অলিখিত বিদ্যুৎ প্রবাহ

44

আরিফুল হাসান

পিয়ালকে খুব অপছন্দ করে জেসমিন। এমন ছেলে যদি কারো দেবর হয় তাহলে আর জীবনটা রসেঘসে ভরে উঠে না। এমন নির্বিকার ছেলে, এমন শান্ত, খুব বেশি বিরক্তিই লাগে তাকে। জেসমিন দেখেছে, যখন আলগোছে মেলে দিতে চেয়েছে আয়নায়, যখন সে নিজের মুখে চোখের পলক ফেলতে পারেনি, তখনও পিয়াল কেমন অভ্যাসবশত দৃষ্টি রেখেছে সরিয়ে। এটি জেসমিনের কাছে অপমানেরই মনে হয়। সে প্লান করতে থাকে, কীভাবে পিয়ালকে একটি বাঁকে ফেলে ফাঁসানো যায়।
কিন্তু পিয়াল কি এতো সস্তা ছেলে? জীবন দিয়ে সে জীবনের দাম শেখে। রোজ দুটো মাইল পায়ে হেঁটে টিউশনিতে যায়, আবার পায়ে হেঁটে ফিরে আসে। ভাইয়ের উপর সে গলগ্রহ নয়, আবার গলগ্রহও।
বাপ মারা যাবার পর সংসারের হাল ধরতে বড় ভাই বিদেশ যায়। মা হারা পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান সুলতানার বিয়েতে লেগে যায় কত্তগুলো টাকা! তার উপর আবার এখনও পড়াচ্ছে ছোটভাই পিয়ালকে।
পিয়াল বি.এ থার্ড ইয়ারে পড়ে। এ বছরটা কেটে গেলেই তার একটা ঝকঝকে সার্টিফিকেট বেরুবে। পিয়াল স্বপ্ন দেখে, একটা ভালো চাকরি নিবে সে। হয়তো মাস্টারি। আচ্ছা মাস্টারিতেও তো আজকাল মাস্টার্সটা চায়। তাহলে কী করবে পিয়াল? যাইহোক অন্তত বসে থাকবে না। বসে থাকার ছেলে সে নয়। গ্রামের কলেজে পড়াশোনার ফাঁকেও সে পৈত্রিক জমিজমাগুলোর দেখাশোনা করে। দুটো টিউশনি করে গ্রাম থেকে দু মাইল দূরে গিয়ে। আবার সংসারের হাটবাজার, ভাতিজার দেখাশোনা করা, সবই সে করে। শুধু করার মধ্যে করে না তার ভাবি যা চায় তা।
পিয়ালের একটা নতুন টিউশনি হয়েছে। তাদেরই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রি। সিদ্দিকা ফারহানাকে সে সন্ধ্যার পরে পড়াবে সময় দেয়।
নিজের কলেজ শেষ করে বিকেলে ছুটে জাগদা গ্রামে। তাদের গ্রামের দু মাইল উত্তরে। তাদের গ্রামের পাশের গ্রামটা যেটি উত্তরে আছে সেটি বিশাল। বনগাঁও নামে পরিচিত সে গ্রামটি প্রায় দুই লোকের আবাস যোগায়। দেড় মাইলের বেশি বর্গাকারে বিস্তৃত গ্রামের উত্তরের শেষপ্রান্তে ফারহানাদের বাড়ি। ফলে জাগদা গ্রাম থেকে ফেরার পথে তাকে পড়িয়ে আসবে ভাবে পিয়াল।
পিয়াল ইংরেজিতে খুব ভালো। লোকে বলে, সুযোগ পেলে সে ইংরেজিতে অনার্স মাস্টার্স করতে পারতো। কিন্তু সে সুযোগ আর কোথায়? বাপের মরনটা হলো অকালে। তার যখন ইন্টারমিডিয়েটের বয়েস আর বড় বোনটা যখন ইন্টারে ফেল করে ঘরে বসে গেছে তখনই বাপটা মরে। মা তো মরেছে আগেই। সেই জন্মের চল্লিশ দিন পরেই।
পিয়ালের বাপ মারা যাবার পর সংসারের সব দায়ভার এসে পড়ে তার বড় ভাই আকমলের উপর। সামান্য ফার্মেসীর দোকানটাকে ছেড়ে দিয়ে বিদেশে চলে যায়। টাকা পয়সা না কামিয়ে সে দেশে ফিরে না। টানা দুইটি বছর পর ফিরে এসে নিজে বিয়ে করে ও বোন সুলতানার বিয়ে দেয়। অনেক টাকা পয়সা খরচ হয় এতে। ছোটভাই পিয়াল বলে, আমাকেও বিদেশ নিয়ে যাও ভাই। বড় ভাই বলে, তুই লেখাপড়া কইরা বড় কিছু করবি।
বড়কিছু কি করতে পারবে পিয়াল? ফারহানাদের বাড়ি থেকে বের হযে সন্ধ্যার পথে টর্চ ছুড়তে ছুড়তে ভাবে পিয়াল। এই বশিরহাঁট কলেজ থেকে পাস করেও কোনো চাকরির নিশ্চয়তা নেই। আবার চাকরি নিতে গেলেও আজকাল ঘোষ লাগে। তবুও রেজাল্টটা বের হোক। একটা আশা জাগে মনে।
আকমল বিয়ে করেছিলো সুলতানার বিয়ের দু মাস আগে। কিন্তু জেসমিন যে এতো গুণী, এতোই গুণী যে বুঝতেই দেয়নি এ বাড়িতে একটি নববধূ আরেকটি বিয়ের আঞ্জাম দিচ্ছে। সবকিছু একেবারে ঠিকঠাক, বরের মিষ্টি মুখ থেকে শুরু করে বরের বাপের মুখরক্ষা পর্যন্ত সবকিছুই সে যথেষ্ট তদারকিতে করে। একটা বিশ্বাস জন্মেছিলো জেসমিনের প্রতি আকমলের। তাই সে সংসারের বিষয় আশয় নিয়ে তেমন ভাবে না। শুধু টাকা কামিয়ে পাঠিয়ে দেয়াই তার কাজ। বাকি কাজ জেসমিনের। হাত হাতে রূপোর গড়া আছেও বটে। পৈত্রিক তিন কানি জমির পর সে আরও দু কানি জমি যুক্ত করেছে মোট সম্পত্তিতে। আকমলের ভরসা হয় জেসমিনের প্রতি। চারবছরের ছেলে জুলহাসও নিশ্চয়ই ভালো আছে তার কাছে।
জুলহাস মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বলে বাবার সাথে। বাবাকে সে জানায়, চাচ্চু তাকে চকলেট কিনে দেয়। পরবাসে গদগদ হয় আকমলের প্রাণ। ভাইয়ের জন্য মায়া লাগে। আহারে, ছোটো ভাইটাকে পর্যাপ্ত হাত খরচও দিতে পারছি না। পর্যাপ্ত কি, সেতো একপয়সাও নেয় না সংসার থেকে হাত খরচের জন্য। তার বয়সের ছেলেরা যখন পালসার সাঁইসাঁই করে কলেজে আসে, সেকানে পিয়াল পায়ে হেঁটে দু মাইল যায় রোজ টিউশনি করতে, আবার পায়ে হেঁটে চলে আসে দু মাইলের পথ।
জেসমিন পিয়ালকে টাকা দিতে চায়। পারে তো সব দিতে চায়। কিন্তু পিয়ালটাই তেমন সুবিধার না। এই বয়েসের ছেলেরা যখন লুকিয়ে উঁকি মেরে ভাবিদের কাপড়পাল্টানো দেখে আর যখন তখন জ্বালাতন করে তখন পিয়াল কিনা একই বাড়িতে থেকেও পরমানুষের মতো অচেনা, বহুদূর। কোনো নারীর প্রতিই তার কোনো আকর্শন নেই। এই জীবনে একটিও প্রেম করতে পারেনি। শুধু নিবিড় সাধনা দিয়ে করে গেছে নিজের পড়াশোনা।
একা বাড়িটাতে দমবন্ধ হয়ে আসে জেসমিনের। ননদ নেই যে দাওয়ায় বসে ওকুন বেঁছে দেবে, শাশুড়ি নেই যে কোনো ব্যাপারে একটু পরামর্শ নেবে। শ্বশুরও নেই, মাথার উপর ছাতাটাও নেই। স্বমী থাকে বিদেশে আসে এক দেরবছর পরপর। শূন্য বাড়িটাতে জেসমিনের মন নানা ডাল থেকে নানা ডালে ছুটতে থাকে। আগে অবশ্য দুটো ছাত্রিকে নিজের বাড়িতেই পড়াতো পিয়াল। অষ্টমে পড়া ফারিয়া ও তার ইন্টারমিডিয়েট পড়া বোন তমাকে। তমা একদিন কথায় কথায় বললো, ভাবি, আপনের দেবরটাকে কিন্তু আমার কাছে সেই লাগে। জেসমিন আঘাত পেয়েছিলো। বিকেলে পড়াশোনা শেষে ঘন্টা-আধঘন্টা তার সাথে গল্প করার শেষ মানুষটাকেও সে আর সহ্য করতে পারে না। পিয়ালকে বলেছিলো, এ মেয়ে দুইটা পড়ুক আমি আর চাই না। পিয়ালও মাথা পেতে নিয়েছিলো এ সিদ্ধান্ত। ফলে, এখন তাকে দুটো আর নতুন হওয়া একটি টিউশনির জন্য বসিরহাঁ থেকে জাগদা, জাগদা থেকে পেরার পথে বনগাঁওয়ের উত্তরের শেষ সীমানায় ফারহানাদের বাড়িতে পায়ে হেঁটে যেতে হয়।
পারেও লোকটা, আক্ষেপ ছাড়ে জেসমিন। ক্যামনে এতো পুরুষত্ব ভুইলা থাকে! তার কি পুরুষত্ব নাই? মাঝে মাঝে সন্দেহ জাগে জেসমিনের। হয়তো নাই, নাহলে একবাড়িতে পাঁচ পাঁচটি বছর থাকার পরেও কেউ কি এতো বেগানা থাকতে পারে। এখনও যেনো পিয়াল তার প্রথম দেখা সেই কৈশোরোত্তীর্ণ পুতুল ছেলেটি। যে বিয়ের দিন লজ্জায় তার ভাবির সামনে পর্যন্ত আসেনি।
পিয়ালকে একবার ফাঁদে ফেলার সব কৌশলই প্রস্তুত করে রেখেছিলো জেসমিন। কিন্তু হবে কি, পিয়াল ঠিকি সে জাল গলিয়ে বেরিয়ে গেলো। তাকে আটকানো গেলো না।
এক ঝড়-জলের রাতে জেসমিন নেহালকে ডাকলো তার মাথায় পানি দিয়ে দিতে হবে। একান্ত নিরুপায় হয়েই যেনো ডেকেছে, ভাবখানা এমন। নেহালও ভাবির অসুস্থতায় তৎপর হয়ে উঠে। কিন্তু ওই তৎপরতা শুধু তৎপরতাই। টানা দু’ঘন্টা পানি ঢেলে পিয়াল শেষে উঠে গিয়েছে, সামান্য কপালটুকু পর্যন্ত স্পর্শ করেনি।
ফারহানাকে পড়াতে পড়াতে পিয়ালের মধ্যে পরিবর্তন আসে। হাজার বছরের ঘুমিয়ে থাকা হৃদয়টা হঠাৎ করেই যেনো জেগে উঠে। জাগিয়ে রাখে ফারহানা নিজেই। নিজের হাতে চা করে আনে সে শিক্ষকের জন্য। পড়ার সময় পড়ার চেয়ে গল্প করতেই তার ভালো লাগে। পিয়ালও মাঝে মাঝে সারা দেয় গল্পে। কখনো কখনো তার ভালো লাগে গল্পে মেতে উঠতে। কিন্তু চিরাচরিত অভ্যাস অনুযায়ী সে ফারহানাকে পড়ার জন্য তাড়া দেয়। পারহানা আগেই সব পড়া রেডি করে রাখে। ফলে দেড়ঘন্টা সময়ের অনেকটাই তারা পায় গল্পে মেতে থাকতে।
ফারহানা পিয়ালের চোখে চোখ রেখে বলে, আচ্ছা স্যার, আপনার কি কাউকে ভালো লাগে? হুম, লাগে তো। কাকে? আর বলে না পিয়াল। হাসি দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ফারহানা তাকে এতো সহজে ছাড়বে কেনো? বলেন না স্যার, কাকে? বললাম তো, পরে বলবো। পরে বলবেন কিন্তু বলেনি। ওই, ওইতো, এখন তো বললাম। আচ্ছা, আপনে পরে বলিয়েন।
পিয়াল হাঁটতে হাঁটতে ভাবে, জীবনটা কোনো কাজে লাগলো না। একটা চাকরি যদি তার হয়ে যেতো তাহলে আজ সে সত্যিই ফারহানাকে বলতে পারতো, হ্যাঁ, তোমাকেই ভালো লাগে। হ্যাঁ, হ্যাঁ, তোমাকেই। তার গলার শক্তি বৃদ্ধি পেতো, আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে সে বলতে পারতো, ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি। কিন্তু সে পারে না। এইচএইচসির সনদ দিয়ে সে আর কী চাকরি পাবে? তবুও একটা কিছু যদি হয়ে যেতো তবে আজ মন্দ হতো না। রাতের টর্চ জ্বলে আঁধারকে ভেদ করে। পিয়ালের শক্তিশালী দুটো পা ফিরে আসে দু মাইলের অতিক্রান্ত পথ।
পিয়ালের ভাবির কেমন যেনো সন্দেহ লাগে ব্যাপারটা। আজকাল পিয়াল টিউশনিতে যাবার সময় বেশ পরিপাটি হয়ে যায়। পিতার জমিজিরাতের দেখাশোনাও তেমন ছেড়ে দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে জমিগুলো ভাগে দেবার পরিকল্পনা করছে পিয়াল। এ বিষয়ে সেদিন জেসমিনকে বলেছেও সে। জেসমিন শুনেও না শোনার ভান করে থেকেছে। করুক সে, যা ভালো লাগে। কিন্তু এ পরিপাটির ব্যাপারটা তার ভালো লাগে না। কোথায় যেনো শূন্য শূন্য লাগে। মনে হয় বুকের ভেতর থেকে একটা অংশ ছিড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। বুক চেপে পড়ে থাকে জেসমিন।
পিয়াল আর ফারহানার ব্যাপারটি আরও দূর গড়াতে থাকে। ক্রমে তারা একে অপরের অবিচ্ছেদ্য হয়ে উঠে। পিয়াল একদিন না দেখলে ফারহানাকে কেমন যেনো অস্থির হয়ে উঠে। ফারহানাও না দেখে থাকতে পারে না পিয়ালকে। ফলে শুক্রবার দিন তাদের জন্য বিষদিন হয়ে ধরা দেয়। শনিবারে পথ চেয়ে থাকে ফারহানা। পিয়ালও জাগদা গ্রাম থেকে দ্রæত ফিরে আসে। কিন্তু তবু যেনো মনে হয় যুগ যুগ ধরে তারা দূরে আছে। বড়ই পিয়াসী তারা দুই কূলে দুটি পাখি চাতক চাতকী।
পিয়ালের ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। ডিগ্রির সনদটা বেরোনোর আগেই তার চাকিরর নিয়োগপত্রটা আসে। ইচ্ছে ছিলো বড় কিছু হবে। কিন্তু যা হলো তাতেই সে সন্তুষ্টির চরম সীমায়। অনেক ছেলেরা অনার্স মাস্টার্স করেও এ পদে আবেদন করে। স্বাস্থ্য সহকারী। সরকারি চাকরি। এই বাজারে এই চাকরিটার জন্যেও মানুষ লাখ লাখ টাকা ঘোষ দিতে প্রস্তুত থাকে। পিয়ালের হয়েছে, বিনা ঘোষেই হয়েছে। দূর বৈদেশ থেকে তার ভাই আনন্দের অশ্রæতে ভাসে। স্বপ্নের জাল বুনে ফারহানা পিয়ালকে নিয়ে।
চাকরি সংক্রান্ত যায়যামেলায় পিয়াল বেশ ক’দিন যেতে পারে না টিউশনিতে। পরে, আটদি পরে যখন টিউশনিতে যায় তখন আর ফারহানার মুখ দেখার মতো থাকে না। আপ্নে তো আর আমারে পড়াতে আসবেন না। কে বললো আসবো না? বা-রে, আপনার না চাকরি হয়েছে। তাতে কী হয়েছে? এখন বরং সারাজীবন পড়ানোর জন্য একেবারে ঘরে তুলে নিতে পারবো। লজ্জায় লাল হয়ে যায় ফারহানার গাল।
পিয়ালের ভাই সব জানতে পেরে দেশে আসতে আগ্রহী। দেশে ফিরেই সে ভাইয়ের বিয়েটা সারতে চায়। জেসমিনকে বলেছে, আলাপসালাপ শুরু করে দাও। আমি এসেই যেনো ফারহানাকে পিয়ালের বৌ করে আনতে পারি। জেসমিন লুকোচুরি খেলায় নিজেকে সুখী ভাবতে ভাবতে, ভাবাতে ভাবাতে ছল করে উত্তর দেয়, শেষ পর্যন্ত তোমার ভাই যেনো রাজি থাকবে কিনা কে জানে? ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে আকমল হাসে, বুঝলা জেসমিন, ভাইটারে বিয়ে করাতে পারলে বাপের দায়িত্ব শেষ হলো। জেসমিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে, তোমার দায়িত্ব আর কোনোদিন শেষ হবে না।
পিয়ালের ভাই ফিরে এলে দুপক্ষের কথা বার্তাতে বিয়ের দিন ধার্য হয়। সামনের শুক্রবার পিয়ালের বিয়ে। বরের গাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজাতে বলেছে আকমল। আহারে ভাই, একমাত্র ছোট ভাইয়ের বিয়ে। কতো আনন্দ আবেগেই না ভাসছে আকমল। বৌকে ডেকে বলে, বাসর ঘরটা, বুঝলে, বাসর ঘরটা তুমি নিজ হাতে সাজাবে। ঠিক তোমার মনের মতোন। ভরসা আছে তার জেসমিনের উপর। বোন সুলতানার বিয়ের সময় সব সে একাই সামাল দিয়েছিলো। তবু যেনো টেনশনের শেষ নেই আকমলের।
শুক্রবার সকাল থেকেই বাড়িটাতে সাজসাজ রব। আকমলের ছোট্ট ছেলেটা ঘুম থেকে উঠেই জামা পড়ে বসে আছে। চাচ্চুর বিয়ে। এ এক অভূতপূর্ব বিস্ময়ানন্দ তার কাছে।
আকমল পিয়ালকে তাড়া দেয়, বরযাত্রী সব এসে পড়বে এক্ষুনি। বোন সুলতানা পিয়ালকে সুন্দর করে সাজায়। সাজগোছ শেষে রওনা দেবার সময় পিয়াল ভাই ভাবি ও বোনকে সালাম করে। জেসমিনের পায়ে হাত দেবার পর তার সারাদেহে এক অলিখিত বিদ্যুৎ প্রবাহ ছুটে যায়। সে বিস্ময়ে মুখ তুলে চায় জেসমিনের দিকে। জেসমিন সে সময় যে ভাষাটা তার চোখে দেখতে পায়, এ ভাষাটার জন্য সে বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছে।