অল্পদিনেই পাঠকের হৃদয়জুড়ে দৈনিক পূর্বদেশ

43

চট্টগ্রামে প্রকাশিত দৈনিকগুলোর অন্যতম বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক পূর্বদেশ। অল্পসময়েই যে পত্রিকাটি পাঠকের মন জয় করে নিয়েছে। দৈনিক পূর্বদেশ ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর বাঁশখালী নিবাসী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মরহুম মাস্টার নজির আহমদ ( যিনি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ) পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠা করেন। পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন মরহুম নজির আহমদের সুযোগ্য সন্তান শিক্ষানুরাগী, শিল্পপতি আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান সিআইপি। পত্রিকার প্রকাশকাল হিসাব করলে নির্দ্বিধায় বলা যায় অন্য অনেক দৈনিকের চেয়ে পূর্বদেশ দ্রæতই প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে। আমি নিজেও এই পত্রিকার একজন পাঠক। চেষ্টা করি লেখালেখি করারও। পূর্বদেশ প্রকাশের আগেও আমি দেশের বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় লেখালেখি করতাম এবং বর্তমানেও আলহামদুলিল্লাহ্ তা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি। পূর্বদেশ পত্রিকার ছাপার মান ও নির্ভুল বানানরীতি প্রশংসার দাবী রাখে। পত্রিকায় চোখ বুলালে তা অনায়াসেই ধরা পড়ে। আকর্ষনীয় প্রচ্ছদ, ঝকঝকে ছবি ও তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশের জন্য দৈনিক পূর্বদেশকে ধন্যবাদ দিতে হয়। ছোট-খাটো ভুলত্রæটি বাদ দিলে পত্রিকাটি ইতোমধ্যে দক্ষতা ও সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। বিশাল কর্মীবাহিনী সুনিপুণ ও দক্ষ কাজের মাধ্যমে পত্রিকাটিকে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। যে কারণে অগণিত পাঠকের হাতে প্রতিদিন পৌঁেেছ যাচ্ছে দৈনিকটি। গণমানুষের কাছে আরো নিবিড়ভাবে সম্পর্ক তৈরিেেত পত্রিকাটির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি। দৈনিক পূর্বদেশ প্রকাশের শুরু থেকেই তাতে আমার লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। এজন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ পূর্বদেশ পরিবারের প্রতি। আলাদা স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে পূর্বদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পত্রিকার ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যের কারণে পাঠক আরো আগ্রহী এটির প্রতি। পূর্বদেশের সবসম্পাদকীয় পাতা, সাহিত্য বিভাগ, ফিচার ও নিউজের ট্রিটমেন্টসহ অধিক পরিমানে নিউজ প্রকাশ করায় মূলত এ পত্রিকাটির প্রতি আকৃষ্ট করেছে পাঠককে ফিচার পাতাগুলো আরো সমৃদ্ধ হওয়া জরুরি। নারী ও পরিবেশ নিয়ে একটি ফিচারপাতা আগে ছিল এখন দেখা যায়না, শিক্ষা পাতাটি একসময় কালার হত, এখন সাদা কালো, বিষয়গুলো পাঠক মহলের কাছে আরো গ্রহণযোগ্য তুলতে পদক্ষেপ নিবেন কর্তৃপক্ষ প্রত্যাশা আমাদের । বিশেষ করে, জাতীয় পত্রিকার ন্যায় লিড নিউজের উপর বা একেবারে জাতীয় ইস্যুর উপর সম্পাদকীয প্রকাশের রীতিটা চট্টগ্রামে প্রথম দৈনিক পূর্বদেশই শুরু করেছে। এছাড়া সম্পাদকীয় মতামত, উপ-সম্পাদকীয় নানা কলাম, পড়ালেখা পাতা, পর্যটন পাতা,পরিবেশসহ বিভিন্ন বিভাগ পত্রিকার মানকে সমৃদ্ধ করেছে। তবে শিশু পাতাটি আরো পরিপাটি হওয়া জরুরি। ছোটরা এত ছড়া কীভাবে পড়বে! শিশুতোষ গল্প, প্রবন্ধ, কৌতুক, চিত্রাঙ্কন আরো বেশী প্রকাশ করা যায়। পত্রিকার প্রথম কয়েখ বছর ‘সকাল বেলার পাখি’ নামে পাতাটি ছিল। সেখানে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখা থাকত, এখন তা নেই। মনে হয় সব বড়দের লেখা ঠাঁই করে নিয়েছে। আমি মনে করি, এ পাতাটি শিশু পাঠক উপযোগী করার প্রতি কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি দিবেন প্রত্যাশা। একসময় প্রকৃতির উপর একটি কলাম পত্রিকার শেষ পাতায় কর্ণারে বক্স আকারে প্রকাশ করা হত, কয়েকমাস ধরে তা দেখা যাচ্ছেনা। চাটগাঁয়া ভাষার উপর একটি ছোট্ট নিউজ ছাপানো হত, তাও বছর ধরে পাঠক পাচ্ছেনা। আমার মনে হয়, এসব নিউজের পাঠকরা অপেক্ষায় আছে পূর্বদেশ আবার কখন এ বিভাগগুলো চালু করবে! বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, নিরপেক্ষ ও তথ্যবহুল সংবাদ পূর্বদেশের অন্য আরেকটি বৈশিষ্ট্য। গ্রাম ও শহরের সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে ছাপানো হয়। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংবাদ প্রকাশিত হয় নিয়মিত। দেশবিদেশের খেলাধুলার সংবাদও নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে থাকে। এসব কারণে পাঠকের কাছে দৈনিক পূর্বদেশ প্রিয়। সব খবর একই মলাটে থাকায় তা বহুগুণে আস্থা অর্জনে সক্ষম হচ্ছে। দৈনিক পূর্বদেশ চট্টগ্রামে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। পাঠকের কাছে পত্রিকাকে আরো গ্রহণযোগ্য করতে নিত্যনতুন কৌশল এবং বিদ্যমান নিরপেক্ষতাকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে হবে। নানা চাপ ও ভয়ভীতিকে জয় করে এগিয়ে যেতে হবে। আর এটি করতে পারলে সর্বসাধারণের কাছে পত্রিকার প্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়তে থাকবে। পাঠকের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ ও অন্যান্য ফিচারকে আরো সমৃদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধিতে তা ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। পরিশেষে, অল্পদিনেই পাঠকের হৃদয় জয় করে এগিয়ে চলা দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত থাকুক -এই কামনা করছি।