আজ বলীখেলার ১১৩তম আসর

44

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাপক ক্ষোভ, নানান অনিশ্চয়তা কাটিয়ে আজ বসছে ১১৩তম ঐতিহ্যবাহী লালদীঘির আব্দুল জব্বারের বলী খেলা। তবে এবারের বলীখেলা লালদীঘি মাঠে নয়, হবে লালদীঘি মাঠের পাশে জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে খোলা জায়গায়। সেখানে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী মঞ্চ। আর সেই মঞ্চে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়বেন শতাধিক বলী। খেলা শুরু হবে বিকেল তিনটায়।
বরাবরের মত জব্বারের বলীখেলার ১১৩তম আসরেও রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মালেক। এ বিষয়ে আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সভাপতি ও আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী গতকাল রবিবার রাতে পূর্বদেশকে বলেন, ‘সোমবার বিকাল ৩ টায় আবদুল জব্বারের বলী খেলা শুরু হয়ে চলবে ৫টা পর্যন্ত। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে খেলায় অংশ নিতে শতাধিক বলী নাম জমা দিয়েছেন। চলে এসেছেন গতবারের রানারআপ চকরিয়ার জীবন বলীও। তাদের মধ্যে থেকে ৩০ থেকে ৩৫ জন বলীকে লালদীঘির পাড়স্থ কমিটির নিজস্ব রেস্ট হাউসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এবার বলী খেলা লালদিঘী মাঠে নয়, হবে জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে খোলা জায়গায়। বলী খেলার জন্য আমরা সর্বোচ্চ ১৫০ জন বলীর নাম তালিকাভুক্ত করব। এর মধ্যে বাছাই করে ১০০ জনকে খেলতে দেব। মানে ৫০ রাউন্ড খেলা হবে।
এবার বলী খেলায় ক্রেস্টের পাশাপাশি খেলার প্রথম পুরস্কার থাকছে ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া ২য় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, ৩য় পুরস্কার ৬ হাজার টাকা এবং ৪র্থ পুরস্কার দেয়া হবে ৫ হাজার টাকা।
এদিকে জব্বারের বলী খেলাকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার সকাল থেকে লালদীঘির আশেপাশের এলাকাজুড়ে বসেছে বৈশাখী মেলা। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ী নানা ধরনের গৃহস্থালি ও লোকজ পণ্য নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের সামনে থেকে টেরিবাজার, সোনালী ব্যাংক মোড় হয়ে লালদিঘী ময়দান হয়ে কোতোয়ালি থানা এলাকা পর্যন্ত মেলা বসেছে। কোতোয়ালী থানা সামনে থেকে লালদীঘির পাড়, সিনেমা প্যালেস ও কে সি দে রোড, জেল রোড, আন্দরকিল্লা এলাকায় প্রতিবারের মত এবারও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মাটির তৈজসপত্র, খেলনা আর বাঁশ-বেতসহ হরেক রকমের পণ্য নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। এসেছে মুড়ি মুড়কি, গাছের চারা, ফুল ঝাড়ু ইত্যাদি পণ্য।
অন্যান্যবারের মত এবারও মেলায় মিলবে মাটির তৈরি তৈজসপত্র, খেলনা, ফুলদানি ও পুতুল, বেত-কাঠ ও বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র, হাতপাখা, মাছ ধরার পলো, ডালা, কুলো, গাছের চারা, মুড়ি মুড়কি, পাটি আর নানা রকম দেশি ফলসহ নিত্য ব্যবহারের জিনিসপত্র।
প্রসঙ্গত, ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার ধণাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে এই বলী খেলার সূচনা করেন। তার মৃত্যুর পর এ প্রতিযোগিতা জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। এ খেলায় অংশগ্রহণকারীদের বলা হয় ‘বলী’। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ‘কুস্তি’ বলী খেলা নামে পরিচিত।