আগামী বছর থেকে এক মেধা তালিকায় ভর্তি

29

ঢাকা প্রতিনিধি

সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী বছর থেকে একটিমাত্র ভর্তি পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। তিনি বলেন, জাতীয় মেধা তালিকা হবে। সেই তালিকা অনুসারে ভর্তি হবে। গতকাল বুধবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান মেলা উদ্বোধনের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয়, একই আদলে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আগামী বছর মাত্র একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একটি ভর্তি পরীক্ষা হবে। শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একটি জাতীয় মেধাতালিকা করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এর ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি কমবে, ব্যয়ও কমবে।
নতুন কারিকুলাম সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা মুখস্থ নির্ভরতা কমিয়ে হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। ফলে শিক্ষার্থীরা অর্জিত জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারবে।
দিপু মনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং একেবারেই নিষিদ্ধ। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে র‌্যাগিং বন্ধের চেষ্টা করছি। র‌্যাগিং অন্যান্য সামাজিক সমস্যার মতোই একটি সমস্যা। শুধুমাত্র আইন করে কিংবা শিক্ষকদের দিয়ে হবে না, র‌্যাগিং বন্ধে মানসিকতা ও একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আইন থাকা সত্তে¡ও বিশ্বের অনেক জায়গায় এখনও র‌্যাগিং হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। এটি কারও কাম্য নয়। এটি বন্ধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, এতে গণমাধ্যমেরও ভূমিকা রয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রমে হয়রানি ও ব্যয় কমেছে। তবে নতুন কোন সিস্টেম চালু করতে গেলে সেখানে কিছু সমস্যা হতে পারে, এ ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা হচ্ছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলা উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্।
চলতি মাসেই গুচ্ছভর্তি কার্যক্রম
এদিকে তৃতীয়বারের মতো শুরু হতে যাচ্ছে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি কার্যক্রম। চলতি মাসেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। শুরুতে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকতে দ্বিমত পোষণ করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলোচনায় জোরালো কোনো আপত্তি তোলেনি। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সম্মিলিত সিদ্ধান্তে এ মাসেই শুরু হচ্ছে গুচ্ছভর্তি কার্যক্রম।
ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহŸায়ক ও জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এ মাসেই গুচ্ছভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। জুলাইয়ে শুরু হবে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস। সব ত্রæটি চিহ্নিত করে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম চলবে। প্রয়োজনে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আরও উন্নয়ন করা হবে।এদিকে নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রাখতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এ পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার দাবি জানিয়েছে। জবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, মাত্র কয়েকটা আসন পূরণের জন্য দশের বেশি মেধা তালিকা দেওয়া লাগে। এতে মেধাবী শিক্ষার্থী হারাচ্ছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয়টি গুচ্ছতে থাকবে কি না, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা হবে।
অন্যদিকে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মন্ত্রীকে সমস্যার কথা জানিয়েছি। নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ফিরতে উপাচার্যের কাছেও চিঠি দিয়েছি।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে প্রথম ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের সুবিধার বিষয়ে চিন্তা করে এ কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে নানাবিধ ত্রæটি ও অব্যবস্থাপনা দেখা দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা।