আজও মনে পড়ে

62

তোর কি মনে আছে
স্কুলটা ছিলো ভাড়াউড়ায় বড়োপুলের কাছে।
যাসনি তো সব ভুলে?
পঁচাত্তুরে ভরতি হলাম কৃষ্ণ স্যারের স্কুলে।
দেশে তখন অস্থিরতা, তোর কি মনে পড়ে?
স্যার পড়াতেন চৌচালা এক বাঁশের বেড়া ঘরে।
চইত-বোশেখের মাসে
ফরসা আকাশ হঠাৎ যদি কালো করে আসে
তখন, বাজতো ছুটির ঘণ্টা।
কী আনন্দে উঠতো নেচে কোমলকচি মনটা!
হল্লা করে ছুটে যেতাম সবার দেখাদেখি
মনের ফ্রেমে সেসব ছবি আজও আছে একই।
পঁচিশ পয়সার মুড়ি এবং তিরিশ পয়সার গজা
ফেরার পথে ওসব খাবার কী যে ছিলো মজা!

স্কুলের শেষে সময় যেতো ডাংগুলি- মারবেলে
কাঁচের গুড়োয় মাঞ্জা দিতিস ঘুড়ির সময় এলে।

শালিক পাখি ধরতো তাপু রেমের আঠার কলে
তাপু খুবই দুষ্টু ছিলো শক্তি-সাহস-বলে
সেনবাড়ির ওই পুকুরপাড়ের খেজুর রসের হাড়ি
নিয়ে তাপু ভোর না-হতেই নামতো তাড়াতাড়ি
সেই হাড়িতে ছেলেরা সব হুমড়ি খেয়ে পড়ে
স্কুলে যাবার পথেই সাবাড় করতো মজা করে।
ঝুম বরষায় ফোপা দিতাম আমরা খেতের আলে
টেংরা-পুঁটি আটকাতো বেশ বাঁশের বোনা জালে
গৌরি বিকাশ মিষ্টু তাপু বাতেন সিরাজ মিলে
কলার ভেলায় কতো গেছি শাপলাতোলা বিলে।
চৈত্রশেষে বসতো যখন চড়কসাধুর মেলা
কতো মেলায় কেটে গেলো দস্যি ছেলেবেলা।

আরও কতো কথা ছিলো এটুকু থাক আজ
পরে আবার সময় করে খুলবো স্মৃতির ভাজ।