আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদের মৃত্যু

6

পূর্বদেশ ডেস্ক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। গতকাল শুক্রবার তার মৃত্যুর খবর জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম। ২০০৪ সাল থেকে তিনি আমিরাতের প্রেসিডেন্ট এবং আবুধাবির শাসক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১৪ সালে স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে জনসম্মুখে খুব একটা দেখা যেত না। এ সময় মূলত দেশ শাসন করে আসছিলেন তার সৎ ভাই শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান।
শেখ খলিফা ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট এবং আবুধাবির ১৬ তম শাসক। বাবা শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান মারা গেলে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।
বিবিসি জানায়, তার মৃত্যুতে শোক বার্তা প্রকাশ করেছে আমিরাতের প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়। এক ঘোষণায় মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৪০ দিন শোক পালন করা হবে। এ সময় শুক্রবার থেকেই জাতীয় পতাকা থাকবে অর্ধনমিত। তাছাড়া, সব সরকারি ও বেসরকারি খাতে তিন দিন কার্যক্রম বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
আমিরাতের সংবিধান অনুযায়ী, দেশের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাখতুম এখন হবেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট। দেশের ৭ টি আমিরাতের শাসককে নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় পরিষদ আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না করা পর্যন্ত আল-মাখতুম কাজ চালাবেন। খবর বিডিনিউজ’র
আর আবুধাবির শাসক হিসাবে শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের উত্তরসূরি হতে পারেন তার সৎ ভাই ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান।
শেখ খলিফা প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার শাসনের প্রথম দশকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং আবুধাবি সরকার উভয় ক্ষেত্রেই বড় ধরনের পুনর্গঠনের কাজ করেছিলেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তাকে জনসম্মুখে খুব একটা দেখা না গেলেও তিনি নানা বিষয়ে নির্দেশনা দিতেন।
বাংলাদেশে শোক : সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মৃত্যুতে শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে বাংলাদেশ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু’ শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মৃত্যুতে সরকার শোক পালনের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে শনিবার বাংলাদেশের সকল সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
এছাড়া শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের রুহের মাগফেরাত কামনায় দেশের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া করা হবে। পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
২০০৪ সাল থেকে আমিরাতের প্রেসিডেন্ট এবং আবুধাবির শাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের মৃত্যুর খবর শুক্রবার ঘোষণা করা হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন পরীক্ষিত ও অকৃত্রিম বন্ধুকে হারাল।”