আগে আসা রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে নিতে বলল বাংলাদেশ

6

পূর্বদেশ ডেস্ক
তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের অংশ হিসাবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি অংশকে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন আটকে থাকার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস।
যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও প্রত্যাবাসনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, ২০১৭ সালের আগে যেসব রোহিঙ্গা এসেছে, তাদের আগে নিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয় এই মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সফরে কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
বৈঠকের পর নয়েস সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘায়িত হওয়া রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হচ্ছে তাদেরকে নিরাপদে, স্বেচ্ছা ও সম্মানজনকভাবে নিজ দেশে ফেরানো এবং তা হতে হবে টেকসই। এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও যুক্তরাষ্ট্র সবাই চায়। যখন সেই সমাধান হচ্ছে না, তখন অন্য সমাধান প্রয়োজন। বিশেষ করে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ তাদের জন্য বাড়তি সমাধান দরকার। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের চিহ্নিত করার জন্য ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করতে পেরে এবং তাদেরকে তৃতীয় দেশে স্থানান্তর চেষ্টা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।
জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয় এই মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীদের পুনর্বাসন বাড়ানো বাইডেন প্রশাসনের অগ্রাধিকার। অন্য যেসব সরকার ও অংশদীর রাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করছি, এটা তাদেরও অগ্রাধিকার। দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি উদ্বুদ্ধ করতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাব। কাজ করব, যাতে নিরাপদে নিজ দেশে ফেরার আগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য অন্য সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়’।
নয়েসের বক্তব্যের কিছু সময় পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘প্রত্যাবাসনই হচ্ছে সমাধান। (রোহিঙ্গাদের) একটা অংশ যাবে। এগুলো ওদের একটা দায়বদ্ধতা মেটানোর জন্য। রোহিঙ্গা কেবল আমাদের মাথাব্যথা না, সবার মাথাব্যথা, বিশ্ব নেতাদের মাথাব্যথা। তারা দেখাবে যে আমরা কিছু রোহিঙ্গাকে সাহায্য করেছি’।
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের একটি অংশ সে দেশে আশ্রয় দিতে চাইলেও সেই সংখ্যাটি কত, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। খবর বিডিনিউজের
মোমেন বলেন, ‘অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, আমেরিকা এবং অনেকগুলো বন্ধুপ্রতীম দেশ ওদেরকে মানবিক সাহায্য করেছে। আমাদের দেয় না, ওদের দেয়। এটা ঠিক আছে। এখন কিছু রোহিঙ্গাকে নিয়ে তার দেশের লোকদের বলতে পারবে, আমরা তো নিয়েছি কয়েকজনকে। বলবে না কতজন’।