আপিলে ছাড় পেয়ে খুশি করদাতারা

29

নিজস্ব প্রতিবেদক

গৃহকরে ছাড় পেয়ে হাসিমুখে ফুল হাতে নিয়ে ঘরে ফিরলেন চট্টগ্রামের গৃহকরদাতারা। গতকাল পুরাতন নগর ভবনের কে.বি. আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে এসেসমেন্ট রিভিউ বোর্ড এর শুনানিতে ১৪, ১৫, ২১, ২২, ২৩ এবং ২৮ নং ওয়ার্ডের করদাতারা গৃহকরের জন্য আপিল করে করছাড় পেয়ে হাসিমুখে ঘরে ফেরেন। এ সময় করদাতারা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে তাদের পাশে দাঁড়ানোয় ধন্যবাদ জানান।
রাজস্ব সার্কেল-৫ এর আয়োজনে গৃহকরের আপিল বোর্ডে আসা করদাতাদের ফুল দিয়ে বরণ করেন মেয়র। এরপর তিনি করদাতাদের বিভিন্ন অভিযোগ ও পরামর্শ গ্রহণ করেন।
গৃহকরে ছাড় পেয়ে আফতাব কনকর্ড টাওয়ার কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা অনেক বিভ্রান্তিকর কথা শুনে গৃহকর নিয়ে ভয়ে ছিলাম। পরে বিভিন্নজনের পরামর্শে সমিতির সবাই আপিল বোর্ডে আসলে এক লাখ ২০ হাজার টাকার ভ্যালুয়েশনকে মেয়র ৩০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর জনপ্রতিনিধিরা জনগণকে ভুলে যান। কিন্তু চট্টগ্রামের মেয়র এভাবে রিভিউ বোর্ড বসিয়ে জনগণের সুখ-দুঃখের কথা শুনে, করছাড় দিয়ে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। আমরাও কর দেয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রামের উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখতে পেরে খুশি।
এভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডের জনগণ মেয়রের কাছে আসেন। মেয়র জানতে চান, আপনি কত টাকা কর দিতে চান? কেউ বলেন, পাঁচশ টাকা বাড়ান, কেউ বলেন এক হাজার টাকা বাড়ান, আবার কেউ চান আগের পরিমাণেই কর দিতে। এরপর মেয়র করদাতা যা কর দিতে চাচ্ছেন সেই পরিমাণ টাকা এবং করদাতার দলিলাদি দেখে স্বল্প কর নির্ধারণ করে দেন। কাউকে আবার আগের পরিমাণ করই নির্ধারণ করে দেন মেয়র।
এ সময় চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি চট্টগ্রামের ছেলে। যে চট্টগ্রামের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র বানিয়েছে, তারাই গৃহকর নিয়ে ভোগান্তিতে পড়বে, এটা আমি হতে দিব না। গৃহকর নিয়ে যে কোন অভিযোগ সমাধানে আমি রিভিউ বোর্ড বসিয়েছি। কারো যদি গৃহকর বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আপনারা রিভিউ বোর্ডে আসুন এবং আমাকে জানান, আমি গৃহকর কমিয়ে দিব। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিগুলো জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। নাগরিকদের বলতে চাই, আপনারা গুজবে কান দিবেন না। আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে শুনানি করে কারো হোন্ডিং ট্যাক্স বেশি হলে তা সহনীয় করে দিচ্ছি। চট্টগ্রামের সন্তান হিসেবে আমি আপনাদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আপনাদের করের টাকা আপনাদের নগরীর উন্নয়নেই ব্যয় হবে। আমি পুরো চট্টগ্রাম শহরকে ঢেলে সাজাচ্ছি। আপনারা সহযোগিতা করলে আমি নান্দনিক চট্টগ্রাম গড়ব। বর্তমানে জলাবদ্ধতা ও মশার যে সমস্যা, তা সমাধানে কাজ করছি আমি। আপনারা বিশ্বাস রাখুন, চট্টগ্রাম বদলে যাবে।
এ সময় রিভিউ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মোহাম্মদ শহিদুল আলম, মোহাম্মদ সলিম উল্ল্যাহ, মোহাম্মদ জাবেদ, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আনজুমান আরা, চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ এবং জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ।