আদালতে আসামিদের ‘চিনতে পারেননি’ বাদী ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ে বরখাস্ত ৬ পুলিশ খালাস

25

নিজস্ব প্রতিবেদক
আনোয়ারা উপজেলায় দুই বছর আগে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে এক ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া ছয় পুলিশ সদস্যকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। ছয় পুলিশ সদস্য হলেন আবদুল নবী (২৭), এসকান্দর হোসেন (২৬), মনিরুল ইসলাম (২৫), শাকিল খান (২৬), মো. মাসুদ (২৬) এবং মোরশেদ বিল্লাহ (২৫)।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিন আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বলেছেন, মামলার বাদীসহ তার পক্ষে সাক্ষীদের কেউই সাক্ষ্যে আসামিদের শনাক্ত করতে না পারায় আদালত তাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, তদন্তের সময় বাদীসহ সাক্ষীরা আসামিদের শনাক্ত করে জবানবন্দী দিয়েছিলেন।
খালাস পাওয়া সবাই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) স্পেশাল আর্মড ফোর্স (এসএএফ) শাখায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। কনস্টেবল মোরশেদ বিল্লাহ ঘটনার সময় সিএমপির তৎকালীন কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ঘটনার পর তাদের বরখাস্ত করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অতিরিক্ত জেলা পিপি রবিউল আলম জানান, ‘প্রথমে বাদী যে মামলা করেছিলেন সেখানে আসামি হিসেবে পাঁচজন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীর কথা বলা হয়েছিল। পরে তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়ে পুলিশ ছয় কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু এ মামলার ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদী ও তার পক্ষের যেসব সাক্ষী আছেন, তারা কেউই আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে আসামিদের চিনতে পারেননি। অধিকাংশ সাক্ষীই আসামিদের শনাক্ত করতে পারেননি। এর ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি’। এর আগে ২০২১ সালের ৩ ফেব্রæয়ারি রাত ২ টার দিকে আনোয়ারা থানার পূর্ব বৈরাগ গ্রামের তালুকদার বাড়ির বাসিন্দা হাজী আবদুল হকের ছেলে আব্দুল মান্নানকে তার বাড়ি থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ আনা হয় ওই ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখার পর ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান আব্দুল মান্নান। এ ঘটনার তিনদিন পর ৭ ফেব্রæয়ারি আনোয়ারা থানায় মামলা করেন আবদুল মান্নান। প্রাথমিক তদন্তে ওই ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর তাদেরকে গ্রেপ্তার এবং চাকরি থেকে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি সেসময় গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন সিএমপির তৎকালীন জনসংযোগ কর্মকর্তা ও নগর ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আবদুর রউফ।