আইন মেনে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির আহব্বান

12

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশের প্রায় ৫৪ লাখ ব্যবসায়ীর মধ্যে কতিপয় ব্যবসায়ীর অতিরিক্ত মুনাফার কারণে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। করোনা মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্যের কিছুটা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের সকল মার্কেট, দোকান মালিক সমিতি ও এসোসিয়েশন নেতাদের প্রতি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করার নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই সঙ্গে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন, মজুদদার বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। গতকাল সোমবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বারের উদ্যোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
চেম্বার সভাপতি ব্যবসায়ীদের দেশের সেবক এবং ঝুঁকি নিয়েই দেশের কল্যাণে কাজ করছে উল্লেখ করে বলেন, গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর কারণে যাতে ব্যবসায়ী সমাজের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সাপ্লাই চেইন, সব ব্যাংকে ডলারের একই মূল্য রাখা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার অনুরোধ জানান।
সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ মিল থেকে সরাসরি ভোজ্যতেল বিক্রির অনুরোধ জানিয়ে ১৫ দিনের মধ্যেই সেল্স অর্ডার (এসও) ক্লিয়ার করার কথা জানান।
তিনি বলেন-কোম্পনির এসআর অনেক সময় ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজশে থাকতে পারে। তাই এস আরদের এই অনৈতিক কর্মকান্ডের দায় কোম্পানি এড়াতে পারে না।
এসময় তিনি অবৈধ মজুদদাররা যেন ফায়দা লুটতে না পারে সেজন্য স্ব-স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করার অনুরোধ জানান। পুরনো মাল পুরনো দামে বিক্রি করার কথা বলেন।
চেম্বার পরিচালক মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) বলেন-একজন ব্যবসায়ীর অনৈতিক ও অযৌক্তিক কর্মকাÐের জন্য সকলকে কলঙ্কিত করা যাবে না। কেউ যাতে মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে এ ব্যাপারে তিনি মার্কেটভিত্তিক নেতাদেরকে বৈঠক করার অনুরোধ জানান।
মতবিনিময় সভায় অন্যরা বক্তারা পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেলের শুল্ক মূল্যের পার্থক্য ন্যূনতম ৩-৪ মাসের জন্য সমন্বয় করা, অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থাকরণ, ২-৩ জনের কাছে বিক্রি না করে সকল ডিলারদের নিকট বিক্রি করা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভোগ্যপণ্য আমদানিতে উৎসাহ প্রদান, ভোগ্যপণ্যের শুল্ক কমানো, আসন্ন কোরবানের সময় পেঁয়াজ, রসুন, আদা ইত্যাদি মসলার বাজার স্থিতিশীল রাখা, ব্যবসায়ীদের অরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থাকরণ, দেশীয় উৎপাদিত পণ্যের প্রতি উৎসাহিতকরণ, কৃষিবান্ধব বাজেট প্রণয়ন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানা, মজুদের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়া, সঠিক সময়ে সরকারের দিক নির্দেশনা প্রদান করা, বাজার মনিটরিং এ সরকারের কোন সংস্থা করবে তা পূর্বে অবহিতকরণ, কোম্পানির এস আর কর্তৃক রসিদ প্রদান, সকল দোকানে মাল সরবরাহ ইত্যাদি দাবি উত্থাপন করেন।
এসময় খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন’র সাধারণ সম্পাদক ও চেম্বারের সাবেক পরিচালক ছৈয়দ ছগীর আহমদ, মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, পাহাড়তলী বণিক সমিতি, কর্ণফুলী বাজার সমিতি, চাক্তাই আড়তদার সমিতির প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। এছাড়া চেম্বার পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), মো. ইফতেখার ফয়সাল, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম), আমদানিকারক, বিভিন্ন মার্কেট এসোসিয়েশন, দোকান মালিক সমিতি, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।