আইনশৃঙ্খলা রক্ষা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে

11

বিভিন্ন দেশে সামরিক ও পুলিশ বাহিনীতে ব্যবহৃত উজি পিস্তল ‘বৈধভাবে’ আমদানি হয়ে দেশের বেসামরিক নাগরিকদের হাতে পৌঁছে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ‘মিলিটারি গ্রেডের’ সেমি অটোমেটিক এই আগ্নেয়াস্ত্র সাধারণ মানুষের হাতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
গত ২০ অগাস্ট এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারের পর তার লাইসেন্স করা অস্ত্রটি বিস্ময় হয়ে আসে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। নামে পিস্তল হলেও উজি পিস্তল আসলে অতি ক্ষুদ্র আকারের সাব মেশিনগান। আর বাংলাদেশে সেগুলো আমদানি করা হয়েছে পয়েন্ট টু টু বোরের রাইফেলের ঘোষণা দিয়ে।
ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর মেজর উজিয়েল গালের করা নকশায় চল্লিশের দশকে প্রথম এ অস্ত্র তৈরি হয়। তার নামেই এ সাব
মেশিনগানের নামকরণ হয়। শুরুতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহার করলেও পরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানি লাইসেন্স নিয়ে উজি সিরিজের বিভিন্ন আগ্নোয়াস্ত্র তৈরি শুরু করে। বাংলাদেশে পাওয়া অস্ত্রটি তৈরি করেছে বিখ্যাত জার্মান অস্ত্র নির্মাতা কার্ল ওয়ালথার।
এরইমধ্যে প্রায় অর্ধশত ‘উজি পিস্তল’ বেসামরিক নাগরিকদের হাতে চলে গেছে। সেগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। খবর বিডিনিউজের
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “উজি সাধারণ মানুষের কাছে থাকাটা বড়ই উদ্বেগের। আমরা এসব অস্ত্রের বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দিয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। সেখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবে। তবে এখনও কোনো দিক থেকে নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।”
উদ্বেগের জেনেও এসব অস্ত্র জব্দের পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “এসব অস্ত্র যেহেতু বৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে এবং যারা কিনেছেন তারা লাইসেন্সের মাধ্যমে কিনেছেন সেগুলোর ব্যাপারে এই মুহূর্তে পুলিশের করণীয় কিছু নেই। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হবে।”
তবে লাইসেন্সধারী যে সব ব্যক্তি এসব অস্ত্র কিনেছেন, তাদের বিষয়ে ইতোমধ্যে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
ছয়টি প্রতিষ্ঠান গত পাঁচ বছরে এ ধরনের মোট ১১১টি আগ্নেয়াস্ত্র আমদানি করেছে। সবগুলোই আনা হয়েছে পয়েন্ট টু টু বোরের ‘রাইফেল’ ঘোষণা দিয়ে। যদিও কোনো মডেলের উজি তাদের আমদানি বা বিক্রি করতে পারার কথা নয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ১১১টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে ৯১টি উজি পিস্তল এবং ২০টি উজির অন্য মডেলের অস্ত্র। উজি পিস্তল বিক্রি হয়েছে ৪৯টি, বাকি মডেলের চারটি।
২০ অগাস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মিনাল শরীফ (৫৬) নামে একজনকে গ্রেপ্তারের পর তার গাড়িতে একটি অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া যায়। পরে তার ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪৪টি গুলিসহ একটি ‘উজি পিস্তল’ এবং বিদেশি মদ উদ্ধার করে পুলিশ।