আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ

35

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে দিনভর তৎপর ছিল আওয়ামী লীগ। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন চট্টগ্রামের নেতারা। আসন্ন চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে রেজাউল করিম চৌধুরীসহ কাউন্সিলর পদে সকল দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করার কৌশল হিসেবেই এ বৈঠক করা হয়েছে বলে জানা যায়। তবে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সেসব নিয়ে মুখ খুলতে না চাইলেও বিদ্রোহীরা সরে না দাঁড়ালে কঠোর ব্যবস্থার নেয়ার কথা জানান উপস্থিত নেতারা। এ বৈঠক থেকে চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও পুনর্গঠন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে নেমেই সকালে প্রথমেই কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নেতাদের নিয়ে সার্কিট হাউজে প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহীদের ব্যাপারে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। মূলত আগেই নির্বাচনের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে। তিনি প্রয়োজনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে যেকোনো সংশোধন, সংযোজন ও পরিবর্তন আনতে পারবেন। তার ওপর এ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। এছাড়া একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। প্রার্থীদের বিজয়ী করতে তারা যৌথভাবে কাজ করবেন।’
সার্কিট হাউজে বৈঠক চলাকালীন বাইরে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। কেন্দ্রীয়, উত্তর, দক্ষিণ ও নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ভেতরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলাকালীন সময়ে নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে গেইটের বাইরে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেউ কেউ উপস্থিত হন। এরমধ্যে দুই-একজন ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার গাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।
এদিকে সার্কিট হাউজের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চলে গেলেও নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন দলটির যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।
বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘যারা মনে করছেন নিজেরা যোগ্য, জনপ্রিয় আরেকবার নিজের মতো নির্বাচন করে জয়ী হবেন, তাহলে ভুল করবেন। ত্যাগ করলে ভবিষ্যতে মূল্যায়িত হবেন। না হলে ভবিষ্যতে আপনাদেরও রাজনীতির পথ কঠিন হয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোন প্রার্থী পরিবর্তন করতে চাইলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সিদ্ধান্ত নিবে। মনোনয়নের ক্ষেত্রে দল যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বা দেবে সে সিদ্ধান্ত সবাইকে মানতে হবে। সিদ্ধান্ত না মানলে দল চুপ করে বসে থাকবে না। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, উত্তর জেলা সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সহ সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।