আতাউর রহমান খান কায়সারের স্মরণসভায় বক্তারা রাজনীতির আন্দোলনে চট্টগ্রামের নেতারা কখনো পিছপা হননি

17

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেছেন, ১৯৮০ সালে জিয়ার আমলে মিছিল করেছি। সেই মিছিলে আমার উপর আক্রমণ করা হয়েছিল। আমার রগ কেটে দেয়া হয়েছিল। সেদিন নিশ্চিত মৃত্যু থেকে ফিরেছিলাম। আমার যাওয়ার কথা ছিল আগে। কিন্তু যারা রাজপথে ছিল তারা আগে চলে গেছে। চট্টগ্রামের রাজনীতির আন্দোলন সংগ্রামে মান্নান ভাই, মহিউদ্দিন, বাবু ও কায়সার ভাইয়েরা কখনো পিছপা হননি। জিয়া, এরশাদ ও খালেদার আমলে এই নেতাদের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন করেছিলাম।
গতকাল রীমা কমিউনিটি সেন্টারে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগ এ স্মরণসভার আয়োজন করে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সাথে আলাপ করে আন্দোলনের পরিকল্পনা করতেন কায়সার ভাই। মহিউদ্দিনের বাসায় বসে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিতাম। আর এই আন্দোলন করতে গিয়ে রাজপথে মার খেয়েছি। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এমন উন্নয়ন চেয়েছিলেন কায়সার ভাই। আমি মনে করি চট্টগ্রামের অভূতপূর্ব উন্নয়নে কায়সার ভাইয়ের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে।
তিনি বলেন, বিরোধিতার খাতিরে এদেশের কিছু রাজনৈতিক দল মিথ্যাচার করছে। তারা ক্ষমতায় থাকতে দেশের জন্য কিছু করতে পারে নাই। অথচ তারাই আমাদের সমালোচক। মির্জা ফখরুল প্রতিদিনই মিথ্যা কথা বলছেন। তবে এই লোকটার জন্য আমার মায়া হয়। উনার মধ্যে শিক্ষার আলো আছে। বেগম জিয়ার মধ্যে সেই আলো নেই। শিক্ষার আলো নেই বলেই বেগম জিয়া জাতির পিতার মৃত্যুবার্ষিকীর দিন জন্মদিন পালন করেন। অথচ উনার আছে পাঁচটি জন্মদিন। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নাশকতায় বিশ্বাস করে। আমরা জানি রাজনৈতিক আন্দোলনে হরতাল, অবরোধ হয়। কিন্তু গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা হতো না। অথচ ২০১৩-১৪ সালে তাই হয়েছে। বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে পৈশাচিক নাশকতা চালিয়েছে। মির্জা ফখরুলের মতো ব্যক্তি পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ হত্যার নির্দেশ দিতে পারেন না। কিন্তু খালেদা ও তার পুত্রকে খুশী করতে তাই করেছেন। যে কারণে এদেশের মানুষ তাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। মানুষকে যারা পুড়িয়ে মারে তাদেরকে ক্ষমতায় আনবে না জনগণ।
প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, কায়সার ভাইয়ের মাঝে অহংকার অহমিকা দেখিনি। রাজনৈতিক কর্মীর প্রতি ভালোবাসা ও কমিটমেন্ট ছিল অতুলনীয়। আমরা যারা নেতা হই, তৃণমূলের নেতাদের কর্মী হই তখন শিষ্টাচার ভুলে যাই। অনেক সময় নেতারা কর্মীদের সালামও নিতে চান না। অথচ সুন্দরী নারীদের সাথে দাঁত কেলিয়ে সেলফি তুলি। এটি রাজনৈতিক ধারার বিপর্যয়। সেগুলো কায়সার ভাইদের ছিলো না। বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন নাই তিনি। ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনাকে কারাগারে রেখে মাইনাস ফর্মূলা বাস্তবায়নের পথে বাধা হয়েছিলেন তিনি। এ ফর্মূলার বাস্তবায়ন ভÐুল করতে সুদাসদনে বৈঠক করে নেত্রীর পাশে ছিলেন। তিনি নেতা, নীতি, মূল্যবোধ ও সাহসিক নেতা হিসেবে বেঁচে থাকবেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আতাউর রহমান খান কায়সারের কন্যা আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল কালাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু প্রমুখ।