অহংকারের চোরাবালি

43

বিভাস গুহ

অহংকার পতনের মূল। এটি একটি অতি পরিচিত বাক্য। এ বাক্যটি যার জীবনে অলংকার হয়ে বিরাজ করে তার পতন ঘটতে সময় লাগে না। হয়ত অন্যান্য যোগ্যতা তাকে সাময়িকভাবে উচ্চ স্থানে আসীন করে কিন্তু এ একটি খারাপ দিক তাকে ধীরে ধীরে নিচে নিয়ে আসে। সবার কাছে সে গ্রহণযোগ্যতা হারায়। কেউ যখন তার যোগ্যতার চেয়ে বেশি কিছু পেয়ে যায় বা হঠাৎ করে এমন কিছু পেল যার জন্য প্রাপক মোটেই প্রস্তুত ছিল না তখন কারো কারো আচার আচরণে চলনে বলনে এমন একটা অনুভূতি বা ভাব পরিলক্ষিত হয় যা মানুষের চোখে দৃষ্টিকটু বা মনে আঘাত লাগে তখনই তাকে অহংকার হিসেবে চিহ্নিত করে বা যার মধ্যে এ ভাবটা দৃশ্যমান হয় লোকে তাকে অহংকারী বলে। এ অহংকার এক ভয়ানক ব্যাধির মত অন্তরের সৌন্দর্যকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হচ্ছে মানুষ। আমাদের যা কিছু অর্জন বা সাফল্য তার সবকিছু সৃষ্টিকর্তার দান। তাই মানুষ হিসেবে কোন কিছু নিয়ে অহংকার করা সাজে না। আমাদের বড় কোন প্রাপ্তির জন্য সফলতার জন্য গর্ব অনুভব করে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানাতে পারি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি। কিন্তু যদি তা না করে আশেপাশের মানুষকে প্রাপ্য সম্মান না দিয়ে নিজেকেই অন্যদের চেয়ে বেশি সম্মানের যোগ্য মনে করে সবার চেয়ে বড় মনে করি সেরা মনে করি তবেই অহংকার এসে ঘিরে ধরে। আর এ অহংকারের চোরাবালি নিজের পতন ডেকে আনে। অহংকার করার মানে নিজের পতনকে নিজেই আমন্ত্রণ জানানো। এর থেকে পরিত্রাণ আবশ্যক। কবির ভাষায়- বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে। অহংকার থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হলে প্রতিদিন সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে হবে। নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
ধনী গরিব সবার সাথে মিলে মিশে বসবাস করতে হবে। পরস্পর পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব রাখতে হবে। একজনের বিপদে অন্যজনকে এগিয়ে আসতে হবে। যেকোন সামাজিক অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছতে হবে। তবেই সবার সাথে মিশে সবার একজন হতে পারলে অহংকারের চোরাবালি থেকে মুক্ত হওয়া যায়।