আওয়ামী লীগের নীতি হচ্ছে দুঃখ-কষ্টে জনগণের পাশে থাকা : প্রধানমন্ত্রী

10

পূর্বদেশ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, তার দল ও সরকার সর্বদা জনগণের দুঃখ-কষ্টে পাশে থাকবে। তিনি বলেন, জনগণের সেবাই আওয়ামী লীগের একমাত্র মূলমন্ত্র।
তিনি বলেন, দেশবাসীকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে যা যা প্রয়োজন আওয়ামী লীগ সরকার সবই করে যাচ্ছে। শুধু আওয়ামী লীগ সরকারই নয়, এর নেতাকর্মীরাও জনগণের প্রয়োজনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। করোনা ও যেকোনো দুর্যোগে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের জনগণের পাশে দাঁড়ানো থেকে প্রমাণিত হয় যে, দল সর্বদা জনগণের প্রতিটি দুঃখ-কষ্টে পাশে থাকে। খবর বাসস।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভায় সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভার কার্যক্রম শুরুর আগে শোক প্রস্তাবও গৃহীত হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং একটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবগঠিত কমিটির সকল সদস্য দেশবাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে রূপান্তরের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, আমাদের (আওয়ামী লীগের) নীতি হচ্ছে জনগণের দুঃখ-কষ্টে তাদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশবাসীকে একটি সুন্দর জীবন দিতে চেয়েছিলেন এবং আমরা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের যে নতুন কমিটি হয়েছে আমাদের কমিটির সদস্যরা প্রত্যেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বাংলার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আমাদের যা যা করণীয় তা আমরা করে যাব, তাদের পাশে আমরা চিরদিন থাকবো, চিরদিন আছি এবং মানুষের সেবা করাটাই আমাদের সব থেকে বড় লক্ষ্য।প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, প্রতিটি ঘরে আলো জে¦লে প্রতি ঘরকে আমরা আলোকিত করেছি। পাশাপাশি, সাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ থেকে ৭৫ দশমিক ২ ভাগে উন্নীত করা, মানুষের আয়ুস্কাল ৬৪ বছর থেকে ৭৩ বছরে উন্নীত করা, খাদ্যের সঙ্গে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীতকরণ, ১৮ হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানসহ চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং করোনা ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় বিতরণেও তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে আরো ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে। আজকে উন্নত দেশও হিমসিম খাচ্ছে এবং নিজেদেরকে তারা অর্থনৈতিক মন্দার দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে কিন্তু আল্লাহর রহমতে বাংলাদেশ এখনও সে পর্যায়ে যায়নি এবং তাঁর সরকার এখনও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা যেমন এনে দিয়েছে তেমনি আর্থসামাজিক উন্নতিও এনে দিয়েছে। মাত্র ১৪ বছরে বাংলাদেশ আজকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশে^ একটা মর্যাদা পেয়েছে। এই জাতিকে একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জাতি হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাচ্ছি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। সেই সঙ্গে আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নিয়েছি। সারা বাংলাদেশে আমরা যেমন হাইটেক পার্ক করছি, স্কুলগুলোতে কম্পিউটার ল্যাব করছি, প্রযুক্তি শিক্ষা এবং বহুমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি।
আমাদের তরুণ প্রজন্ম যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সেজন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে বিনা জমানতে ঋণ প্রদান, বর্গাচাষীদের বিনা জমানতে ঋণ দেয়া হচ্ছে, কৃষকদের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খুলে ভতুর্কির টাকা সরাসরি পাবার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রায় ২ কোটি কৃষককে কৃষি উপকরণ ক্রয় করার জন্য কার্ড দেয়া হয়েছে, ২ কোটি ৫০ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিয়ে সহযোগিতা করছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, শীতে কম্বল ও গরম কাপড় বিতরণ করার মাধ্যমে তাঁর সরকারের যতটুকু সাধ্য তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে এবং বিত্তবানদেরকেও জনগণের দুঃখ কষ্টে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহŸান জানাচ্ছে, বলেন তিনি।