আপনি জেগে থাকেন বলেই বাংলাদেশ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে

53

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেওয়া অভিনন্দনপত্রে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সমৃদ্ধ দেশ নির্মাণ নিয়ে আপনি জেগে থাকেন বলে বাংলাদেশ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে।’
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় সমাবেশে এই অভিনন্দনপত্র শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন ওবায়দুল কাদের। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
অভিনন্দনপত্রে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ আমাদের গর্বের দিন। যে ঐতিহাসিক উদ্যানে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে মুক্তির শপথ নিয়েছিল বাংলার মানুষ। সেই প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানাই আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে। মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে আপনি কতবার গেয়েছেন জীবনের জয়গান, ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়েআপনি বারবার উড়িয়েছেন সৃষ্টির পতাকা, উত্তাল সাগরে প্রগাঢ় অন্ধকারে বাঙালির বাতিঘর শেখ হাসিনা আপনাকে অভিবাদন। সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশকে আপনি সেই উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যা
আজ বিশ্বের বিস্ময়। সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নে আপনি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সমৃদ্ধ দেশ নির্মাণের ব্রত নিয়ে আপনি জেগে থাকেন বলে বাংলাদেশ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন নিয়ে দেশমাতৃকাকে তার আপন সত্তায় ফিরিয়ে এনেছেন। আপনি বলেছিলেন এই মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে, আপনি এও বলেছিলেন এই মাটিতে বিচার হবে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের। কথা দিয়ে কথা রাখার রাজনৈতিক সংস্কৃতি আপনি ফিরিয়ে এনেছেন। আপনার আলোকসঞ্চারি দৃষ্টিসম্পন্ন সৎ, সাহসী নেতৃত্বের বিভায় উদ্ভাসিত আজ বাংলাদেশের জনগণ। জনগণ তাদের রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ দিয়েছেন, তারা স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশের পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অবিনাশী চিরভাস্বর।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনার প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের গুণে কেবল জলে-স্থলে নয়, অন্তরীক্ষেও আজ আমাদের গৌরবময় বিচরণ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে আজ আমরা অহংকার বোধ করি। মৃত্যুর মুখে পতিত ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে আপনি আজ ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ উপাধিতে ভূষিত। যতদূর প্রসারিত বঙ্গোপসাগর, তার চেয়েও বড় স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশকে আরও একটি নতুন শতাব্দীর উপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গৃহীত ডেল্টা প্ল্যান নতুন প্রজন্মকে আত্মবিশ্বাসী করেছে। আজ আপনি শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক নেতা নন, আপনার উচ্চতা আজ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বিশ্ব নেতৃত্বের কাতারে। বিশ্ব শান্তির জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাবিত আপনার শান্তি মডেল আগামী প্রজন্মের জন্য এই সত্যকে তুলে ধরে-‘তোমার জন্য এনেছি আমার আজন্ম সূর্যোদয়’।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘আপনার যোগ্য নেতৃত্বে আমরা আমাদের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বল দিন ফিরে পেয়েছি। হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহনকারী একটি জাতি যখন স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ, সেই মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গবন্ধু এনে দিয়েছিলেন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, একটি উজ্জ্বল পতাকা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল সেই গৌরবের কাল। একটি জাতি আতুড়ঘরে পথ হারিয়ে ফেলেছিল। আপনি সেই দেশ, সেই জাতিকে স্পর্ধিত সাহস, আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছেন। বিশ্বের বুকে আমরা আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছি। বাঙালির এই নবযাত্রায় সীমার মাঝে অসীমের আবাহনে, আপনার কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে প্রায় ১৭ কোটি প্রাণ সমস্বরে এই সত্যবাণী উচ্চারণ করবো-‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। আপনারই হাত ধরে আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং আমাদের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবো।’’
অভিনন্দনপত্র পাঠ শেষে সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন ওবায়দুল কাদের।