আবারও নিষিদ্ধ তারকা ক্রিকেটার সাকিব

43

বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার বাংলাদেশের গর্বিত সন্তান বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-২০ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আবারও নিষিদ্ধ হলেন দুই বছরের জন্য। যদিও নিষিদ্ধের কার্যকারিতা থাকবে একবছর, কিন্তু বাকি একবছর পাঠার খড়গের নিচে মাথা রেখেই তাকে মাঠে খেলতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এ শাস্তি প্রদান করেছেন। যে কারণে শাস্তি তা সাধারণের দৃষ্টিতে লঘু হলেও আইসিসির বিধিতে এটি বড় অপরাধ। যে অপরাধের শাস্তি ৬মাস থেকে শুরু কওে ৫বছর পর্যন্ত নির্ধারিত। তবে অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় সাকিবের শাস্তি দুই বছর করে অপরাধ স্বীকার করায় একবছর স্থগিত করা হয়েছে বলে আইসিসির বরাতে বিসিবি কর্তৃপক্ষ গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ????? ?????, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ??????াব প্রত্যাখ্যান করার তথ্য আইসিসিকে না জানানোয় তার বি??দ্ধে ? ???? শা?ি?? গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার আইসিসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সাকিবের দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার খবরে বলা হয়েছে, এর মধ্যে এক বছর ‘স্থগিত নিষেধাজ্ঞা’ রয়েছে। অপরাধ স্বীকার করে নেয়ায় তাকে এক বছর পরই খেলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সাকিবের এক বছরের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০২০ সালে ২৯ অক্টোবর। পরবর্তী সময়ে তিনি এই ধরনের কোন অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে আবারও শাস্তি পেতে হবে। আইসিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালে ২৯ অক্টোবরের পর থেকেই সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন। আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী আচরণ বিধিমালার তিনটি ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আকসুর ২.৪.৪ আর্টিকেলের মধ্যেই তিনটি অপরাধ করেছিলেন সাকিব। আকসুর ওই আর্টিকেলে বলা হয়েছে যে, কোন ক্রিকেটার যদি ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বা স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাাব পান, তাহলে সেটা আইসিসি বা সং?ি??ষ্ট দেশের বোর্ডকে জানাতে হবে। কিন্তু সাকিব তা এড়িয়ে গেছেন তিন তিনবার।
আকসুর বিধি অনুযায়ী সাকিব আল হাসানের বিরূদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করা হয়। এন্টি করাপশন ট্রাইবুনালে শুনানির পরিবর্তে দোষ স্বীকার করে নেন সাকিব। আইসিসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেয়া আবেগঘন বিবৃতিতে সাকিব আল হাসান বলেছেন, আমার ভালোবাসার খেলাটি থেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় আমি অবশ্যই অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। তবে জুয়াড়ির প্রস্তাব সম্পর্কে আইসিসিকে না জানানোর কারণে আমার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আমি মেনে নিচ্ছি। দুর্নীতির বিরূদ্ধে লড়াইয়ের জন্য খেলোয়াড়দেরকে আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে চায় আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট। কিন্তু আমি এক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। সাকিব বলেন, বিশ্বব্যাপী অধিকাংশ ক্রিকেটার এবং ভক্তদের মতো আমিও দুর্নীতিমুক্ত ক্রিকেট চাই। আমি আইসিসির দুর্নীতি প্রতিরোধী ইউনিটের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে তাদের সহযোগিতা করতে চাই এবং আমি যে ভুলটি করেছি তা যেন আর কোন নবীন ক্রিকেটার না করেন সেটি নিশ্চিত করতে করতে চাই।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)-এর অল রাউন্ডারদের র‌্যাংকিংয়ে টেস্টে তিন, ওডিআইতে এক এবং টি-২০তে দুই নম্বরে আছেন বাংলাদেশের এ যাবৎকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। বরাবরই তিনি দেশের ক্রিকেটভক্তদের কাছে আবেগের একটা জায়গা দখল করে আছেন। মাঝে মাঝে কিছু বিতর্কিত আচরণ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও চলে আসেন। আমরা জানি এর আগে ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা সিরিজে ক্যামেরার সামনে অঙ্গভঙ্গি, স্ত্রী শিশিরের সঙ্গে এক দর্শকের বাজে আচরণের কারণে সরাসরি দর্শককে পিটানোর কারণে তাকে ৬মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আইসিসির এ শাস্তির আগে সাকিব ক্রিকেটারদের ধর্মঘটেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এরপর ক্রিকেট বোর্ডকে না জানিয়ে একটি বিজ্ঞাপনের মডেলে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর কথাও বলা হয়েছিল বোর্ডেও পক্ষ থেকে। সবের রেশ না কাটতে বড় শাস্তির খড়গ নিয়ে সাকিবকে একবছরের জন্য মাঠ ছাড়তে হল। ছোট ছোট অনেকগুলো ঘটনা ও রটনার পর আইসিসির বিনা মেঘে বজ্রপাতে বিসিবি কর্তৃপক্ষ হতাশা প্রকাশ করলেও ক্রিকেট প্রেমী মানুষ এ শাস্তির পেছনের কোন রহস্য কাজ করছে কিনা-তা নিয়ে আলোচনায় মেতে থাকতে দেখা গেছে। এ শাস্তির বিষয়ে বিশ্বব্যাপী বিরোপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও আমরা মনে করি, সাকিব একজন সৎ ও সহজ-সরল খেলোয়াড় হিসাবে বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছেন। মানুষ খেয়ালি হতেই পারে। সাকিবের ক্রিকেট রোমাঞ্চের সাথে বহুবার আমরা তার খেয়ালি মনকেও উপভোগ করেছি। এজন্য সমালোচনা ও শাস্তি তাকে পেতে হয়েছে। কিন্তু সাকিব ক্রিকেট মাঠে দেশ ও জাতিকে বারবার যে সফলতা ও বিজয়ের মুকুট পরিয়েছেন তাতে তার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা থাকবে সবসময়। আমরা সামান্য দোষে সাকিবের সাংগঠনিক শাস্তির প্রতি নজর না দিয়ে বরং এ মুহূর্তে তার পাশেই আমাদের শক্ত অবস্থান নেয়া জরুরি মনে করি।