আখেরি মোনাজাতে লাখো মুসল্লির ঢল

59

দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তিকামনা করে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সা’দ বিরোধীদের ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে হেদায়েতি বয়ান এবং মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা জোবায়ের। সকাল ১০টা ৪২ মিনিট থেকে ১১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ২৮ মিনিট মোনাজাত পারিচালনা করা হয়। মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য সকাল থেকে লাখ লাখ মুসল্লিদের ঢল ছিল ইজতেমা ময়দানে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর থেকেই আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অনেক মুসল্লি হেঁটে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করেছেন। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে যানবাহন চালাচল বন্ধ থাকায় অনেকে পায়ে হেঁটে মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে সাদবিরোধী ও মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা মাঠ ছেড়ে যায়। অপরদিকে আজ বাদ ফজর থেকে মাওলানা সাদ অনুসারীদের পরিচালনায় ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি (মিডিয়া) রুহুল আমিন সরকার জানিয়েছেন, ‘ইজতেমার প্রথম অংশে যারা অংশ নিয়েছেন তারা স্বেচ্ছায় চলে যান। ‘অপর অংশকে সন্ধ্যার পর মাঠে ঢুকেন।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
শনিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে মোনাজাত শুরু করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম হযরত মাওলানা মুহাম্মদ জোবায়ের। আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। টানা ২৪ মিনিট আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়। এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে তুরাগ তীরে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মাওলানা জোবায়ের মোনাজাতের প্রথম ১৩ মিনিট কোরআন পাঠ করেন। শেষ অংশে দোয়া করা হয় বাংলা ভাষায়।
মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী,গাজীপুর, উত্তরাসহ আশপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণী বিতান ও অফিসসহ প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়। লাখ লাখ মানুষ মোনাজাতে অংশ নেন। সকাল ৯টার আগেই ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মাঠের পাশের বাসা-বাড়ি, কলকারখানা-অফিস-দোকানের ছাদে, যানবাহনের ছাদে ও তুরাগ নদীতে নৌকায় মুসল্লিরা অবস্থান নেন। যে দিকেই চোখ যায় শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পরা মানুষ। ইজতেমাস্থলের চারপাশের ৩-৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। মোনাজাতে মুসলমানদের ঈমান মজবুত, পাপ মোচন ও মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া হয়। আখেরি মোনাজাতে পুরুষের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী কয়েক হাজার নারী অংশ নেন।
মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদফতর ও গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। এর মধ্যে গণযোগাযোগ অধিদফতর ইজতেমা ময়দান থেকে আব্দুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস ইজতেমা ময়দান থেকে চেরাগআলী, টঙ্গী রেলস্টেশন, স্টেশন রোড থেকে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু ও আশপাশের অলি-গলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগ দেওয়া হয়।
মোনাজাত শেষে ইজতেমা ময়দান ছেড়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। এর আগে শুক্রবার হেলিকপ্টারে চড়ে ইজতেমা ময়দানে আসেন আহমদ শফী।
কাল সোমবার সাদ অনুসারীদের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এ বছরের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে। আগামী বছর ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি এবং ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।