অস্থায়ী কর্মীদের ‘জালিয়াতি’ ও ল্যাপটপের খোঁজে ইসি!

61

গ্রেপ্তারকৃত দুইজনের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার হয়েছে। তবে এ ল্যাপটপগুলো ঢাকা থেকে ক্রয় করার কথা জানান অভিযুক্তরা। এর মধ্যে যে ল্যাপটপ নিয়েই বেশি মাতামাতি সেটির নাগাল এখনো পায়নি তদন্তকারী সংস্থা। এর মধ্যে হারানো ল্যাপটপগুলো কখন ও কোথায় থেকে হারিয়েছে এবং হারানোর পর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কি-না জানতে চেয়েছে ইসি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইভাবে গতকাল রবিবার পাঠানো চিঠিতে মাঠপর্যায়ে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তা অবহিত করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান পূর্বদেশকে বলেন, ‘প্রথমে পাইলো একটা। সেটি আমাদের ল্যাপটপ কি-না দেখতে হবে। নিখোঁজ সাতটির মধ্যে পাইলো দুটি। আবার রাঙামাটি থেকেও দুটি নিখোঁজ। উদ্ধার হওয়া ল্যাপটপের মধ্যে একটি ঢাকা থেকে কিনে আনছে বললো। এ জন্য সঠিক সংখ্যাটা বলা যাচ্ছে না। ঢাকা থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা দেখছি।’
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ১১৩০ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কর্মরত আছেন। সারাদেশের থানা, উপজেলা, আঞ্চলিক নির্বাচন ও প্রকল্প কার্যালয়ে তারা দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ২১টি নির্বাচন অফিসে ৪২ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োজিত ছিলেন। রোহিঙ্গাদের ভোটার করায় আউট সোসিংয়ে নিয়োজিত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থাগুলো। যে কারণে কোন কোন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তা দ্রæত ইসিতে জানানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর আগে ডবলমুরিং নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন গ্রেপ্তার হলে পুরো চক্রটির গোমর ফাঁস হয়। ডবলমুরিং নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমার দায়ের করা মামলায় জয়নালসহ এ চক্রের সাথে জড়িত বিজয় দাস, সীমা দাশ ওরফে সুরাইয়া, সত্য সুন্দর দে ও সাগরকে আসামি করা হয়। সত্য সুন্দর দে ও সাগর ইসিতে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত শুক্রবার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় জেলা নির্বাচন অফিসের টেকনিক্যাল সাপোর্টার মোস্তফা ফারুককে।
এদিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেহ মো. নোমানের আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে জয়নাল আবেদীন কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম বলেন। এরপর থেকে ইসিতে কর্মরতদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছিল। এরই আলোকে গতকাল কোতোয়ালী নির্বাচন অফিসের দুইজন, বন্দর নির্বাচন অফিসের একজন ও ডবলমুরিং নির্বাচন অফিসের একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নিয়ে যায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী পূর্বদেশকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ভোটার করার কাজে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ভূমিকা ছিল। এরা অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তারা সংরক্ষণ করতো। প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি পেলেই এ চক্রটি ধরতে বড় ধরনের সফলতা পাওয়া যাবে।’