আবদুল হালিম চৌধুরী (১৯২৮-১৯৮৭)

151

আবদুল হালিম চৌধুরী, সামরিক কর্মকর্তা, রাজনীতিক। জন্ম ১৯২৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার এলাচিপুর গ্রামে। তাঁর পিতা আবদুল মতিন চৌধুরী এবং মাতা হাসিনা চৌধুরী। তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং রাজশাহী কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ভর্তি হন। কিন্তু ১৯৫০ সালে ছাত্রাবস্থায় তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
আবদুল হালিম তাঁর চাকুরি জীবনে প্রথম পাঞ্জাব রেজিমেন্টের অ্যাডজুট্যান্ট ও কোয়ার্টার মাস্টার, চতুর্দশ ডিভিশনের জিওসি’র এডিসি এবং পূর্ব পাকিস্তানের ইউওটিসি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী থেকে স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ করেন। এর পরে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনে (ইপিআইডিসি) যোগ দেন। এ সময় কুষ্টিয়ায় চিনিকল স্থাপনের সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তাঁকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
আবদুল হালিম চৌধুরী ১৯৬৬ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানিকগঞ্জ বিপ্লবী পরিষদ গঠনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। মানিকগঞ্জে তাঁর নেতৃত্বে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ। মুজিবনগর সরকার তাঁকে ২২ থানার সমন্বয়ে গঠিত ঢাকা সদর ও গাজীপুরের এরিয়া কমান্ডার নিযুক্ত করে।
স্বাধীনতার পর পুনরায় তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ইউনাইটেড পিপলস পার্টি গঠিত হলে তিনি এর সভাপতি নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এবং আবদুস সাত্তার মন্ত্রিসভায় খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এরশাদ আমলে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালের ৭ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। সূত্র : বাংলাপিডিয়া।