যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নতুন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একে ‘রুশবিরোধী মানসিকতাজনিত আকস্মিক আক্রমণের প্রমাণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে তারা। মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ারও অঙ্গীকার করেছে ক্রেমলিন। ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারভ বলেছেন, ‘আগুন নিয়ে খেলবেন না।’ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনিকে বিষপ্রয়োগে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মঙ্গলবার নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাসায়নিক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত রাশিয়ার সাত জন সিনিয়র কর্মকর্তা এবং ১৪টি কোম্পানির ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মস্কোর বিরুদ্ধে জো বাইডেন প্রশাসনের এটিই প্রথম কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারভ বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ অব্যাহত রাখার একটি অজুহাত মাত্র। আমরা এটা বরদাস্ত করব না। আমরা পারস্পরিক নীতির ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া জানাব।’ জাখারভ আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞায় তাদের কিছু যায় আসে না। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার প্রতি তার দেশ আগেও দৃষ্টিপাত করেনি, এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্র চাইলে সংলাপের পথ খোলা আছে। নাভালনির ঘটনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি আগেই আঁচ করতে পেরেছিল মস্কো। সোমবার এ নিয়ে কথা বলেন রাশিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি বলেন, নাভালনিকে কেন্দ্র করে যদি আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাহলে রুশ সরকারও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে তাদের পদক্ষেপের ধরনের ওপর।
উল্লেখ্য, পশ্চিমারা প্রমাণ পেয়েছে, নার্ভ গ্যাস প্রয়োগ করে বিরোধী নেতা নাভালনিকে হত্যার চেষ্টা করেছিল রুশ কর্তৃপক্ষ। জার্মানিতে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশে ফেরামাত্র বিমানবন্দরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পাঠিয়ে দেওয়া হয় কারাগারে। নাভালনির মুক্তির দাবিতে রাজপথে নামে সমর্থকরা। এর মধ্যেই তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদন্ড দেয় আদালত। এর প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ থেকে হাজার হাজার মানুষকে আটক করে সরকারি বাহিনীর সদস্যরা।