আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে মুশফিকের অবসর ঘোষণা

13

পূর্বদেশ অনলাইন
শনিবার এশিয়া কাপ ব্যর্থতার পর দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। ঠিক তার পর দিনই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তবে অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিসহ টেস্ট, ওয়ানডে চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অবসরের ঘোষণা দিতে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজটি বেছে নিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক। লিখেছেন, ‘সবাইকে সালাম এবং শুভেচ্ছা। দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের যাত্রায় আমি আপনাদের সবাইকে পাশে পেয়েছি। ভালো এবং খারাপ দুই সময়েই আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থন আমার প্রেরণা। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে আজ আমি অবসর নিচ্ছি।’ সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট থেকে অবসর নিলেও টেস্ট ও ওয়ানডে চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাবো। আশা করছি, এই দুই ফরম্যাটে আমি আরও কিছু নিয়ে আসতে পারবো দেশের জন্য। পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগসহ (বিপিএল) অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) সহ অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আমি আমার খেলা চালিয়ে যাবো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।’ অভিজ্ঞদের মধ্যে গত জুলাইয়ে তামিম ইকবাল এই ফরম্যাটকে বিদায় বলেছেন। টানা ব্যর্থতায় তার পদাঙ্ক অনুসরণ করলেন মুশফিক। এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বের দুটি ম্যাচেই হার দেখেছে বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ তুলতে না পারলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের প্রায় কাছেই পৌঁছে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত হেরেছে নিজেদের ভুলে। ৩৫ বছর বয়সী মুশফিক নিজেও নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই টুর্নামেন্টে। এক ম্যাচে ১ রান করেছেন তো আরেক ম্যাচে ৪। তাছাড়া লঙ্কানদের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কুশল মেন্ডিসের ক্যাচও ছেড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটেও রান পাচ্ছেন না। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তারপরও অভিজ্ঞতার কারণে দলে টিকে ছিলেন এতদিন। কিন্তু কোনও সুযোগই ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেননি। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাদ পড়ার পর মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কেবল একটি ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন। ওই ম্যাচে করেছিলেন ৩০ রান। এরপর এশিয়া কাপে দুই ম্যাচেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মুশফিকের ভুল যেন নিয়মিত ঘটনা। ২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের রানআউট মিস করায় ম্যাচটা হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। এমন বহু ঘটনা অহরহ আছে তার ক্যারিয়ারে। এশিয়া কাপে কুশল মেন্ডিসের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া এবং রিভিউ নিতে পারায় ক্রিকেট সমর্থকদেরও চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি দলের সদস্য মুশফিক বিদায়ের আগে খেলেছেন ১০২টি ম্যাচ। যা বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ৬ হাফসেঞ্চুরিতে ১১৫.০৩ স্ট্রাইকরেটে ১৯.৪৮ গড়ে ১ হাজার ৫০০ রান করে মুশফিক তার ক্যারিয়ার শেষ করলেন।