আবদুল জববার খান

2

 

চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা। মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার মসদগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাজী মোহাম্মদ জমশেদ খান। স্কুলে পড়াকালেই তিনি মঞ্চ নাটকের সঙ্গে জড়িত হন। বেহুলা, বিল্বমঙ্গল, সতীতীর্থ, সমাজপতি, মাটির ঘর, সোহরাব রোস্তম প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করে স্বর্ণপদক লাভ করেন। কলকাতার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার প্রমথেশ বড়–য়ার শুক্তি ও মুক্তি নামক দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু অভিনয় করা হয় নি। আবদুল জববার খান আহসানউল­াহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল থেকে ১৯৪১ সালে ডিপ্লোমা নিয়ে চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৪৮-এ স্থায়ীভাবে ঢাকায় আসেন।
তিনি কমলাপুর ড্রামাটিক এ্যাসোসিয়েশন গঠন করে নাটক মঞ্চায়ন ও রচনায় মনোযোগ দেন। তিনি টিপু সুলতান, বঙ্গে বর্গী, ঈশা খাঁ, জাগলো দেশ, প্রতিজ্ঞা, মেয়ে ও ডাকাত নাটক মঞ্চস্থ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ডাকাত নাটক নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ তৈরি করেন। এ ছবিতে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন-এরপর তিনি যে ছবিগুলি পরিচালনা করেন সেগুলি হলো জোয়ার এলো (১৯৬২), নাচঘর (উর্দু ১৯৬৩), বাঁশরী (১৯৬৮), কাচ কাটা হীরা (১৯৭০) ও খেলারাম (১৯৭৩)। উজালা নামে একটি ছবিও তিনি প্রযোজনা করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর সরকারের চলচ্চিত্র বিভাগের প্রধান হিসেবে আবদুল জববার খান কাজ করেন। তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা পপুলার স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন। চলচ্চিত্রবিষয়ক বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। চলচ্চিত্র ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি বাচসাস পুরস্কার, এফডিসি রজত জয়ন্তী পদক, উত্তরণ পদক, হীরালাল সেন স্মৃতি পদক, বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সম্মাননা পদক, ফিল্ম আর্কাইভ সম্মাননা প্রতীক, রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি সম্মান পদক ইত্যাদি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ। ১৯৯৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আবদুল জববার খানের মৃত্যু হয়। তাঁর সম্মানার্থে এফডিসি-তে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আবদুল জববার খান পাঠাগার। সূত্র: বাংলাপিডিয়া