব আরমান

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত কলেজগুলোতে এইচএসসি পর্যায়ে প্রায় ৩ হাজার আসন বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর ৮টি সরকারি কলেজে বেড়েছে ২৩০টি। অবশিষ্ট আসনগুলো চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার কলেজগুলোতে বাড়ানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন এতে করে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোতে আরও বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখার সুযোগ পাবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বোর্ডের অধীনে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি জেলায় কলেজ রয়েছে ২৮০টি। বর্ধিত আসনসহ এসব কলেজে আসন রয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন মিলিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে আসন রয়েছে ৩৪ হাজার ৪৮১টি, মানবিক বিভাগে ৬৬ হাজার ১৩২টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৬২ হাজার ১২৭টি। এছাড়া গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়ে রয়েছে ৫০টি আসন।
ভালো শিক্ষার্থীদের নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে পড়ার আগ্রহ থাকে। ফলে অনেক শিক্ষার্থীর আগ্রহ থাকলেও সীমিত আসনের কারণে এসব কলেজে পড়ার সুযোগ হয় না। যদিও শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে এসব কলেজে ধারাবাহিকভাবে আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত তিন বছরে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬০০টি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। আসন সংকটের কারণে প্রতি বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী বেসরকারি কলেজে পড়তে পারে না। যদিও গত দুই বছরে নগরীর সরকারি কলেজগুলোর বিজ্ঞান বিভাগে ৩০০’র বেশি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্ধিত আসনসহ নগরীর ৮ সরকারি কলেজে আসন সংখ্যা ৯ হাজার ৬২৫টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে আসন রয়েছে ৩ হাজার ৪০০টি, মানবিক বিভাগে ২ হাজার ৫৭৫টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৬৫০টি। নগরীর সরকারি কলেজগুলোর বিজ্ঞান শাখায় ১১৫টি, ৩টি কলেজে মানবিক শাখায় ৭৫টি ও দুটি কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৪০টি আসন বৃদ্ধি করা হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জাহেদুল হক পূর্বদেশকে বলেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর আগ্রহ থাকে সরকারি কলেজে মাসিক ৩০০ টাকা বেতনে লেখাপড়া করার। কিন্তু আমরা তো সবার জন্য আসনের ব্যবস্থা করতে পারি না। নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে প্রতিবছর আসন বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে অনেক আলোচনার পর আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ২০১৮ সাল থেকে এই পর্যন্ত চট্টগ্রামের সরকারি কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা দ্বিগুণের কাছাকাছি বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও কিছু আসন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলমান আছে।
তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজারের মত আসন খালি থাকে। কারণ একটি ক্লাস রুমের ধারণ ক্ষমতা ৪০ থাকলেও অনেক সময় ভর্তি হয় ৩০ জন। এছাড়াও ভালো শিক্ষার্থী ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়তে চায়। ফলে গ্রামের কলেজগুলোতে আসনের তুলনায় কম শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে এ বছর কলেজের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে বোর্ডের অধীনে কলেজ ছিল ২৭২টি। এবছর আরও ৮টি কলেজ যুক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীতে নেভি এ্যাংকরেজ স্কুল এন্ড কলেজ নামে নতুন একটি কলেজ যুক্ত হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় আরও ৭টি নতুন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের অভিমত, চট্টগ্রামে এমনিতে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে যেগুলোতে পর্যাপ্ত আসন না থাকায় অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীকে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতে হয়। শিক্ষা বোর্ডের এই উদ্যোগের ফলে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে।
এদিকে এইচএসসিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন শেষ হয়েছে। এতে প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭১ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও দাপ্তরিক কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ২৯ তারিখ এসব আবেদনের ফলাফল প্রকাশিত হবে। ৩০ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে কলেজ নিশ্চয়ন। এরপর ২ মার্চ থেকে একাদ্বশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩৬ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫০ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬৭ হাজার ১৭১ জন এবং ছাত্রী ৭৭ হাজার ৩৭৯ জন। ছাত্র পাসের হার ৯০ দশমিক ১৪ শতাংশ। এবার এ শিক্ষাবোর্ড থেকে ১২ হাজার ৮০১ ছাত্রছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।