আমাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে : ফখরুল

72

বগুড়া-৬ (সদরে) আসনে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় বলেছেন, সরকারের এখনও বোধোদয় হয়নি। তারা রাষ্ট্রযন্ত্র সঙ্গে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় থেকে জনগণকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে চাইছে। হামলা-মামলা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। তাই আমরা সব বাধা উপেক্ষা করে শেষদিন পর্যন্ত মাঠে থাকবো।
বগুড়ায় দুই দিনের নির্বাচনী প্রচারণাকালে গতকাল শনিবার সকালে বগুড়া উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ধানের শীষে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, আপনাদের একটি ভোট সবকিছু পাল্টে দিতে পারে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জেল থেকে মুক্ত হতে পারেন এবং তারেক রহমান বিদেশ থেকে ফিরতে পারেন। মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। বগুড়ার সাতটি আসনে ধানের শীষের জোয়ার উঠেছে। জনগণ তাদের প্রিয় মানুষকে (খালেদা) মুক্ত করতে রাস্তায় নেমে এসেছেন। আর জনগণ এগিয়ে এলে কোনও অপশক্তি টিকে থাকতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন অসহায়, ঠুঁটোজগন্নাথে পরিণত হয়েছে। তারা সরকারের নির্দেশ পালন করে চলেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে পারেনি। প্রশাসন নিরপেক্ষ নয়। ভোটে জেতার ব্যাপারে সরকারকে সহায়তা করছে।
তিনি বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি সরকার তফসিল ঘোষণার পর গ্রেপ্তার বন্ধ করার অঙ্গীকার করলেও কথা রাখেনি। এখনও গ্রেপ্তার, হামলা ও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। আমি ছাড়াও ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রবের মতো জাতীয় নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা জামায়াত ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। ১৭৩ দিন হরতাল দেন। জনমতকে মেনে নিয়ে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিলাম। পরপর তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে, প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। অথচ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। বিএনপি বাদে সব দল তা মেনে নিয়েছিল। বিএনপি ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করলে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরপর থেকে সংবিধান কাটছাঁট করে ও বিচারপতি খায়রুল হকের আদেশ বাতিল করে দলীয় সরকারের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে।
ভোটের দিন জনগণ কেন্দ্রে যেতে না পারলে বিএনপি কী করবে-সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেটা সেদিনই জানতে পারবেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ২-৩ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে যাওয়া হবে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ নির্বাচন তদারকির দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সদর আসনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা একেএম মাহবুবর রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন, বগুড়া-১ আসনের প্রার্থী কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৩ আসনের আবদুল মহিত তালুকদার, বগুড়া-৪ আসনের মোশারফ হোসেন, বগুড়া-৫ আসনের গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, বগুড়া-৭ আসনের মোর্শেদ মিল্টন, বিএনপি নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনা, মাহবুবর রহমান বকুল, হিরু চৌধুরী, এমআর ইসলাম স্বাধীন, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, নাজমুল হুদা পপন, তাহা উদ্দিন নাহিন, সিপার আল বখতিয়ার, খাদেমুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সদরের সাবগ্রাম বাজার, রাজাপুর, শাখারিয়া, লাহিড়িপাড়া, নামুজা, গোকুল, নুনগোলা, নিশিন্দারা, এরুলিয়া, ফাঁপোড়সহ তার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করেন।