আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আ.লীগের দু’ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

12

মিরসরাই প্রতিনিধি

মিরসরাইয়ে ১০ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলি ও হামলায় আহত হয়েছেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের ১৫ নেতাকর্মী। গতকাল রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার জোরারগঞ্জ বিজয় মেলার মাঠে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে ৬টি মোটরসাইকেল। হামলায় আহতরা হলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাউছার আহমেদ আরিফ, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন ইমন, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহেদ বিন কামাল অনিক, সাধারণ সম্পাদক সেফায়েত হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী আবদুর রহমান, সাইফ উদ্দিন রিফাত, রাহুল বড়ুয়া, তারেক হোসেন, মিরাজ আকবর, সরোয়ার হোসেন, ইমতিয়াজ ও যুবলীগ কর্মী রিয়াজ উদ্দিন। বাকি ৩ জনের নাম জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে কাউছার আহমেদ আরিফ ও শাহেদ বিন কামাল অনিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এদের কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতরা সবাই জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। জানা গেছে, গত ২২ ডিসেম্বর থেকে জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১০ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর রাতে শেষ হয়। শেষ দিন মেলা চলে রবিবার ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। মেলা শেষে এলাকাবাসী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হঠাৎ জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাঈন উদ্দিন টিটুর নেতৃত্বে তার অর্ধশতাধিক অনুসারী হামলা চালায়। হামলাকারীরা গুলি, ককটেল ছোড়ে ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। এসময় ৬টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। হামলায় আহত হন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১৫ নেতাকর্মী। পিটিয়ে জখম ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয় জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহেদ বিন কামাল অনিকের। এ ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এলাকাজুড়ে।
এদিকে হামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাঈন উদ্দিন টিটুকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামল দেওয়ানজী, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মাস্টার ও মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হোসেন সাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মাঈন উদ্দিন টিটুর ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম মাস্টার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় আগত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর গুলিবর্ষণ কারা করেছে সেটি সবাই দেখেছে। যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহব্বান জানাচ্ছি।
জোরারগঞ্জ বিজয়মেলা উদযাপন পরিষদের কো-চেয়ারম্যান ও জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্যামল দেওয়ানজী বলেন, এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা প্রত্যেকেই সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসী ছাড়া এই ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব না।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে এ ঘটনায় এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।