আবারও স্বর্ণের চালান জব্দ শাহ আমানতে

19

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবৈধভাবে আরব আমিরাত থেকে নিয়ে আসা স্বর্ণের আরও একটি চালান জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাতটার দিকে আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে আসেন লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম। তার দেহ তল্লাশি করে ৩৪টি স্বর্ণের বার ও ১৪টি চেইন জব্দ করা হয়েছে।
বিমানবন্দরে কর্তব্যরত শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এম. সুলতান মাহমুদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সকালে এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইটে আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে আসা যাত্রী সাইফুল ইসলামকে আটক করেন। পরে তার শরীরে তল্লাশি চালিয়ে কালো রঙের টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ৩৪টি স্বর্ণের বার ও ১৪ চেইন জব্দ করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।
শুল্ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আটক সাইফুল ইসলাম স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের পেশাদার বাহক। নিয়মিত দুবাই আসা-যাওয়া রয়েছে তার। গত মে মাসেই তিনি অন্তত দু’বার দুবাই যান। চোরাচালান ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে তাকে পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত তিন অর্থবছরে এই বিমানবন্দর দিয়ে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ১৩৪ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য ৭০ কোটি টাকার বেশি। এরমধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আরব আমিরাত ও সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ১১টি চালানে ৩৬ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের বাজারমূল্য ২০ কোটি টাকা। তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবছরে একই বিমানবন্দর দিয়ে ১৮টি অবৈধ চালানে আনা ৭৮ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় ৪১ কোটি টাকা। আর চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে পৃথকভাবে ১৮টি অবৈধ চালানে নিয়ে আসা ২০ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। এসব স্বর্ণের বাজারমূল্য সাড়ে ১০ কোটি টাকারও বেশি। এর আগে সর্বশেষ গত ২৯ মে সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৩৬ ফ্লাইটে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে আটক হন যাত্রী শফি আলম। তার লাগেজ স্ক্যান করে সন্দেহজনক ধাতব বস্তুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। পরে লাগেজে থাকা ইস্ত্রি, টর্চ ও চার্জার লাইটের ভেতর তল্লাশি করে তিন কেজি তিনশ’ গ্রাম ওজনের ২৮ টি অবৈধ স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের বারের আনুমানিক বাজারমূল্য আড়াই কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্র শাহ আমানত বিমানবন্দরকে স্বর্ণ ও ভিনদেশি সিগারেটসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করলেও কী পরিমাণ স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে আসছে তার সুনির্দিষ্ট হিসাব কোনও সংস্থার কাছে নেই। এছাড়া, চলতি অর্থবছরে রাজধানীর শাহজালাল এবং সিলেটের এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরে নিয়ে আসা অবৈধ স্বর্ণের বেশ কয়েকটি চালানও জব্দ করা হয়েছে।