আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা

37

এম এ হোসাইন

হিন্দু মন্দির, পূজা মন্ডপ ও বাড়ি-ঘরে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় হওয়া মামলায় আগাম জামিনের দৌড়ে রয়েছেন বিএনপি নেতারা। কয়েকজন নেতা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন, এমন তথ্যের পর অন্যরাও আগাম জামিনের চেষ্টায় আছেন। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় জামিন স্থগিতের পাশাপাশি আসামিরদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিচ্ছেন আদালত। আত্মসমর্পন করলে জামিন না হওয়ার ভয়েও আছেন বিএনপি নেতারা।
পূজা মন্ডপে হামলার ঘটনায় চট্টগ্রামে মোট ৬টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামাসহ দুই হাজারের অধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। কোতোয়ালী থানায় ৮৪ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৫০০ ব্যক্তিকে। হাটহাজারী থানার মামলায় ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাঁশখালীতে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ তিন মামলায় ৬২ জন এবং অজ্ঞাত আরও ৯৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সাতকানিয়ায় ৪২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা দেখানো হয়েছে আরও ২০০-৩০০জনকে। আসামিরা সবাই বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে পূজামন্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হাওয়া মামলার এজাহারে অন্তত শতাধিক বিএনপি নেতার নাম রয়েছে। ইতিমধ্যে হাইকোর্ট থেকে অনেক বিএনপি নেতা আগাম জামিন নিয়েছেন। বাকিরাও আগাম জামিনের চেষ্টায় রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, মন্দিরে হামলা মামলায় কিছু কিছু জামিন হচ্ছে। এগুলো সরকারের ইচ্ছাতে হয়েছে। আসলে চট্টগ্রামে মামলাগুলোর কেউ ঘটনায় জড়িত নয়। যারা মামলা করেছে তারাও সেগুলো জানে। জামিনের ক্ষেত্রে একটা সেন্টিমেন্ট কাজ করে। কয়েকজনের আগাম জামিন হয়েছে জেনে বাকিরাও জামিনের চেষ্টায় আছেন।
মন্দিরে হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে একাধিক ফৌজদারি মামলা দায়েরের পাশাপাশি গ্রেপ্তারও হয়েছেন অনেকে। তাদের নেওয়া হয়েছে রিমান্ডেও। আবার মামলার অনেক আসামি আগাম জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন। অনেকে জামিনও পেয়েছেন। কিন্তু সরকার এসব জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। জামিন স্থগিত চেয়ে তড়িৎ গতিতে আবেদন করছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় জামিন স্থগিতের পাশাপাশি আসামিরদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিচ্ছেন আদালত।
দুর্গাপূজায় কুমিল্লার নানুয়াদীঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামন্ডপে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী, বাঁশখালী, কোতোয়ালী ছাড়াও কয়েকটি স্থানে এমন হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় জড়িতদের নাম উল্লেখ করা হলেও অধিকাংশকে দেখানো হয়েছে অজ্ঞাত হিসাবে। যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।