আনোয়ারায় মাদ্রাসার দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ

45

আনোয়ারা প্রতিনিধি

আনোয়ারার বারশত ইউনিয়নের দুধকুমড়া শরীফ মোল্লাদিঘীর পাড়া এলাকায় মদিনাতুল উলুম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা দখল নিয়ে দু’পক্ষের হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটায় বারশতের মোল্লা দিঘীর পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এতে উভয় পক্ষের ২৪ জন আহত হয়। ঘটনাস্থলে আনোয়ারা থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এ ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। আহতরা হলেন স্থানীয় এনামুল হক (৩৪), মোহাম্মদ ইদ্রিস (৪২), আলমগীর (৩৫), আবদুল গফুর (৫৭), হাসান (১৫), হিরা আকতার (৩৫), জোবায়ের (১৬), তাহেরা (৩০), রুমি (২৫), শাহ আলম (৫০), আবদুর রহমান (৬০), সোহেল (২৮), জাকির আহমেদ (৭০), জাফর ইকবাল (৪০), নুর হোসেন (২০), মোহাম্মদ ইকবাল (৪৮), মোহাম্মদ ইমন (২৫), ইউসুফ (২২), আবদুর রহিম (৫০), আলমগীর (৩৮), ফরহাদ (১৮), ইব্রাহিম (৪০), তাহের (৫০) রুবেল (২৮)। পরে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুধকুমড়া এলাকায় মদিনাতুল উলুম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা দখলকে কেন্দ্র করে কলিম উদ্দিন মাতব্বর গং ও একই এলাকার মধ্যমপাড়া সোসাইটির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে আসছে। একই এলাকার মেনাগাজির বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে প্রবাসী জাফর ইকবাল মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করার জন্য একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়। এসময় উভয় পক্ষ সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের ঘরেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
মাদ্রাসাটি দীর্ঘদিন ধরে কলিম উদ্দিন মোল্লার বাড়ি জামে মসজিদের হাজী মোহাম্মদ সৈয়দ নুরের অধীনে পরিচালিত হচ্ছিল। প্রবাসী জাফর ইকবাল দেড় মাস আগে সৌদিয়া থেকে দেশে ফিরে মাদ্রাসাটি তাদের বলে দাবি করেন। মাদ্রাসার নাম পাল্টে ঝুলিয়ে দেন নিজের নামের একটি সাইনবোর্ডও। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে নানান কথা কাটাকাটি শুরু হয়। পরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে গিয়ে রাঙ্গাদিয়া পুলিশ ফাঁড়ি ও আনোয়ারা থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন আনোয়ারা-বাঁশখালী সার্কেল এসপি হুমায়ূন কবির, আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম দিদারুল ইসলাম সিকদার, বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ূম শাহ্, থানার ওসি (তদন্ত) ওমর সাঈদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
স্থানীয় বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্ বলেন, মাদ্রাসা দখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন ও স্থানীয় সমাজের ব্যক্তিবর্গ নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন, ‘মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।