আওয়ামী লীগের পেয়ারুলই বিজয়ী

13

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনারস প্রতীকের প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। তাঁর প্রাপ্ত ভোট দুই হাজার ৫৬৭। চেয়ারম্যান পদে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নারায়ণ রক্ষিত পেয়েছেন ১২৪ ভোট। চট্টগ্রামের ১৫টি কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা দুই হাজার ৬৯৪। এরমধ্যে তিনটি ভোট বাতিল হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
বিজয়ী হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেসরকারিভাবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই বিজয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজয়। তিনি চট্টগ্রামে বিভিন্ন মহাপ্রকল্পের মাধ্যমে যে বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন, তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। চট্টগ্রামের এক কোটিরও বেশি মানুষের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আমাকে সমর্থন জানিয়ে বিজয়ী করেছেন। তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কাজের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিদান দেব।’
ভোটের মাঠে তেমন উৎসব না থাকলেও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে এই ভোট নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। চেয়ারম্যান পদ ছাড়াও সদস্য পদে অধিকাংশ নেতাকর্মী পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ছিলেন। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকলেও কেন্দ্রের বাইরে দলবদ্ধভাবে ভোটের ফলাফল জানতে সবাই উৎসুখ ছিলেন। ভোটগ্রহণকালে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি।
চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কোথাও কোনো গোলযোগ ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক ভোটকেন্দ্রের চিত্র পর্যবেক্ষণ করেছি। সকলের সহযোগিতা নিয়েই সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছি।’
এদিকে ভোটের মাঠে অনেকটা শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবেই প্রচারণা চালিয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। বড় দলের প্রার্থী হওয়ায় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেয়েছেন। অন্যদিকে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী নারায়ণ রক্ষিতকে কোথাও প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি। কিন্তু ভোটের মাঠে থাকায় নারায়ণের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা চালাতে বাধ্য হয়েছেন পেয়ারুল। ভোট শেষে পেয়ারুলের প্রাপ্ত দুই হাজার ৫৬৭ ভোটের বিপরীতে নারায়ণ পেয়েছেন ১২৪ ভোট।
এদিকে নারায়ণ রক্ষিতের ১২৪ ভোট পাওয়া নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ভোটের মাঠে না থাকলেও কিভাবে তিনি এত ভোট পেলেন এমন প্রশ্ন খোদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মনে নাড়া দিচ্ছে। যদিও আওয়ামী লীগ প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররা নারায়ণের পক্ষেই ছিলেন। আমার দলের কেউ কেউ হয়তো আমাকে পছন্দ না করে তাকে ভোট দিয়েছেন।’
সদস্য পদে কে কত ভোট পেলেন : সংরক্ষিত ওয়ার্ড-১ জাহান আরা নাজনীন (ফুটবল) ১৩৫ ভোট, ইয়াছমিন আক্তার কাকলী (বই) ১৪৬ ভোট, রওশন আরা বেগম (হরিণ) ১৫০ ভোট, ইসমত আরা সুলতানা (দোয়াত কলম) ১৩৭ ভোট, নার্গিস আকতার (টেবিল ঘড়ি) ৫ ভোট, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-২ দিলোয়ারা ইউসুফ (হরিণ) ৩২৯ ভোট, জুবাইদা সরওয়ার চৌধুরী নিপা (ফুটবল) ২৫০ ভোট, এড. উম্মে হাবিবা (বই) ৭০ ভোট, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৩ তাহমিনা আক্তার চৌধুরী (হরিণ) ৫৮ ভোট, জগদা চৌধুরী (দোয়াত কলম) ১৬৭ ভোট, মোস্তফা রাহিলা চৌধুরী (ফুটবল) ১৯৬ ভোট, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৪ দিলুয়ারা বেগম (বই) ১৭৪ ভোট, মোছাম্মৎ দিলুয়ারা বেগম (ফুটবল) ৩ ভোট, রেহেনা বেগম ফেরদৌস চৌধুরী (মাইক) ৮ ভোট, সাজেদা বেগম (হরিণ) ২৭ ভোট, মোছাম্মৎ ফারহানা আফরীন জিনিয়া (দোয়াত কলম) ২৯১ ভোট, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-৫ দিলোয়ারা বেগম (টেবিল ঘড়ি) ১৪৩ ভোট, রুখছানা আকতার (দোয়াত কলম) ১০ ভোট, শাহিদা আকতার জাহান (হরিণ) ১৯০ ভোট, শিকু আরা বেগম (মাইক) ১ ভোট, তসলিমা আক্তার (বই) ৯ ভোট, সুরাইয়া খানম (ফুটবল) ১৯১ ভোট পেয়েছেন।
সাধারণ সদস্য পদে ওয়ার্ড-২ (সীতাকুন্ড) আ.ম.ম দিলসাদ (অটোরিক্সা) ৭৭ ভোট, মো. শওকতুল আলম (হাতি) ৬৬ ভোট, ওয়ার্ড-৩ (সন্দ্বীপ) মো. নুরুন্নবী ভুট্টো (উটপাখি) ০ ভোট, মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান (হাতি) ৮৭ ভোট, মো. রফিকুল ইসলাম (টিউবওয়েল) ১ ভোট, মিজানুর রহমান (বৈদ্যুতিক পাখা) ৩৫ ভোট, মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন (ক্রিকেট ব্যাট) ৩ ভোট, মো. আলাউদ্দীন (তালা) ৮ ভোট, শাহেদ সরোয়ার শামীম (ঘুড়ি) ৬৪ ভোট, কামরুল হাসান আলাল (অটোরিক্সা) ৪ ভোট, ওয়ার্ড-৪ (ফটিকছড়ি) আখতার উদ্দীন মাহমুদ (অটোরিক্সা) ১৬৯ ভোট, মো. আমান উল্লাহ খান চৌধুরী (টিউব ওয়েল) ৯৪ ভোট, ওয়ার্ড-৫ (হাটহাজারী ও নগর আংশিক) মোহাম্মদ আবু আলম (ক্রিকেট ব্যাট) ১১ ভোট, গোলাম মোস্তফা (ঘুড়ি) ২৮ ভোট, জাফর আহমেদ (টিউব ওয়েল) ৩৬ ভোট, মোহাম্মদ আলমগীর (তালা) ৩৫ ভোট, মো. নুরুল আবছার (হাতি) ৩ ভোট, এইচ.এম আলী আবরাহা (অটোরিক্সা) ৫২ ভোট, মো. মনজুর হোসেন চৌধুরী (টিফিন ক্যারিয়ার) ২৬ ভোট, মো. এজাহার মিয়া (বৈদ্যুতিক পাখা) ০ ভোট, মো. সেলিম উদ্দীন (উটপাখি) ০ ভোট, ওয়ার্ড-৮ (বোয়ালখালী ও নগর আংশিক) বোরহান উদ্দিন এমরান (হাতি) ৭৯ ভোট, মোহাম্মদ ইউনুছ (তালা) ৪৪ ভোট, ওয়ার্ড-৯ (কর্ণফুলী ও নগর আংশিক) ইসলাম আহমদ (ঘুড়ি) ৮৬ ভোট, অধ্যাপক মো. রাশেদুল আলম (তালা) ৪ ভোট, ওয়ার্ড- ১০ (পটিয়া) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন (অটোরিক্সা) ১০৭ ভোট, দেবব্রত দাশ (তালা) ১২৮ ভোট, ওয়ার্ড-১১ (চন্দনাইশ) মো. শেখ টিপু চৌধুরী (তালা) ৫৩ ভোট, আবু আহমেদ চৌধুরী (হাতি) ৬৪ ভোট, ওয়ার্ড-১৩ (বাঁশখালী) শাহদাত হোসেন চৌধুরী (হাতি) ২ ভোট, মোহাম্মদ আবদুল আজিজ (বৈদ্যুতিক পাখা) ২ ভোট, কল্যান বড়–য়া (ঘুড়ি) ০ ভোট, হামিদ উল্লাহ (বক) ১৮ ভোট, মো. নুর হোছাইন (টিফিন ক্যারিয়ার) ৬ ভোট, এম জিল্লুর করিম শরিফী (অটোরিক্সা) ১৭ ভোট, মোজাম্মেল হক সিকদার (উটপাখি) ৩৭ ভোট, মো. নুরুল মোস্তফা সিকদার (ক্রিকেট ব্যাট) ৮৯ ভোট, মোহাম্মদ আলমগীর কবির (টিউবওয়েল) ২৩ ভোট, মো. খালেকুজ্জামান (তালা) ১ ভোট, ওয়ার্ড-১৪ (সাতকানিয়া) গোলাম ফেরদৌস (হাতি) ২২ ভোট, মনির আহমেদ (তালা) ৯২ ভোট, আবদুল আলীম (বৈদ্যুতিক পাখা) ১১৭ ভোট ও ওয়ার্ড- ১৫ (লোহাগাড়া) আনোয়ার কামাল (অটোরিক্সা) ৫৩ ভোট এবং মোহাম্মদ এরফানুল করিম চৌধুরী (ঘুড়ি) ৬৫ ভোট পেয়েছেন।