আজ সরস্বতী পূজা

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

বাগদেবী সরস্বতী পূজা আজ শনিবার। কেউ বলেন বাণী অর্চনা। দেবীর আরাধনায় মত্ত হিন্দু সম্প্রদায়। ভোরবেলা থেকেই মন্ডপে শুরু হয়েছে পূজার তোড়জোর। সকাল থেকেই ঘরে ঘরে উলুধ্বনি, শাঁকে ফুঁ। কলম দেওয়া দোয়াতের ওপর কুল। আজ আবার খুদেদের হাতে খড়িরও দিন। পূজা শেষে দেওয়া হবে পুষ্পাঞ্জলি, ফলপ্রসাদ ও ভোগ বিতরণ। ধূপের গন্ধে ঘর ও মন্ডপে ধর্মীয় আমেজ।
বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী ধর্মীয় বিধান অনুসারে সাদা রাজহাঁসে চড়ে পৃথিবীতে আসেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম এই ধর্মীয় উৎসবে পঞ্চমী তিথিতে জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন অগণিত ভক্ত। দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজার পর সন্ধ্যা আরতির আয়োজন করা হয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে অনুষ্ঠানমালায় টানা হয়েছে লাগাম। মন্ডপে ভিড় না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন আয়োজকরা। পাশাপাশি পুষ্পাঞ্জলি গ্রহণেচ্ছুদের মাস্ক পরিধান করে প্রতিমা দর্শনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এই পূজায় বেশ কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। যেমন অভ্র-আবির, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম, যবের শিষ, বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল। লোকাচার অনুসারে ছাত্র-ছাত্রীরা পূজার আগে কুল (বড়ই) ভক্ষণ করে না। পরদিন সকালে চিড়া ও দই মেশানো দধিকর্মা নিবেদন করেন অনেকে। কোনও কোনও পরিবারে এদিন অরন্ধন পালন ও গোটা-সেদ্ধ খাওয়ার প্রথাও রয়েছে।
সিভাসু, ইউএসটিসি, চমেক, চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, সরকারি কমার্স কলেজ, কলেজিয়েট স্কুলে এবং নগরের জে এম সেন হল প্রাঙ্গণে বিভিন্ন বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে প্রতি বছর পৃথকভাবে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও সরস্বতী পূজা হয়। তবে এ বছর আড়ম্বরে পূজা হচ্ছে না সেই করোনার কারণে।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু সম্প্রদায়কে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূ-খন্ডে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পালন করে আসছেন। এখন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা সব ধর্মের উৎসব সকলে মিলে আনন্দ সহকারে উদ্যাপন করি। কাউকে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দিবো না। আগামি দিনে সকল ধর্মের পারস্পরিক সম্প্রীতি আরো সুদৃঢ় হবে।’