আউটার স্টেডিয়াম খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত হোক

23

চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়াম নিয় নগরবাসীর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও দুঃখ মোচন হতে যাচ্ছে শিগ্গিরই। জেলা প্রশাসন আউটডোরের এ মাঠটি খেলাধূলার জন্য উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে-খবরটি চট্টগ্রাম নগরবাসীর জন্য সবচেয়ে আনন্দের ও সুখের। জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারলে নগরীর খেলাধূলার জন্য মাঠের যে খরা চলছে তা কিছুটা হলেও কাটবে আশা করা যায়। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমী তরুণরা একটি ভালো প্রেক্টিস করার মাঠ পাবে নিঃসন্দহে। গত রবিবার দৈনিক পূর্বদেশে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়াম ক্রীড়ামোদীদের কাছে আবেগের বিষয়। সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার নান্নু, আকরাম, নাফিস ইকবাল, আফতাব, নাজিম উদ্দিন, তামিম ইকবালের মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা এখান থেকেই উঠে এসেছেন। সাবেক জাতীয় ফুটবলার আশীষ ভদ্রও একসময় নিয়মিত খেলতেন এ মাঠে। জানা যায়, আউটার স্টেডিয়ামের উপর প্রথম তীরটি বিদ্ধ হয় পিডিপির পাওয়ার স্টেশন নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এরপর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট স্থাপনের সময় মূলত মাঠটি সংকুচিত হয়ে যায়। তবে এর বড় ক্ষতির সূচনা হয় সিজেকেএসের হাত ধরে। স্টেডিয়ামের পূর্বপাশে মার্কেট নির্মাণ করতে গিয়ে আরো একটি অংশ চলে যায়। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জায়গা ঘিরে নির্মাণ করা হয়েছে সুইমিং কমপ্লেক্স। অবশিষ্ট অংশটি প্রায় সারা বছরই নানাবিধ মেলার জন্য বুকিং করা থাকে। তাছাড়া অপর অংশটি ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রাক রাখার কাজে। আর সামনের দিকে রয়েছে বিশাল নোংরা আবর্জনার ভাগাড়। এছাড়া চতুর্দিকে রয়েছে হরেক রকমের বাণিজ্যিক পসরা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে এখানে খাবারের এক্সিবিশন চলছে। রকমারি দোকানির হাঁকডাকে অস্থির এলাকার জীবনযাত্রা। কিছু লোভী মানুষের বাণিজ্যিক আগ্রাসনের কারণে পুরো আউটার স্টেডিয়াম এলাকাই আজ ক্ষতবিক্ষত। এখনই উদ্যোগ না নিলে পরবর্তী প্রজন্ম মোবাইলের তিন ইঞ্চির স্ক্রিনকেই মাঠ হিসেবে বেছে নিবে। তাই যেকোন মূল্যে আউটার স্টেডিয়ামের পূর্বের অবয়ব ফিরিয়ে আনতে হবে। এর পূর্ব-পশ্চিমে, উত্তর-দক্ষিণে দখলমুক্ত করে ক্রীড়ার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নগরীর আউটার স্টেডিয়াম পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছেন খবরটিতে আশায় বুক বেঁধেছে নগরবাসী। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগসহ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। আমরাও এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে শুধু চট্টগ্রাম উপকৃত হবে না, পুরো দেশই উপকৃত হবে। কারণ এ মাঠে কিশোর ও তারুণ্যে ক্রিকেট সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে দেশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিয়েছেন আকরাম খান, নান্নু, তামিম ইকবাল ও নাফিসরা। তারা আউটার স্টেডিয়াম থেকে যাত্রা শুরু করে বিশ্বেও বড় স্টেডিয়ামগুলোতে খেলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন। এখনও তামিম-নাফিস মাঠেই খেলছেন। দুর্ভাগ্য বিগত প্রায় দেড় যুগ ধরে এ মাঠটি অকার্যকর করা রাখা হয়েছে।
নগরবাসী, পরিবেশবাদী ও ক্রিড়া-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখেও এ মাঠের আশেপাশে নতুন নতুন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। ১২ মাসে ১৩ মেলা পার্বণে মাঠটিকে বেনিয়াদের অবয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। একসময় যে মাঠজুড়ে শারীরক খসরত, শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবকদের ক্রিকেট, ফুটবলসহ নানা ধরনের খেলাধুলার আয়োজন হত, সকাল বিকাল প্র্যাক্টিস হত, সেই মাঠ এখন পরিত্যক্ত একটি বিলে পরিণত হয়েছে। মাঠের চারদিকে নানা কানাখন্দক, বর্জ্যের স্তূপ, মিনি ট্রাকের অবৈধ টার্মিনাল গড়ে উঠেছে। আর এসব থেকে ফায়দা নিচ্ছে প্রভাবশালী মহলের কিছু হোমরাচোমরা। এছাড়া সন্ধ্যার পর এ মাঠের চারদিকে মাদকসেবীদের আড্ডা ও অনৈতিক কাজের আস্তানায় পরিণত হয়। নগরবাসী এসব অবৈধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ দেখেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগ নগরবাসীকে আশাবাদী করবে। তারা খেলার মাঠকে খেলোয়াড়দের জন্য উন্মুক্ত করবেন। আমরা আশা করি জেলা প্রশাসন তাদের উদ্যোগ বাস্তবায়নে সফল হবেন।
আউটার স্টেডিয়াম
খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত হোক

চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়াম নিয় নগরবাসীর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও দুঃখ মোচন হতে যাচ্ছে শিগ্গিরই। জেলা প্রশাসন আউটডোরের এ মাঠটি খেলাধূলার জন্য উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে-খবরটি চট্টগ্রাম নগরবাসীর জন্য সবচেয়ে আনন্দের ও সুখের। জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারলে নগরীর খেলাধূলার জন্য মাঠের যে খরা চলছে তা কিছুটা হলেও কাটবে আশা করা যায়। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমী তরুণরা একটি ভালো প্রেক্টিস করার মাঠ পাবে নিঃসন্দহে। গত রবিবার দৈনিক পূর্বদেশে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়াম ক্রীড়ামোদীদের কাছে আবেগের বিষয়। সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার নান্নু, আকরাম, নাফিস ইকবাল, আফতাব, নাজিম উদ্দিন, তামিম ইকবালের মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা এখান থেকেই উঠে এসেছেন। সাবেক জাতীয় ফুটবলার আশীষ ভদ্রও একসময় নিয়মিত খেলতেন এ মাঠে। জানা যায়, আউটার স্টেডিয়ামের উপর প্রথম তীরটি বিদ্ধ হয় পিডিপির পাওয়ার স্টেশন নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এরপর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট স্থাপনের সময় মূলত মাঠটি সংকুচিত হয়ে যায়। তবে এর বড় ক্ষতির সূচনা হয় সিজেকেএসের হাত ধরে। স্টেডিয়ামের পূর্বপাশে মার্কেট নির্মাণ করতে গিয়ে আরো একটি অংশ চলে যায়। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জায়গা ঘিরে নির্মাণ করা হয়েছে সুইমিং কমপ্লেক্স। অবশিষ্ট অংশটি প্রায় সারা বছরই নানাবিধ মেলার জন্য বুকিং করা থাকে। তাছাড়া অপর অংশটি ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রাক রাখার কাজে। আর সামনের দিকে রয়েছে বিশাল নোংরা আবর্জনার ভাগাড়। এছাড়া চতুর্দিকে রয়েছে হরেক রকমের বাণিজ্যিক পসরা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে এখানে খাবারের এক্সিবিশন চলছে। রকমারি দোকানির হাঁকডাকে অস্থির এলাকার জীবনযাত্রা। কিছু লোভী মানুষের বাণিজ্যিক আগ্রাসনের কারণে পুরো আউটার স্টেডিয়াম এলাকাই আজ ক্ষতবিক্ষত। এখনই উদ্যোগ না নিলে পরবর্তী প্রজন্ম মোবাইলের তিন ইঞ্চির স্ক্রিনকেই মাঠ হিসেবে বেছে নিবে। তাই যেকোন মূল্যে আউটার স্টেডিয়ামের পূর্বের অবয়ব ফিরিয়ে আনতে হবে। এর পূর্ব-পশ্চিমে, উত্তর-দক্ষিণে দখলমুক্ত করে ক্রীড়ার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নগরীর আউটার স্টেডিয়াম পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছেন খবরটিতে আশায় বুক বেঁধেছে নগরবাসী। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগসহ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। আমরাও এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে শুধু চট্টগ্রাম উপকৃত হবে না, পুরো দেশই উপকৃত হবে। কারণ এ মাঠে কিশোর ও তারুণ্যে ক্রিকেট সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে দেশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিয়েছেন আকরাম খান, নান্নু, তামিম ইকবাল ও নাফিসরা। তারা আউটার স্টেডিয়াম থেকে যাত্রা শুরু করে বিশ্বেও বড় স্টেডিয়ামগুলোতে খেলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন। এখনও তামিম-নাফিস মাঠেই খেলছেন। দুর্ভাগ্য বিগত প্রায় দেড় যুগ ধরে এ মাঠটি অকার্যকর করা রাখা হয়েছে।
নগরবাসী, পরিবেশবাদী ও ক্রিড়া-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখেও এ মাঠের আশেপাশে নতুন নতুন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। ১২ মাসে ১৩ মেলা পার্বণে মাঠটিকে বেনিয়াদের অবয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। একসময় যে মাঠজুড়ে শারীরক খসরত, শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবকদের ক্রিকেট, ফুটবলসহ নানা ধরনের খেলাধুলার আয়োজন হত, সকাল বিকাল প্র্যাক্টিস হত, সেই মাঠ এখন পরিত্যক্ত একটি বিলে পরিণত হয়েছে। মাঠের চারদিকে নানা কানাখন্দক, বর্জ্যের স্তূপ, মিনি ট্রাকের অবৈধ টার্মিনাল গড়ে উঠেছে। আর এসব থেকে ফায়দা নিচ্ছে প্রভাবশালী মহলের কিছু হোমরাচোমরা। এছাড়া সন্ধ্যার পর এ মাঠের চারদিকে মাদকসেবীদের আড্ডা ও অনৈতিক কাজের আস্তানায় পরিণত হয়। নগরবাসী এসব অবৈধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ দেখেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগ নগরবাসীকে আশাবাদী করবে। তারা খেলার মাঠকে খেলোয়াড়দের জন্য উন্মুক্ত করবেন। আমরা আশা করি জেলা প্রশাসন তাদের উদ্যোগ বাস্তবায়নে সফল হবেন।