আমাকে ধর্ষণ এবং স্বামীকে হত্যা করেছে রুশ সেনারা

32

পূর্বদেশ ডেস্ক

ইউক্রেনে রুশ সেনারা নিরীহ মানুষের ওপর সামরিক হামলার পাশাপাশি ব্যাপক ধর্ষণ ও লুটপাট করছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসছে। অভিযানের পর রাজধানী কিয়েভ থেকে চলে যাওয়ার পর সেখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এসবের সত্যতা নিশ্চিতের জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির সাংবাদিকের কাছে কিয়েভের এক নারী তার ওপর চালানো রুশ সেনাদের পাশবিকতার বর্ণনা দিয়েছেন। কিয়েভ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে এক নিভৃত পল্লীতে স্বামী, সংসার নিয়ে ভালোই ছিলেন আন্না (ছদ্মনাম) নামে ৫০ বছর বয়সি এক নারী।
কিন্তু রুশ আগ্রাসনের পর তার জীবনটাই ওলট-পালট হয়ে গেছে। এক দল রুশ সেনা এসে হঠাৎ করেই তার বাড়িতে হাজির। তিনি বলেন, প্রথমেই তারা আমার স্বামীকে হাত তুলে পেছনে হাঁটতে বলেন। এর পর আমাকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায় পাশের একটি নির্জন বাড়িতে। সেখানে তারা বন্দুক তাক করে। তরুণ এক সেনা আমাকে ধর্ষণ করে। আমি ভেবেছিলাম, এখানেই বুঝি আমার দুর্ভোগ শেষ। কিন্তু না, এর পর একে একে আরও চার সেনা আমাকে ধর্ষণ করে।
জ্ঞান ফিরে এলে আমি বাড়ি গিয়ে দেখি আমার গুলিবিদ্ধ স্বামী কাতরাচ্ছেন। আমাকে তুলে আনার সময় তিনি রুশ সেনাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর একাধিক গুলি চালানো হয়।
আন্না আরও বলেন, এ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য স্বামী নিয়ে হাসপাতালেও যেতে পারিনি আমি। আশপাশের বাড়িতে গিয়ে সাহায্য চেয়েছি তাদের কাছে স্বামীর চিকিৎসার জন্য। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য কেউ-ই আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাহস পাননি। আমার সামনেই যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে দুদিন পর স্বামী মারা গেলেন। বাড়ির পেছনে উঠানে তাকে সমাহিত করা হয়েছে। গত ৭ মার্চ ওই নারীর বাড়িতে এ বর্বরতা চালায় রুশ বাহিনী। আন্না যতক্ষণ সাংবাদিকদের কাছে তার এ করুণ কাহিনি বলছিলেন, ততক্ষণই কাঁদছিলেন। তিনি আরও জানান, তার শরীরিক অসুস্থতা কেটে গেলেও মানসিক ট্রমায় ভুগছেন তিনি। স্থানীয় হাসপাতালে তিনি নিয়মিত মানসিক চিকিৎসা নিচ্ছেন।