‘আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে ট্রাম্প আন্তরিক’

51

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তরিক বলে মনে করে আফগান তালেবান। শুক্রবার নিজেদের এমন মনোভাবের কথা জানিয়েছেন দলটির মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। কাতারে তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ছয় দিনের বৈঠক শেষে এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় তিনি বলেন, ১৭ বছরের সংঘাত বন্ধে আলোচনা সঠিক পথে এগুচ্ছে।
জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, উভয় পক্ষ একটি চুক্তির ব্যাপারে সমঝোতায় উপনীত হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে এবং আমেরিকানরা সততার সঙ্গে তা মেনে চললে আল্লাহ’র রহমতে আমরা আফগানিস্তান থেকে মার্কিন দখলদারিত্ব অবসানের ব্যাপারে আশাবাদী। তালেবান মুখপাত্র দাবি করেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে ইসলামি শাসন ব্যবস্থা কায়েমের পথ খুলে যাবে।
তালেবান এককভাবে ক্ষমতা দখল করতে চায় বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তাও নাকচ করে দিয়েছেন জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। তিনি বলেন, কাবুল সরকার সহযোগিতা করলে কোনও যুদ্ধ কিংবা দ্বন্দ্বের প্রয়োজন হবে না। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, আফগান তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তাছাড়া দেশটিতে আজীবন মার্কিন সামরিক উপস্থিতিও ধরে রাখতে চায় না ট্রাম্প প্রশাসন। তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ছাড়া মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ছাড়বে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, কাতারে আফগান তালেবানদের সঙ্গে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি ও সেনা প্রত্যাহারের সময় নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা আফগানিস্তানে স্থায়ী সামরিক উপস্থিতি চাই না। আমাদের লক্ষ্য হলো দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। শান্তি স্থাপনের পর গঠিত সরকারের সঙ্গে ভবিষ্যত অংশীদারিত্ব চাই। আমরা নিজেদের সুনাম প্রতিষ্ঠা করে আফগানিস্তান ছাড়বো। আলোচনায় অগ্রগতির উচ্চকিত প্রশংসা করেছেন তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষই। তবে সমঝোতার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আফগান তালেবান দেশটির সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসতে রাজি নয়।
কেননা, তালেবান মনে করে, মার্কিন সমর্থিত আফগান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের পুতুল মাত্র। ফলে মার্কিন অনুমোদন ছাড়া তারা কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে অপারগ। এমন সরকারের সঙ্গে বৈঠকের বদলে তাই তারা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেই আলোচনায় আগ্রহী।
২০০১ সালে মার্কিন অভিযানে উৎখাত হওয়ার পর সম্প্রতি আফগানিস্তানের প্রায় অর্ধেক ভূখন্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবানরা। ধারাবাহিক হামলার পাশাপাশি তারা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নেতৃত্বে আলোচনায়ও অংশ নিচ্ছে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের পরবর্তী আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র : আল জাজিরা, রয়টার্স।