আধ্যাত্মিক জগতের কিংবদন্তি কুতুবদিয়ার মালেক শাহ্ রহ.

106

মুহাম্মদ কাউছার উদ্দীন আল-মালেকী

হজরতুল্লামা শাহ্ আবদুল মালেক আল-কুতুবী রহ. আত্মিক শুদ্ধ পুরুষ হিসেবে এক জীবন্ত কিংবদন্তীর নাম। দেশবরেণ্য এ মহান মনীষীর প্রকৃত নাম শাহ্ আবদুল মালেক। প্রসিদ্ধ নাম হচ্ছে, কুতুবদিয়ার মালেক শাহ্ বা শাহ্ সাহেব কেবলা। তিনি ১৯১১ সালের জুলাই মাসে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া দ্বীপের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মহীয়সী মায়ের নাম মরহুমা বদিউজ্জামাল এবং তাঁর শ্রদ্ধেয় আব্বাজানের নাম হাফেজ শামসুদ্দীন রহ.। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন খুব গাম্ভীর্য ও পরহেজগার প্রকৃতির। সাত বছর বয়স থেকেই তাহাজ্জুদ গুজার ছিলেন। গ্রামেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন চট্টগ্রামের দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসা থেকে। অতঃপর উচ্চ শিক্ষার্থে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। শিক্ষার প্রতিটি স্তরেই তিনি অসাধারণ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন।
জ্ঞানের জগতে তাঁর বিচরণ ছিলো অসাধারণ। তাঁর জ্ঞানের গভীরতা এতোই সূক্ষ¥ ও প্রখর ছিলো যে, কিতাবের বা বইয়ের কোন পৃষ্ঠায় কী লেখা আছে, তা হুবহু মুখস্থ বলে দিতে পারতেন! অর্জিত জ্ঞানের পাশাপাশি আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ জ্ঞান তথা ইলমে লাদুন্নীর অধিকারী ছিলেন। এ জ্ঞান অত্যন্ত দুর্লভ ও অদৃষ্টপূর্ব। তার ভাষাগত দক্ষতা ছিলো ছন্দময় ও সাবলীল। ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রে শব্দচয়ন, শব্দগঠন, শব্দশৈলী, বাচনভঙ্গি, মনোযোগ আকর্ষণের কৌশল ও বুঝানোর দক্ষতা ছিলো অনন্য। জ্ঞানের এমন কোনো শাখা-প্রশাখা নেই, যেখানে তাঁর অবাধ বিচরণ ও দক্ষতা ছিলো না। ইলমে তফসির, ইলমে হাদিস, ইলমে ফিকাহ্, ইলমে উসুল, ইলমে নাহু , ইলমে সরফ, ইলমে বালাগাত, ইলমে ফাসাহাত, ইলমে মানতেক, ইলমে ফারায়েজ, ইলমে শরিয়ত, ইলমে তরিকত, ইলমে হাকিকত, ইলমে মারেফাত ও ইলমে তাসাউফ ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর দক্ষতা ছিলো অতুলনীয়। আলেম সমাজের কাছে তিনি বাহরুল উলুম নামে সমধিক পরিচিত। দারুল উলুম আলীয়া মাদ্রাসায় অধ্যায়নকালে তাঁর দাদাপীর হযরত আলহাজ্ব মাওলানা হাফেজ হামেদ হাছান আলভী রহ. এর নির্দেশক্রমে কাদেরীয়া সিলসিলার পীর হযরত হাফেজ মুনির উদ্দীন নুরুল্লাহ্ রহ. এর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে খেলাফত প্রাপ্ত হন। খেলাফত প্রাপ্তির পর কয়েকজনকে তরিকতের সবক দিয়েছেন কিন্তু পরক্ষণেই তাঁদের পুনরায় সবক দেওয়া হতে বিরত থাকেন। তাঁর পরম ইচ্ছা ছিলো আল্লাহর প্রেম সাগরে ডুব দিয়ে সরাবে ইলাহী পান করা। এজন্য তিনি পীরতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে একাকীত্বকে বেঁচে নিয়েছিলেন রেয়াজতের জন্য। তিনি ১৯৪৯ সালে আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসূল দ. এর সান্নিধ্য লাভের চরম ও চূড়ান্ত দুরূহ পথ অতিক্রমে নিমগ্ন হন। অর্ধাহারে এমনকি অনাহারে বনে জঙ্গলে, পাহাড়পর্বতে, নদী-সমুদ্রে একাকী নির্জনে গভীর ধ্যানমগ্ন হয়ে সাধনা বা রেয়াজতের কঠিন পর্যায় অতিবাহিত করেন। অতঃপর ফানা ফিশ শায়খ, ফানা ফির রাসুল দ., ফানা ফিল্লাহ ও বাকা বিল্লাহ স্তরগুলো অতিক্রম করে বেলায়াতের সর্বোচ্চ স্তরে পদার্পণ করেন।
তিনি আল্লাহর সান্নিধ্যে থাকতেন প্রায়সময়। এজন্য সূফিবাদী কবি নজরুল বলেছেন, খোদার প্রেমের শরাব পিয়ে বেহুঁশ হয়ে রই পড়ে ছেড়ে মসজিদ আমার মুর্শিদ এল যে এই পথ ধরে। তিনি ভক্তবৃন্দদের নিয়ে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকতেন প্রায় সময়। জিকির চলাকালীন সময়ে তাঁর ঈমানি শক্তি কয়েকশ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে আল্লাহর প্রেমে বিভোর হয়ে পড়তেন। নূরের আলোতে উদ্ভাসিত হয়ে জ্যোতির্ময় হতো তাঁর সারা শরীর। তাঁর চেহারাতে নূরের রশ্মি ছিলো প্রখর। তাঁর চেহারার দিকে তাকালেই মানুষের অন্তরে আল্লাহর ভয় ও নবী করিম দ. এর প্রেম সৃষ্টি হতো। এজন্য রাসুল দ. বলেছেন, যাদের দেখলেই আল্লাহর কথা স্মরণ হয়, তারাই আল্লাহর অলি (ইবনে মাজাহ, ইবনে কাসির)। আল্লাহ তা’লা এ সম্পর্কে বলেন,‘আসল মুমিন তো তারাই যাদের নিকট আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে তাদের অন্তর প্রকম্পিত হয় এবং তাদের নিকট আল্লাহর আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হলে তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। আর তারা তাদের রবের উপরই ভরসা রাখে’ (আল-আনফাল ৮/২)। তাই মওলানা রুমী রহ. বলেছিলেন ‘আল্লাহর ওলীর সাথে এক মুহূর্তের সান্নিধ্য লাভ করা শত বৎসরের এবাদতের চাইতে উত্তম’। তিনি আরও বলেছেন, ‘যারা ওলী আল্লাহর সান্নিধ্য থেকে দূরে থাকবে তারা খোদার রহমত লাভের পথ থেকে দূরে সরে পড়বে’। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের দোয়া আল্লাহর দরবারে অফেরৎযোগ্য। এজন্য মওলানা রুমীর প্রসিদ্ধ উক্তি হচ্ছে, ‘ওলিগণ আল্লাহর নিকট হতে এমন ক্ষমতা লাভ করেন যে তাঁরা নিক্ষিপ্ত তীরকে মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন’।
পরবর্তীতে গোমরাহি জাতির অন্তরে ঈমানের চেরাগ জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য তাসাউফ চর্চার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ১৯৬০ সালে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানার ধুরুং গ্রামে কুতুব শরীফ দরবার প্রতিষ্ঠা করেন। কুতুব শরীফ দরবার প্রতিষ্ঠার পূর্ববর্তী সময়ে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা কুরবান আলী সওদাগরের বিল্ডিং এ ও মাঝিরঘাট শফিক আহমদ সওদাগরের বাড়ীতে আধ্যাত্মিক কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করেন। পাঞ্জেগানা নামাজে নিজেই ইমামতি করতেন। নামায শেষে হাজেরানে মসলিশ নিয়ে দ্বীনি বয়ান, ওয়াজ-নসিহত, জিকির-আজকার ও মুরাকাবা-মোশাহাদা পরিচালনা করতেন। তাঁর সান্নিধ্যে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে নামাজের পরে আল্লাহ আল্লাহ শব্দ দিয়ে উচ্চস্বরে জিকির করতেন। জিকির ছিলো তাঁর রূহের খোরাক। এ জিকিরে রুগ্ন কলব সতেজ হতো। এ জিকিরে আল্লাহর সন্ধান মিলতো। এ জিকিরে ইলাহীতে আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হতো। তাঁর জীবনযাপন, চলাফেরা ও আচার ব্যবহার ছিলো সুন্নাতে রাসূলে ভরপুর। তিনি সবসময় সুন্নাতে নববীর উপর ইস্তিকামাত ছিলেন। শরীয়াত থেকে কখনোও এক চুল পরিমানও বিচ্যুত হননি। তিনি বলতেন, ‘আমি রাসূল দ. এর কদম বকদম’। অর্থাৎ পরিপূর্ণ সুন্নাতে রাসূল দ. এর অনুস্মরণ ও অনুকরণ কারী। তিনি আরোও বলতেন, ‘আমি শরিয়তের আলেম, আমি নায়েবে রাসূল দ. (রাসুলের প্রতিনিধি) এবং আল্লাহর প্রকৃত অলী।’ সাবধান! আমার ব্যাপারে তোমাদের মন্তব্য বা ধারণা নিষ্প্রয়োজন। কারণ আমি তোমাদের ধারণা ও চিন্তাশক্তির উর্ধ্বে অবস্থান করি।
অসংখ্য ভক্ত নানান সমস্যা নিয়ে গভীর সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ কে উপেক্ষা করে ছুঁটে আসতেন তাঁর কাছে। তাঁর নূরানী চেহারা দেখার সাথে সাথেই হাজারো জন বুকচাপা কষ্টের কথা ভুলে গিয়ে অন্তরে অনাবিল প্রশান্তির ছোঁয়া অনুভব করতেন। তাঁর হৃদয়গ্রাহী সুমধুয়ী তেলাওয়াত, বক্তৃতা ও আরশ কাঁপানো জিকির মানুষের অন্তর কে এক সুষমায় শান্তিতে পরিপ্লাবিত করে দিতো। সম্পূর্ণ জীবন আর্ত মানবতার সেবায় উৎসর্গ করেছেন। দুস্থ, অসহায়, অভাবী ও ঋণগ্রস্ত মানুষকে দান করেছেন অকাতরে। কন্যাদায়গ্রস্ত অসহায় পিতার পাশে দাঁড়িয়ে মেয়ের বিবাহের ব্যবস্থা করেছেন। বাড়িঘর মেরামত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদান সহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর জীবনের মর্মবাণী ছিলো মানুষ মানুষের জন্য। তাঁর প্রতিটি কথা ছিলো কোরআন ও হাদিসের তথ্যময় জ্ঞানভাÐার। অনর্থক, অহেতুক ও বেফাঁস কোনো কথা বলতেন না তিনি। তিনি বলতেন, ‘আমি আল্লাহর হুকুম বা আদেশ ছাড়া কোনো কিছু করি না। আমাকে আল্লাহ তাআলা শেষ জামানার গুনাগার উম্মতে মুহাম্মদির পাহারাদার বা জিম্মাদার হিসেবে নবুয়তের খাদেম ও বেলায়েতের দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন।’ তিনি আরো বলতেন, ‘আমি নবী করিম দ.এর গাট্টি বহনকারী। একটি মুহূর্ত ও আমার ফুরসত নেই। আমি সর্বক্ষণ আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসুল দ.এর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত।’ পবিত্র দায়িত্ব পালনকালে, অনাহারে-অর্ধাহারে, অনিদ্রায় রেয়াজতের কঠিন স্তরগুলো অতিবাহিত করতেন। খাবার গ্রহণের ও সুযোগ হতো না তাঁর। তিনি বলতেন, ‘আমার খাবার গ্রহণের ও সময় নেই, আমি আল্লাহর কাজে ব্যস্ত। দ্বীন ও মিল্লাতের মূল সমস্যা যেখানে আমি সেখানেই কাজ করছি; যারা মূল সমস্যা উপলব্ধি করতে পারবে; তারাই আমাকে চিনতে পারবে।’ ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাঁর ভবিষ্যৎ বাণী দৃশ্যমান ও বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, ‘আরকান থেকে আফগান পর্যন্ত ইসলামী হুকুমত বা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হবে।’ ইতিমধ্যে আমেরিকার সৈন্যদল আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে।
তাঁর মানস দর্শন ছিলো, ভোগেই নয়, ত্যাগেই মুক্তি। আল্লাহর হুকুম পালনই ছিলো তাঁর সুখের আধার ও ঠিকানা। এ ছাড়া প্রচÐ শীতের কনকনে ঠাÐা বাতাস আর ঘন কুয়াশার শৈত্যপ্রবাহের সময় তিনি খালি গায়ে (সতর ঢেকে) ধ্যানমগ্ন হয়ে ঊর্ধ্ব জগতে হারিয়ে যেতেন। অথচ ওই পরিস্থিতে জনজীবন থাকে বিপর্যস্ত। অন্যদিকে গ্রীষ্মের গরমে যেখানে মানুষের জীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে, প্রাণীকুল অসহ্য গরম থেকে বাঁচতে পুকুরের নিচের শীতল পানিতে গা ভাসিয়ে থাকে। সেখানে তিনি গরম পানি দিয়ে গোসল করতেন! রাতে তাঁর চর্তুপাশে ৫০ ওয়াটের দশাধিক হ্যাজাক বাতি (চট্টগ্রামের ভাষায় মেন্টল লাইট) জ্বালিয়ে বসে থাকতেন। এ এক কঠিন রেয়াজত! প্রতিনিয়তই আত্মতৃপ্তি বা আত্মসন্তুষ্টির বিপরীত কাজ করতেন। এই জন্য হাদিসে নফসের সাথে যুদ্ধ করাকে জিহাদে আকবর বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন তিনি, ‘কুতুবদিয়া দ্বীপের চতুর্দিকে বড় বড় (মাদার ভেসেল) জাহাজ নোঙর করবে। বাংলাদেশ বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করবে। কুতুবদিয়া দ্বীপের চারিদিকে লাল-নীল রঙ্গের বাতি জ্বলবে। পায়ে হেঁটে কুতুবদিয়া চ্যানেল পার হওয়া যাবে। কুতুবদিয়া দ্বীপ গ্যাস, তেল ও স্বর্ণের উপর ভাসছে। সময় মত সন্ধান পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ এশিয়া মহাদেশের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র হবে।’ হজরত কেবলার আগাম ঘোষণা প্রায় ধীরে ধীরে দৃশ্যমান এবং বাস্তবায়িত হচ্ছে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বিশুদ্ধ আকীদা হচ্ছে, কারামাতুল আউলিয়া হাক্কুন। তাঁর জীবন ছিল অসংখ্য কারামতে সমৃদ্ধ। এমন কোন মুহূর্ত ছিল না তাঁর থেকে কারামাত সাবিত বা প্রকাশিত হয়নি। তাঁর কাছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ, সংসদ সদস্য, সরকারি বেসরকারি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, পীর-মাশায়েখ, আলেম ওলামা ও বিদেশি নাগরিক নানান সমস্যা ও দোয়া নেওয়ার জন্য স্মরণাপন্ন হতেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৫৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সহচর জহুর আহম্মদ চৌধুরী হজরত কেবলার সাক্ষাতে এসেছিলেন মাঝিরঘাট শফিক আহমদ সওদাগরের বাড়ীতে। হজরত কেবলা বলেছিলেন, ‘তোমার অন্তরে যাহা হইতাছে তাহার জন্য দোয়া করিলাম। তোমাকে রাজা বানিয়ে দিলাম।’ এ ছাড়া তাঁর পবিত্র দরবারে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কে সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজ না করার জন্য প্রতিশ্রæতিবদ্ধ করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেছিলেন, হজরত আপনার কী চাওয়া-পাওয়া আছে? হজরত কেবলা বলেছিলেন, ‘আমার ইচ্ছা আল্লাহ পূরণ করবেন।’ তোমার কী প্রয়োজন বল? এরশাদ জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। বাবাজান প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন, আল্লাহর পক্ষ হতে তোমার জীবন রক্ষিত হবে। দেখা গেলো ২০১৯ সালে তাঁর মৃত্যু হয়েছিলো স্বাভাবিকভাবেই।
হজরতুল্লামা শাহ্ আবদুল মালেক মুহিউদ্দীন আজমী রহ. ছিলেন এ যুগের শ্রেষ্ঠ সন্তান। ২০০০ সালের ১৯ ই ফেব্রæয়ারি মাঝিরঘাটস্থ মরহুম আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম সেরু মিয়ার বাসভবনে অসংখ্য অগণিত ভক্ত অনুরক্তদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে তিনি আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাঁর অনুস্মরণ ও অনুকরণ বাস্তব জীবনে সফলতা বয়ে আনবে। মানুষ কর্মে ও সৃজনে বেঁচে থাকে চিরকাল। তাঁর আধ্যাত্মিক অলৌকিক কর্মযজ্ঞে বেঁচে আছেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে।
লেখক : প্রাবন্ধিক