‘আগাম সতর্কতায় অবজ্ঞার ফলেই ভারতে করোনার ভয়াবহতা’

16

দুনিয়াজুড়ে তান্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস​। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ভয়াবহ পরিস্থতি তৈরি হয় ভারতে। অথচ গত মার্চেই দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের আসন্ন বিপদ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন প্রবীণ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সুভাষ সালুন। জনস্বাস্থ্য নিয়ে ৩০ বছর ধরে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করা সুভাষ জানিয়েছিলেন, আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। তখন তার কথা আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এখন সেই অবহেলার মূল্য চুকাতে হচ্ছে পুরো দেশকে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়ে।
করোনাভাইরাসটির একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়ার পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন সুভাষ। তিনি বলেছিলেন, এরইমধ্যে একটি জেলায় এই ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার জন্য জরুরিভিত্তিতে বিষয়টির প্রতি নজর দেওয়া দরকার। ডা. সুভাষ সালুনের সেই পরামর্শে গুরুত্ব না দিয়ে ভারত শুধু নিজেই বিপদের মধ্যে পড়েনি; বরং করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে ৪০টিরও বেশি দেশে। উচ্চ সংক্রমণ হার বিবেচনায় গত মে মাসে এটিকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা ডা. সুভাষ সালুন জানান, মার্চের গোড়ার দিকেই তিনি ভারতের ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির করোনাভাইরাস বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা ভি. কে. পালকেও ফোনে বিষয়টি নিয়ে অবহিত করেন তিনি। কথা বলেন ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিডিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি)-এর প্রধান সুজিত কুমার সিং-এর সঙ্গেও। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস জানিয়েছে, ভারতে এখন পর্যন্ত দুই কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৮৮১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশটিতে করোনায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ছয় গুণ বেশি।