অল্পবৃষ্টিতে বিপজ্জনক সড়ক গাড়িচালক ও পথচারীদের সচেতনতা জরুরি

29

চলতি বছর বর্ষার লক্ষণ অপেক্ষাকৃত আগাম। চৈত্রের প্রথম সপ্তাহে সাগরের নি¤œচাপ জনিত কারণে বৃষ্টি ঝরছে। ধুলিবালির রাজত্বের শুষ্ক মৌসুমে হালকা বৃষ্টিতে পাকাসড়ক কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। তার সাথে সংযুক্ত হচ্ছে মাটি, মাছ ও লবণের ট্রাক এ মৌসুমে সড়কে অতিমাত্রায় চলাচলের কারণে অল্পবৃষ্টিতে চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ আঞ্চলিক সড়কগুলোর অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। শুষ্ক মৌসুমে বিচিত্র উন্নয়ন কাজ অধিক পরিমাণে হয় বলেই তার চাপ সড়কে পড়ে। অল্প বৃষ্টিতে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রামের প্রায় সড়ক খুবই পিচ্ছিল। অল্পবৃষ্টি হওয়ায় চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক, আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়ক, কাপ্তাই-রাঙ্গুনিয়া সড়ক, হাটহাজারী সড়ক, রাউজান সড়ক, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে মাটির গাড়ি চলছে তো চলছেই। যার কারণে পিচঢালাপথ কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা কক্সবাজার ও আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়কে মাটির গাড়ির সাথে যুক্ত হয়েছে লবণ ও মাছের গাড়ি। যে কারণে উত্তর চট্টগ্রামের ছেয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সড়কগুলো অতিমাত্রায় দুর্ঘটনা ঝুঁকি ধারণ করছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনার ঘটনা সংঘটিত হতে দেখা যায়। দক্ষিণ চট্টগ্রামের পিএবি সড়কে উন্নয়ন কাজ চলমান। এখানে দুর্ঘটনা নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার উপর চৈত্রের হাল্কা বৃষ্টি সড়ক সমূহ হয়ে উঠছে মৃত্যুফাঁদ। এমতাবস্থায় সড়ককেন্দ্রিক জনজীবন মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছে। সড়কে যে কোন গাড়ির চালক একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকা বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন বলছে অন্যান্য গাড়ির সাথে বেটারিচালিত অটোরিক্সা আর মটর সাইকেল চালকরা অতিমাত্রায় ঝুঁঁকিতে গাড়ি চালায়। একটু এদিক সেদিক হলেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানা যায় সড়ক দুর্ঘটনায় মটর সাইকেলে গত একমাসে ৮ জনের প্রাণ গেছে। ছোট গাড়ি অল্পবৃষ্টির পিচ্ছিল সড়কে দ্রæত চালাতে গেলেই বিপদ নিশ্চিত। তাই শুষ্ক মৌসুমে অল্পস্বল্প বৃষ্টি হলে সড়ক সমূহে গাড়ি চালক ও পথচারীদের অতিমাত্রায় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
আগাম বৃষ্টিতে চাষবাস, ক্ষেতখামার, ফলদ গাছের খুবই উপকার হয়। বর্তমানে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, লেবু, কমলা, মালটা ইত্যাদি গাছে মুকুল ঝরে ফলের চেহারা দেখা যাচ্ছে। দেশে আগাম বৃষ্টি দেশের কৃষির ব্যাপক উপকার হচ্ছে। কৃষকরা বোরো চাষের জমিতে বৃষ্টি পড়ায় খুবই খুশি। কিন্তু সড়কে গাড়ি চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে। হালকা বৃষ্টিতে বাস-ট্রাকসহ সড়কে চলাচলকারী সকল গাড়ির চালকদের খুবই সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাতে হবে। পারত পক্ষে মটর সাইকেল নিয়ে কারো বের হওয়া উচিত নয়। বাস-ট্রাকের চালকরা এমন ঝুঁকিপূর্ণ সড়কেও দ্রæত গতিতে গাড়ি চালাতে দেখা যায়।
অল্পবৃষ্টির ভেজা পিচ্ছিল সড়কে দ্রæত গতির গাড়ি পথচারীদের পোশাক আশাক নষ্ট করে দেয়, অথচ চালকরা বিষয়টি একেবারেই স্মরণে রাখে না। অসচেতন পদক্ষেপের কারণে অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। তবু গাড়ির চালকরা সতর্কতা অবলম্বনে নিষ্ঠাবান হতে দেখা যায় না। বিশেষ করে ভেজা সড়কে প্রাণভয়ের বিষয়টি পথচারী, চালক নির্বিশেষে সকলকেই স্মরণ করা উচিত। সড়কে দুর্ঘটনা নৈমিত্তিক ঘটার পরও সংশ্লিষ্টরা সতর্কতা অবলম্বন করতে দেখা যায় না। যে কোন ব্যক্তিকে তার কর্মফল ভোগ করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে একের কর্মফল অনেক মানুষের বিড়ম্বনা কিংবা জীবন নাশের কারণ হয়। তাই যে কোন গাড়ির চালকদের সতর্কতা অবলম্বন করে গাড়ি চালানোর মানসিকতা প্রয়োজন। আমরা এমন কোন কাজ কররো না, যাতে নিজের ও জনগোষ্ঠীর ক্ষতি সাধিত হয়। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সব চেয়ে জরুরি চালকদের দায়বদ্ধতা ও সচেতনতা। এক্ষেত্রে শৈথিল্য কোন অবস্থাতে গ্রহণীয় নয়। তাই আমরা মনে করি গাড়ির চালক, পথচারী সচেতন হলে সড়কে মৃত্যু আশঙ্কা অনেক কমে যাবে। আমরা পরিবেশ সচেতন হই। সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে অধিকতর সতর্ক ভাবে গাড়ি চালনা করি এমন সুস্থ ও সচেতন মানসিকতা আমাদের বহু সড়ক দুর্ঘটনা হতে মুক্তি দেবে।